সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একুশের আগে বাঙালি আবেগ উসকে দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা। দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দিরের পর এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ভারচুয়াল বৈঠকের ব্যাকড্রপে দেখা গেল কোচবিহার রাজবাড়ির ছবি। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠকেই নজিরবিহীনভাবে তাঁর ব্যাকড্রপে ভেসে ওঠে কোচবিহার রাজবাড়ির ছবি। এই ঘটনাকে বাংলার জন্য ‘গর্বের বিষয়’ বলে দাবি করছেন কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক।
#coochbeharpalace at the backdrop of PM really proud moment for Bengal and India. https://t.co/mqusHkQAeT
— Nisith Pramanik (@NisithPramanik) December 17, 2020
এর আগে গত শুক্রবার ইন্দো-উজবেকিস্তান ভার্চুয়াল সামিটে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাকড্রপ হিসেবে দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণীর মন্দিরের ছবি ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের ঘটনা ছিল সেই প্রথম। অতীতে কোনও প্রধানমন্ত্রীর অন্য দেশের নেতার সঙ্গে আলোচনায় ব্যাকড্রপে কোনও মন্দিরের ছবি দেখা যায়নি। সেই ছবি রাজ্য বিজেপির তরফে সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানানো হয়। আবার প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব টুইটার অ্যাকাউন্টেও তা দেখা গিয়েছে। এবার একইভাবে মোদির বৈঠকের সময় ব্যাকড্রপে দেখা গেল কোচবিহার রাজবাড়ি। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, আসলে বিষয়গুলি কোনও আকস্মিক ঘটনা নয়, পুরোটাই বাংলা বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে হিসেব করে পা ফেলা। তৃণমূল (TMC) তাদের ‘দিল্লির দল’ বলে যতই প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করুক বিজেপি (BJP) যে বাঙালির কথা ভাবে, এই বিষয়টি তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রী একের পর এক পদক্ষেপ করছেন। রেডিওতে নিজের ‘মন কি বাত’ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিককালের নিজের প্রায় সমস্ত ভাষণেই বাংলার মনীষীদের উল্লেখ করছেন মোদি। যা আবার ফলাও করে প্রচার করছে বঙ্গ বিজেপি। এদিন যেমন মোদির ভারচুয়াল বৈঠক শুরুর পরেই টুইট করে নিশীথ প্রামাণিক বলে দিলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ভারচুয়াল বৈঠকের ব্যাকড্রপে কোচবিহার রাজবাড়ি। বাংলার জন্য এটা গর্বের বিষয়।”
[আরও পড়ুন: প্রথমবার আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন মোদি, ‘অজানা’ আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ]
আসলে বাঙালি আবেগ উসকে দেওয়ার পাশাপাশি আরও একটি বার্তা এদিনের বৈঠকের ব্যাকড্রপের মাধ্যমে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মোদি। প্রধানমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন, উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি সম্পর্কেও তিনি পুরোপুরি অবহিত। তাঁর কাছে উত্তরবঙ্গও কলকাতার সমানই গুরুত্বপূর্ণ। উত্তরবঙ্গের মানুষের বহুদিনের অভিযোগ, রাজ্যে যেই ক্ষমতায় থাক, উন্নয়ন হয় কলকাতা বা তার আশেপাশের জেলাগুলিতে। উত্তরের জেলাগুলি বঞ্চিতই থাকে। সম্প্রতি এই কলকাতা কেন্দ্রিক উন্নয়নের কারণ দেখিয়েই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলের বিধায়ক মিহির গোস্বামী। আর তারপরই সুকৌশলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে একাত্মতা দেখালেন মোদি।
[আরও পড়ুন: সব ধর্মে বিবাহ-বিচ্ছেদে অভিন্ন বিধির দাবি, কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট]
আসলে ‘বহিরাগত’ ইস্যুকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেই বিজেপিকে কোণঠাসা করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের শাসকদলের সেই বহিরাগত অস্ত্র ভোঁতা করতে এই ‘বাঙালি আবেগ’ উসকে দেওয়ার নীতিতে ভরসা রাখছে গেরুয়া শিবির। আর সেটা করতে আসরে নেমেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।