সুনীপা চক্রবর্তী: সরাসরি চাষের জামিতে ধানের বীজ লাগানোর কার্যকারিতা অত্যন্ত ভাল। এতে কৃষকদের খরচ কম হয় ও তুলনামূলক দ্রুত ফসল তোলা সম্ভব হয়। কম জলে, উঁচু জায়গায় ডিএসআর বা ডাইরেক্ট সিডেড রাইস চাষ সম্ভব। গ্রামীণ ভাষায় এই পদ্ধতিক চাষকে ‘থুতি’ বলা হয়। এতে খরচ অনেকটাই কম লাগে। এই পদ্ধতিতে চাষের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল বীজতলা থেকে চারা তুলে আর নতুন করে রোপন করতে হয় না। ঝাড়গ্রাম জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত অন্নদা ও বুলেট ধানের ক্ষেত্রে চাই চাষ খুবই উপযোগী।
[পাট চাষ ও পাটজাত দ্রব্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন ভারতের]
বেলে বা বেলে মিশ্রিত দোঁয়াশ মাটিতে একটু উঁচু জায়গায় যেখানে জমিতে জল দাঁড়ায় না তেমন জায়গায় বীজ বপন করতে হয়। ধানের বীজ লাগানোর আগে ভাল করে লাঙল দিয়ে নিচের মাটি উপরে করতে হবে। যতটা সম্ভব জমির সমস্ত আগাছা পরিস্কার করে চাষের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। বীজ বপনের আগে জামিতে জৈব সার দিয়ে জমি প্রস্তুত করলে পরে রাসায়নিক সার প্রয়োগ কম করতে হয়। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এই ধানের বীজ লাগানো হয়। ধান চাষে জল কম লাগে। চাষের খরচ অনেকটাই বাঁচে।
[‘গ্রিন পলি হাউস’-র মাধ্যমে জলপাইগুড়িতে বাড়ছে চাষের প্রবণতা ]
জল যাতে গাছের গোড়ায় না দাঁড়ায় তার জন্য সম্ভব হলে কিছুটা উঁচু জায়গায় বীজ বপন করতে হবে। শোধিত বীজ লাগাতে হবে আট থেকে দশ ইঞ্চি দূরে দূরে। কোথায় বীজ বেশি পড়ে গেলে চারা উঠলে তা তুলে অন্য জায়গায় লাগিয়ে দিতে হবে। থুতি বীজ বপনে সুবিধা হল সরাসরি বীজ বপন করতে হয়। বীজতলা থেকে চারা তুলে আবারও রোপন না করার জন্য সময় বা শ্রম লাগে না। এক সঙ্গে কয়েকটি করে ধান নিয়ে সারি ধরে বসাতে হবে। এই ধান স্বল্প জায়গায় ছড়িয়ে দিয়ে পরে বীজতলা তুলে বসানোর প্রয়োজন হয়না। ‘থুতি’ বীজ বপনের ফলে সময় এবং শ্রম অনেকটাই বাঁচে। ঠিকমতো পরিচর্যা করলে নির্দিষ্ট সময়ের বেশ অনেকটা সময় আগেই ফসল তোলা যায়। ফলে বাজারে ভাল দাম মেলে।