সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অনেকে সমুদ্রে ভয় পান!
স্বাভাবিক!
বিশাল ব্যাপ্তি আর স্রোতের শক্তি নিয়ে সমুদ্র অপরাহত এক প্রাকৃতিক বিস্ময়।
কিন্তু, চেন্নাইয়ের কারিকাট্টু কুপ্পমের সমুদ্রতটে ভয়টা অন্য জায়গায়। ভূতের!
তার জন্যও দায়ী অবশ্য সমুদ্রই!
খেয়াল করে দেখুন, কারিকাট্টু কুপ্পমের চেহারা আপনার জানা। একটু মনে করুন ২০০৪ সালের কথা।
সেবার সমুদ্র থেকে উঠে এসেছিল ভয়ানক স্রোত। এক লহমায় তা ধুয়ে-মুছে নিয়ে গিয়েছিল মানুষের জীবন আর আনন্দ- দুটোই! পোশাকি নাম তার সুনামি।
সুনামিতে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এই কারিকাট্টু কুপ্পম-ই! ২৮০টা বাড়ির প্রায় কিছুই আর অবশিষ্ট ছিল না।
এবার মনে পড়েছে? টিভিতে, খবরের কাগজের পাতায় সে সময় খুব বেশি করে ছিল কারিকাট্টু কুপ্পমের কথা। জল নেমে যাওয়ার পরে এলাকার সেই চেহারার দিকে তাকানো যাচ্ছিল না। যে চোখ যায়, নজরে আসছিল এক সময়ে আনন্দে উচ্ছ্বল জীবনের ভাঙা-চোরা! সেই ছবি যেমন কষ্ট দিচ্ছিল, তেমনই ভয়ও জাগিয়েছিল মনে।
ভয়টা কিন্তু চিরতরে থেকে গেল কারিকাট্টু কুপ্পমে। কোথাও গেল না।
জানা গিয়েছিল, সেই সময়ে কারিকাট্টু কুপ্পমের বেশ কয়েকজন মানুষ সুনামির তোড়ে ভেসে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে যেমন ছিলেন বয়স্ক মানুষ, তেমনই ছিল শিশুরাও।
যাঁরা সুনামির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন, তাঁরা কারিকাট্টু কুপ্পম ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যান। যাননি সেই হতভাগ্যরা, যাঁরা তলিয়ে গিয়েছিলেন সমুদ্রে।
তাঁরা আজও থেকে গিয়েছেন ওখানেই।
সুনামির ভয়ে ফের কারিকাট্টু কুপ্পমে বসতি গড়ে ওঠেনি। সমুদ্রতটটাও ধীরে ধীরে ভয়ের জায়গা হয়ে উঠল প্রেতাত্মার উপদ্রবে।
শোনা যায়, কারিকাট্টু কুপ্পমের সমুদ্রতটে মাঝে মাঝেই দেখা যায় এক বুড়ো মাঝিকে। একটা বাচ্চা ছেলের হাত ধরে সে হেঁটে যায়। তার দৃষ্টি অস্বাভাবিক রকমের জ্বলজ্বলে। সে কোনও কথা বলে না। খালি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে লোকজনের চোখের দিকে। কিছু একটা খোঁজার বা বলার যেন চেষ্টা করে।
তার পর এক সময়ে হঠাৎই হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
কারিকাট্টু কুপ্পমের এই প্রেতাত্মা আজ পর্যন্ত কারও কোনও ক্ষতি করেছে বলে শোনা যায়নি। কিন্তু, তার উপস্থিতিই এতটা অস্বাভাবিক যে গায়ে কাঁটা দেয়!
আজও সে খুঁজে ফিরছে ফেলে আসা জীবনের সূত্র। খুঁজছে কাছের মানুষদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.