সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়েকদিন আগেও বন্ধুবান্ধব নিয়ে গিয়ে জন্মদিন পালন করেছিলেন আলিবাগের বিলাসবহুল বাংলোয়। সাধের এই বাংলোটিই এখন গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে শাহরুখ খানের। বেনামী সম্পত্তি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে। যার জেরে ৯০ দিনের জন্য বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বাংলোটি। শাহরুখের নির্দেশেই এই পুরো ঘটনা ঘটেছে। আয়কর অফিসারদের কাছে এ কথা নাকি স্বীকার করে ফেলেছেন শাহরুখের ‘দেজা ভ্যু’ ফার্মস প্রাইভেট লিমিটেডের প্রাক্তন অধিকর্তা।
মোরেশ্বর আজগাঁওকর নামে ওই অধিকর্তা একসময় বলিউড বাদশারই সহযোগী ছিলেন। তাঁর এই ফার্ম কোম্পানির কাজ দেখাশোনা করতেন। আয়কর কর্তাদের কাছে তিনি নাকি জানিয়েছেন, শাহরুখই তাঁকে বলেছিলেন আলিবাগের জমির কাগজপত্র একটু হেরফের করে দিতে। সমস্ত বেআইনি কাজ তাঁর নির্দেশেই হয়েছে।
[পিছোল ‘হিচকি’র মুক্তি, রানিকে বড়পর্দায় দেখতে অপেক্ষা বাড়ল দর্শকদের]
আলিবাগে শাহরুখের এই বাংলোর আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। আলিবাগের সমুদ্রতটে ১৯ হাজার ৯৬০ বর্গমিটারের এই বাংলোয় রয়েছে সুইমিং পুল, বিচ আর হেলিপ্যাড। মহারাষ্ট্র প্রজাস্বত্ব এবং কৃষিজমি আইনে রাজ্য সরকার এবং কালেক্টরের অনুমতি ছাড়া কৃষিজমিকে বাসজমিতে পরিণত করা যায় না। আয়কর বিভাগের অফিসাররা বুঝতে পেরেছিলেন, ‘দেজা ভ্যু’ ফার্ম হাউসের নাম করে ফার্মিংয়ের কার্যকারিতার আড়ালে আসলে আলিবাগের কৃষিজমিকে শাহরুখ এভাবেই নিজের বিলাসী প্রমোদকাননে পর্যবসিত করেছেন। ২০০৪ সালে এই জমি কেনার সময় প্রথম ট্রান্সফার সার্টিফিকেটে শেয়ার হোল্ডার হিসাবে শাহরুখ এবং গৌরী খানের নাম ছিল। এর পর প্রথম ডিরেক্টরের জায়গায় অন্য তিন জন ডিরেক্টর আসেন। তাঁরা হলেন রমেশ ছিব্বা, সরিতা ছিব্বা এবং মোরেশ্বর আজগাঁওকর। সেই সময়ই শাহরুখ ‘দেজা ভ্যু’ ফার্মকে ৮ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা বন্ধকহীন ঋণ দেন।
[পদ্মাবতী হয়ে দেদার বিতর্কে, এবার কোন সাহসী চরিত্র বাছলেন দীপিকা?]
২০০৪ সালে ওই কৃষি জমি কেনার সময় আজগাঁওকরকে কৃষক হিসাবে দেখানো হয়েছিল। শর্ত হিসাবে বলা হয়েছিল আগামী তিন বছরের মধ্যে ওই জমিকে চাষের জন্য ব্যবহার করার কাজ শুরু করতে হবে। এর পর ২০১১ সালে আজগাঁওকরের জায়গায় ‘দেজা ভ্যু’-র ডিরেক্টর হন নমিতা ছিব্বা। আয়কর বিভাগের অফিসারেরা অনুসন্ধান করে বুঝতে পারেন, কৃষিকাজের জন্য এই জমি ব্যবহার করে লাভ করার বদলে ‘দেজা ভ্যু’ শাহরুখের টাকায় শুধু জমি কিনেছে। তদন্তকারী অফিসারের জানতে পেরেছেন রমেশ, সবিতা এবং নমিতা ছিব্বারা আসলে হলেন যথাক্রমে শাহরুখের শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালিকা। আর শাহরুখের ‘দেজা ভ্যু’-র একমাত্র আয় হল সেই শাহরুখেরই দেওয়া ঋণের টাকা। ব্যাপারটি প্রথম নজরে আসে যখন আলিবাগের জেলা সংগ্রাহক বিজয় সূর্যবংশী আলিবাগের উপকূলীয় বিধানের সমুদ্রমুখী ৮৭টি বাংলোর বৈধতা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন। ২৪ জানুয়ারি শাহরুখের অফিস ‘রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্ট’ এবং ‘কলকাতা নাইট রাইডার্স’-এর চিফ একজিকিউটিভ অফিসারকে ই-মেল পাঠানোর পরেও তিনি কোনও উত্তর না দেওয়ায় শাহরুখের আলিবাগ বাংলো বাজেয়াপ্ত করার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মহারাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রকের বয়ান অনুযায়ী, পিবিপিটি আইনে প্রাথমিকভাবে বাজেয়াপ্ত হওয়া বেনামি সম্পত্তির অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সাত বছরের হাজতবাস এবং সম্পত্তির চলতি বাজারদরের শতকরা ২৫ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করা যেতে পারে।
[কী কাণ্ড! মাঝরাতে নিজের স্ত্রীর ফ্ল্যাটেই চুরি জনপ্রিয় অভিনেতার]