তমসী কোলে, সহ-উদ্যানপালন আধিকারিক, রঘুনাথপুর: রুখা-শুখা পুরুলিয়ার মাটিতে অল্প জলে তরমুজ চাষ করলে ভাল মুনাফা পাওয়া যায়। তবে শুধু পুরুলিয়া নয়, পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতেই এই চাষ ভাল হবে। বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান ও বীরভূমের মাটি তরমুজ চাষের পক্ষে আদর্শ। তরমুজ চাষে সেভাবে সেচ প্রয়োজন হয় না। ইতিমধ্যেই এইসব এলাকায় তরমুজ চাষ করে কৃষকরা সুফল পাচ্ছেন। হাইব্রিড জাতের তরমুজ চাষও এই এলাকার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই।
জাত: এই তরমুজ চাষের উন্নত জাত হল সুগার বেবি, অর্ক মানিক, আধারী। হাইব্রিড জাতের মধ্যে অমৃত, আমরুত, সুচিত্রা, সুগার বেলে, মধু, মিলন ও মোহিনী উল্লেখযোগ্য।
বোনার সময়: তরমুজের উন্নত জাতগুলি পৌষ-মাঘ মাসে বোনার সময়। অর্থাৎ এই জাতগুলির তরমুজের বীজ শীতে রোপন করলে গ্রীষ্মের মুখে বা চৈত্রের মাঝামাঝি বা শেষ থেকে ফলন হতে থাকবে। হাইব্রিড জাতের ক্ষেত্রে কার্তিক থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত বীজ রোপন করা যাবে। উন্নত জাতের ক্ষেত্রে তরমুজের বীজ পাঁচ ফুট বাই চার ফুট দূরে দূরে বপন করতে হবে। হাইব্রিডের ক্ষেত্রে ছ’ফুট বাই তিন ফুট দূরে বসাতে হবে।
সার প্রয়োগ: এই চাষে জমি তৈরির সময় একর প্রতি চার টন জৈব সার ও ছ’কেজি অ্যাজোটোব্যাক্টর প্রয়োগ করা প্রয়োজন। উন্নত জাতের ক্ষেত্রে রাসায়নিক সার হিসাবে একর প্রতি মূল সারে প্রায় ১৮ কেজি নাইট্রোজেন, ২৪ কেজি ফসফেট ও ১২ কেজি পটাসিয়াম দিতে হবে। হাইব্রিড জাতের ক্ষেত্রে রাসায়নিক সার হিসাবে একর প্রতি মূলসারে ৩০ কেজি নাইট্রোজেন, ৪০ কেজি ফসফেট, ২০ কেজি পটাসিয়াম দেওয়া প্রয়োজন। বীজ রোপনের সাড়ে তিন মাস পর থেকেই উন্নত ও হাইব্রিড জাতে ফলন হতে শুরু করে। উন্নত জাতে একর প্রতি প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ কুইন্ট্যাল ও হাইব্রিডের ক্ষেত্রে একর প্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ কুইন্ট্যাল তরমুজ হবে।