Advertisement
Advertisement

Breaking News

পরিত্যক্ত জমিতে করুন অশ্বগন্ধার চাষ, জেনে নিন পদ্ধতি

মুর্শিদাবাদের ডোমকলে অশ্বগন্ধার চাষ শুরু হয়েছে।

Aswagandha farming in Murshidabad
Published by: Sayani Sen
  • Posted:March 14, 2019 6:11 pm
  • Updated:March 14, 2019 6:11 pm

অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: এখন প্রতিনিয়ত চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমছে। এ অবস্থায় পরিত্যক্ত জমিতে চাষ করে কৃষকদের আয় বাড়ানোর কাজে পরামর্শ দিচ্ছে রাজ্যের উদ্যান পালন দপ্তর৷ তাদের পরামর্শে ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদের ডোমকল মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে ওষুধি গাছ হিসাবে অশ্বগন্ধা চাষ শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে অতিরিক্ত আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন কৃষকেরা। ‘আত্মা’ প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তায় ডোমকলের সারাংপুর, জিৎপুর, রমনা, বসন্তপুর প্রভৃতি এলাকায় পরিত্যক্ত জমিতে অশ্বগন্ধা চাষের ক্ষেত্র প্রদর্শনী ক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে। মূলত এই ওষুধি গাছের চাষ এর শিকড় বা মূলের জন্য করা হয়। যার ওষুধি গুণ অপরিসীম। বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে এই গাছের শিকড় ব্যাবহার করা হয়।
গাছ লাগানোর সময়: এই ওষুধি গাছ মূলত বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে। জমিতে এর বীজ লাগানোর আদর্শ সময় হল নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত।
বীজের হার: এই গাছের চাষ করতে বিঘা প্রতি দেড় কিলোগ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। বীজগুলি খুবই হালকা এবং দেখতে ছোট আকারের। এর অঙ্কুরোদ্গমের হারও খুব বেশি হয় না। তার উপরে নানা কারণে কিছু চারা নষ্ট হয়ে যায়। যার জন্য জমিতে বীজ ছিটানোর সময় একটু বেশি ছিটিয়ে রাখলে আখড়ে লাভই হবে।
চাষ প্রণালী: প্রথমে জমিকে চাষ করে আগাছা মুক্ত করতে হয়। এর পর জৈব সার মিশিয়ে মাটি ভালভাবে জমি তৈরি করে নিতে হয়। এর পর বীজ বোনার আগে জমিতে জল সেচ দেওয়া হয়। পরে মাটিতে জো এলে মূল সার হিসেবে ১০: ২৬: ২৬ বিঘা প্রতি ৭ থেকে ১০ কেজি ছিটিয়ে দিতে হয়। এর সঙ্গে দানাদার কীটনাশক হিসেবে ফিউরাডন দেড় থেকে দু’কেজি প্রতি বিঘায় মাটিতে মিশিয়ে দিতে হয়। যাতে শিকড় ছিদ্রকারী পোকা জমির গাছের ক্ষতি করতে না পারে। বীজ জমিতে ছিটিয়ে বোনা হয়। তবে সারিবদ্ধভাবে বুনলে গাছের পরিচর্যায় সুবিধা হয়।

[কৃষকদের আয় বাড়াতে শিলিগুড়িতে স্ট্রবেরি উৎসবের আয়োজন]

অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা: যেহেতু গাছগুলি খুব হালকা হয়, তাই শুরু থেকেই জমিতে আগাছা নিয়ন্ত্রণ করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে নিড়ানির মাধ্যমে আগাছা নাশ করা যায়। তবে আগাছানাশক ওষুধ ব্যাবহার করেও নষ্ট করা যায়। এছাড়া, মাটিতে প্রয়োজন মতো রস রাখার জন্য মাঝে মধ্যে সেচ দেওয়া দরকার হয়। অবশ্যই এটা নির্ভর করে মাটির ধরনের উপর।
সার প্রয়োগ: অশ্বগন্ধা চাষে খুব বেশি সারের প্রয়োজন হয় না। তবুও বীজ বোনার ৪০/৪৫ দিনের মাথায় প্রথম চাপান হিসেবে ৮ কেজি ১০ : ২৬ : ২৬ (এনপিকে) সার প্রয়োগ করে জল দিতে পারলে ভাল হয়। পরে ৬৫ থেকে ৭৫ দিনের মাথায় আরও একবার সার দিতে পারলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
রোগপোকার নিয়ন্ত্রণ: যদিও এই চাষে খুব একটা রোগপোকার আক্রমণ হয় না। তবুও শীতের মরশুমে ঘন কুয়াশার জন্য গাছের পাতায় নানা ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। এর প্রতিকারে ট্রাইকোডারমা ভিরিডি ৪ গ্রাম প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। অথবা সাফ পাউডার দু’গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করলে পোকা লাগে না। এর পরও যদি পোকার আক্রমণ হয় তো কোরডিটর এক মিলিলিটার প্রতি তিন লিটার জলে গুলে ভাল করে স্প্রে করে দিতে হবে।

Advertisement

[চাষের কাঁচা লঙ্কায় পোকার আক্রমণ? এই উপায়েই পেতে পারেন নিস্তার]

ফসল তোলা: এপ্রিল মাসের দিকে ফসল তোলা হয়। এই সময় গাছের ফলগুলি পেকে যায় এবং মাটির নিচের মূল বা শিকড়গুলিও পুষ্ট হয়। যেহেতু শিকড় সংগ্রহের জন্য গাছগুলি উপড়ে তোলা হয় তাই তোলার আগে একটা জলসেচ দিয়ে মাটি নরম করে নেওয়া জরুরি। গাছ উঠিয়ে নেওয়ার পর ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করা হয়। আর মূলগুলি কাঁচা অবস্থায় অথবা শুকিয়ে নিয়েও তা বাজারজাত করা যায়। প্রতি বিঘায় ২৫ থেকে ৩০ কেজি বীজ পাওয়া যায়। আর শিকড় পাওয়া যায় ১২ থেকে ১৫ কুইন্টাল। যা থেকে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা আয় করা কষ্টসাধ্য নয়।  

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ