সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রবিবার ভিস্তারা বিমানসংস্থায় অভিনেত্রী জায়রা ওয়াসিমকে যৌন হেনস্তার ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। তবে অধরা ছিল অভিযুক্ত। দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠায় নড়েচড়ে বসে পুলিশ। দায়ের হয় মামলা। আর তার কিছু সময় পরেই মুম্বই পুলিশ গ্রেপ্তার করল মূল অভিযুক্তকে। নাম বিকাশ সচদেব। ৩৯ বছর বয়সি ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তাঁকে সোমবার আদালতে তোলা হবে।
[জম্মু ও কাশ্মীরে সেনার বড় সাফল্য, খতম ৫ জঙ্গি]
পেশায় ব্যবসায়ী সচদেব জানিয়েছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করেননি। এমনকী ঘটনার পর ক্ষমাও চেয়েছেন জায়রার কাছে। ‘একবারই আমার পা জায়রার কাঁধে লেগেছিল, তাও অনিচ্ছাকৃতভাবে। এবং আমি ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছিলাম।’ সে আরও জানিয়েছে, দিল্লিতে পরিবারের এক আত্মীয়ের অন্ত্যোষ্টিতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে ক্লান্ত হয়ে যাওয়ায় বিমানেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এমনকী খাবারও খায়নি। বিমানসেবিকাদের জানিয়ে দিয়েছিল তাঁকে যেন বিরক্ত না করা হয়। সে বলে, ‘প্রচণ্ড ক্লান্ত হয়ে পড়ায় একটি চাদর চেয়ে নিয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। এমনকী খাবারও খাইনি।’ ভিস্তারা বিমানসংস্থাও তাঁদের রিপোর্টে একই কথা জানিয়েছে। এরপর সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বামীর পাশেই দাঁড়িয়েছেন অভিযুক্তর স্ত্রী। তবে পুলিশ এখনই ওই ব্যক্তির কথায় বিশ্বাস করতে চাইছে না। আপাতত বিষয়টি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। অভিনেত্রীর বয়ান অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে আটক ব্যক্তিকে।
[‘গুরু’কে টপকাতে ব্যর্থ ‘গুগল’, সগর্বে মন্তব্য উপরাষ্ট্রপতির]
ঠিক কী হয়েছিল জায়রার সঙ্গে? রবিবার অভিজাত বিমানসংস্থা ভিস্তারার যাত্রী ছিলেন জায়রা। সেখানেই অশালীন আচরণের মুখে পড়েন তিনি। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিওয় কান্নায় ভেঙে পড়েন অভিনেত্রী। তিনি জানান, কোন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল। যে সিটে জায়রা বসেছিলেন, ঠিক তার পিছনের সিটেই যাত্রী ছিলেন বিকাশ সচদেব। অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রথমে তার পা জায়রার সিটে তুলে দেয়। প্রতিবাদ করেন জায়রা। তাতে হিতে বিপরীত হয়। পা নামাতে অস্বীকার করেন ওই ব্যক্তি। উলটে নানাভাবে হেনস্তা করতে থাকেন তরুণী অভিনেত্রীকে। পুরো ঘটনায় চোখে জল এসে যায় জায়রার। তিনি আরও জানান, ওই ব্যক্তি পা দিয়েই এরপর তাঁকে খোঁচাতে থাকে। শরীরের আপত্তিকর জায়গায় স্পর্শ করে। বিমানের মধ্যে আধো অন্ধকারের সুযোগ নিয়েই কুকর্ম চালাতে থাকে ব্যক্তিটি। আলো এত কম ছিল যে, পুরো ঘটনার ঠিকঠাক ভিডিও করতে পারেননি অভিনেত্রী। তবে তাঁর অপর ভিডিওয় স্পষ্ট যে, ঘটনায় কতটা আহত হয়েছেন এই কাশ্মীরি কন্যা। জায়রার ঘটনা গোটা দেশকেই এক বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল। নারী সুরক্ষা নিয়ে দেশ জুড়ে কম কথা হয় না। সেইসঙ্গে প্রায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নারী নির্যাতনও। এর শেষ কোথায়? জায়রার ভিডিও যেন সে প্রশ্নই তুলে দিয়েছে।