Advertisement
Advertisement
Dooars

পাতা-সমেত গাছ ধ্বংস করছে শুঁয়োপোকা, ডুয়ার্সে চা বাগান রক্ষায় এবার ‘লাইট ট্র‍্যাপিং’

পোকার আক্রমণে ইতিমধ্যেই ক্ষুদ্র চা চাষিদের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।

Light trapping now used to protect tea gardens in Dooars

এভাবেই নষ্ট হচ্ছে চা গাছ। নিজস্ব চিত্র

Published by: Suhrid Das
  • Posted:June 10, 2025 12:38 pm
  • Updated:June 11, 2025 3:06 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: চা বাগানের ‘লুপার ক্যাটার পিলার’ নামে সবুজ খেকো শুঁয়োপোকাদের জব্দ করতে এবার ‘লাইট ট্র‍্যাপিং’ অর্থাৎ ‘আলোর ফাঁদ’ ব্যবহারের পরামর্শ চা বিশেষজ্ঞদের। রাতে উজ্জ্বল আলোর নিচে আঠা মাখানো পাত্র নিয়ে চা বাগান প্রদক্ষিণ করবে গাড়ি। তাতেই হবে কেল্লাফতে। ইতিমধ্যে তরাই এলাকার বড় চা বাগানে ওই ফাঁদ ব্যবহার করে সুফল মিলেছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞ মহলের।

Advertisement

রাতারাতি উধাও হচ্ছে একরের পর একর চা বাগানের সবুজ পাতা। ওষুধে কাজ হচ্ছে না। বিশেষত ডুয়ার্স এলাকার চা বাগানে সবুজ খেকো পোকার হামলা রীতিমতো ‘মহামারী’-র চেহারা নিয়েছে। শুধু যে পাতা খেয়ে সাবার করেছে সেটাই নয়। গাছের ডাঁটাও চিবিয়ে শেষ করেছে লুপার ক্যাটার পিলার। চা গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকদের মতে তাপমাত্রার দ্রুত ওঠানামার জন্য এবার দ্রুত বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ পেয়েছে লুপার। মে মাসের শেষ থেকে ঝড়ের গতিতে একের পর এক বাগানে ছড়িয়ে সর্বনাশ ডেকেছে। চা গবেষক তৃণা মণ্ডল বলেন, “চা বাগানে লুপার থাকে। কিন্তু এত বড় মাপের হামলা সচরাচর দেখা যায় না। একদিকে ভারী বর্ষণ, অন্যদিকে গরমের কারণে হয়েছে এই ঘটনা। ফলে চা পাতা উৎপাদন অনেকটাই মার খাবে।” তিনি আরও জানান, চা পাতা উৎপাদকদের বলা হচ্ছে শুধু ওষুধে কাজ হবে না। আলোর ফাঁদ তৈরি করে মথ ঠেকাতে হবে। তবেই লুপারের হামলা নিয়ন্ত্রণে আসবে।

চা বিশেষজ্ঞদের দাবি, লাইট ট্যাপিংয়ের মাধ্যমে লুপার ক্যাটার পিলারকে আকৃষ্ট করে এবং ধরে ফেলা। এই পদ্ধতিতে চা বাগানে পোকার সংখ্যা কমানো সম্ভব। লাইট ট্যাপিং ব্যবহার করার জন্য চা বাগানে বিশেষভাবে তৈরি আলোক ফাঁদের ব্যবস্থা করতে হবে। ওই ফাঁদে উজ্জ্বল আলো ব্যবহার করা হয়। সেটা লুপার ক্যাটার পিলারকে আকৃষ্ট করে। পোকা যখন আলোর দিকে আকৃষ্ট হয়ে ফাঁদে আটকা পড়ে। এরপর সেগুলিকে মেরে ফেলা হয়। ইতিমধ্যে তরাই এলাকার বড় চা বাগানে ওই পদ্ধতিতে লুপারের হামলা ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। চা চাষিরা জানিয়েছেন, এবার ভারী বর্ষণ হলেও তাপমাত্রা কমেনি। শুধু তাই নয়। ভারী বর্ষণের পর একটানা রোদের দাপট চলছে। তাপমাত্রা বেড়েছে। এর ফলে লালপোকা, চা মশা, লুপার ক্যাটার পিলারের উপদ্রব বেড়েছে। সবচেয়ে ক্ষতি করেছে লুপার। রাতারাতি বিঘা পর বিঘা চা বাগানের সবুজ পাতা উধাও হয়েছে। কীটনাশক স্প্রে করেও পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব হয়নি। চা গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকরা অবশ্য জানিয়েছেন, চাষিরা সব সময় নিয়ম মেনে কীটনাশক প্রয়োগ করেন সেটা নয়। চটজলদি কাজের আশায় অনেক সময় নির্ধারিত মাপের বেশি দিয়ে থাকেন। এর ফলে পোকামাকড়ের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। পরে সাধারণ কীটনাশকে কাজ হয় না। সেটাই ডুয়ার্সে হয়ে থাকতে পারে। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “ক্ষুদ্র চা চাষিদের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। একদিকে ভারী বৃষ্টি। অন্যদিকে রোগ পোকার আক্রমণে নাজেহাল দশা। কাচা পাতার উৎপাদন ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement