সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্তমানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে স্মার্টফোনের প্রতি আসক্ত। জীবনযাপনের অন্যতম মূল উপাদান হয়ে উঠেছে মুঠোফোন। এই পরিস্থিতিতে একটি তথ্য জানলে অনেকেই হয়তো চমকে উঠবেন! প্রায় অর্ধেক ভারতীয়ই নিজেদের আপনজনের চেয়েও বেশি যত্নে রাখেন তাঁর স্মার্টফোনকে। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা প্রকাশ্যে এনেছে চমকে দেওয়ার মতো এই তথ্য।
রিপোর্ট বলছে, প্রায় ৩৩% ভারতীয়, বিশেষত নব্য প্রজন্ম ডিজিটাল দুনিয়ার সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে সংযোগ রাখতে পছন্দ করেন। ভারতের ৪৭% মানুষই প্রেমিক-প্রেমিকা বা মা-বাবার চেয়েও বেশি ভালবাসেন স্মার্টফোনকে। মা-বাবার সঙ্গে কথা না বলে একটি গোটা দিন কাটিয়ে ফেলতে পারলেও স্মার্টফোন ছাড়া ২৪ ঘণ্টা কাটানো অনেকের পক্ষেই যেন অসম্ভব! এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী অর্ধেক মানুষই জানিয়েছেন, কিছুক্ষণ অন্তর অন্তর অজান্তেই তাঁদের হাত চলে যায় ফোনে। ভারতের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরও বেশি, প্রায় ৬৫%। ৩৫% মানুষ তো স্বীকারও করে নিয়েছেন যে তাঁরা স্মার্টফোনে আসক্ত। কিন্তু এর ‘নেশা’ ছাড়াতে পারছেন না। ১৯৯০-২০০০-এর মধ্যে যাঁরা জন্মেছেন, সেই জেনারেশন-জেড সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এই প্রবণতায়। ভারতে যার সংখ্যা প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৫৫ জন।
বিখ্যাত টেলি-কমিউনিকেশন সংস্থা মোটোরোলা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মাইন্ড ব্রেন বিহেভিয়ার ও সায়েন্স অফ হ্যাপিনেস’-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই সমীক্ষাটি চালিয়েছে। সমীক্ষার ফল বলছে, মানুষ তাঁর নিজের জীবনের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে ক্রমশই। সার্বিকভাবে ৫৩% মানুষ স্মার্টফোনকে নিজের প্রিয় সঙ্গী ভাবেন। ভারতে সংখ্যাটা আরও বেশি, প্রায় ৬৫%। এ দেশের ৬৪% মানুষ আবার ফোন ও বাস্তব জীবনের মধ্যে সামঞ্জস্যের অভাবে ভুগছেন। এমনকী, সংস্থার সমীক্ষা বলছে, মানুষ ধীরে ধীরে তাঁর স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলছে ও মোবাইল এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি মাত্রাতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাঁদের বাস্তব জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক ক্রমশ কমছে ও নেটজগতকেই তাঁরা আপন করে নিচ্ছেন।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, একটি স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক সংস্থাই কেন এরকম সমীক্ষা চালাল? উত্তরে সংস্থাটি জানাচ্ছে, স্মার্টফোন দৈনন্দিন জীবনে যে অপরিহার্য সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু যে কোনও সংস্থারই আগামী প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই যায়। আগামী প্রজন্ম স্মার্টফোন সিন্ড্রোমে ‘আক্রান্ত’ বা ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়লে আখেরে সবারই লোকসান। তাই সময় থাকতেই সকলে সতর্ক করে দিতে সংস্থার এই উদ্যোগ। উদ্যোগ ও তার ফলাফল তো প্রকাশ্যে চলে এল। কিন্তু এবার আপনি কবে সাবধান হবেন? বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বারবার বলছেন, ফোন ছেড়ে খানিকটা সময় বার করে শুধুমাত্র আপনজনদের সঙ্গে কাটান। কমান সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আসক্তিও। ফোন ও জীবনের মধ্যে একটা ভারসাম্য রাখার এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি। আপনারও কি ফোন ও বাস্তব জীবনের মধ্যে ব্যালেন্স রয়েছে ঠিকঠাক? নিজেই দেখে নিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.