সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোয়েন্দারা সতর্ক করেছিলেন। আশঙ্কা ছিল ষোলআনা। নেওয়া হয়েছিল যথোপযুক্ত সতর্কতাও। তারপরও রক্তাক্ত অমরনাথ যাত্রা। ভয়াবহ জঙ্গিহানার পর কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে একাধিক গাফিলতির চিত্র। তবে বাসের টায়ার পাংচার হওয়ার পরই যে পূণ্যার্থীরা বিপদে পড়েন, এমনটাই জানাচ্ছেন এক ট্যুর অপারেটর।
প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে অমরনাথ যাত্রার জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও সতর্কতা নেওয়া হয় পুরোদমে। প্রায় এক দশক অমরনাথ যাত্রা সুরক্ষিতই ছিল। ২০০০ সালে পূণ্যার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ৩০ জন। তারপর এমন ভয়াবহ ঘটনা আর ঘটেনি। ২০১৭ ফের সাক্ষী থাকল জঙ্গি হামলার। প্রশ্ন উঠছে, কেন এরকমটা হল। এত সতর্কতা, আইবি রিপোর্ট থাকা সত্ত্বেও কেন প্রাণ দিতে হল পূণ্যার্থীদের।
সিআরপিএফ এক বিবৃতিতে জানাচ্ছে, যে বাসটি আক্রমণের শিকার হয়েছে, সেটি আসলে অমরনাথ যাত্রার অংশই ছিল না। অমরনাথ বোর্ডে নথিভুক্ত করা বাসগুলির মধ্যেও ছিল না সেটি। পুলিশ জানাচ্ছে, বাসটি নিয়ম লঙ্ঘন করেছিল। সাতটার পর পূণ্যার্থীদের নিয়ে হাইওয়েতে কোনও বাস থাকার কথা নয়। কেননা বাসগুলির নিরাপত্তার দেখভাল যাঁরা করেন, তাঁরা সন্ধে সাড়ে সাতটার পর আর থাকেন না। কিন্তু আক্রান্ত বাসটি আরও অনেক পরে হাইওয়েতে ছিল। যে বাসগুলি নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে ছিল, সেগুলিকে ছুঁতে পারেনি জঙ্গিরা। কিন্তু নিয়ম লঙ্ঘনের ফলেই এই বাসে আক্রমণ করার সুযোগ পেয়ে যায় জঙ্গিরা।
জানা যাচ্ছে, নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া তীর্থযাত্রীরা কখনওই একা একা যাত্রা করেন না। কিন্তু এই বাসের যাত্রীরা ছিলেন আলাদা। তাঁরা একা একাই বেরিয়েছিলেন। ফলে নিরাপত্তার গাফিলতির যেদিকটি উঠছে, সেটি অনেকটাই চাপা পড়ে যাচ্ছে। কেননা নিরাপত্তা প্রদানকারীরা তাঁদের দায়িত্ব যথাযথভাবেই পালন করেছিলেন। রাত আটটা কুড়ি নাগাদ দর্শন করে ফেরার পথে বাসটির উপর আক্রমণ হয়। কেন এতটা দেরি হল। এক ট্যুর অপারেটর জানাচ্ছেন, রাস্তায় টায়ার পাংচার হয় বাসটির। তার জেরেই প্রায় ঘণ্টা দুই বা আড়াই দেরি হয়। ফলত নিরাপত্তার স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে চলে যায় বাসটি। তার ফলেই এই আক্রমণ। জানা যাচ্ছে, একেবারে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গুলি চালায় জঙ্গিরা। মৃত সাতজনের মধ্যে ছ’জনই মহিলা।
প্রশাসনিক স্তরে এই কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। পূণ্যার্থীদের উপর হামলা যে কোনও ধর্মের অংশ বা জেহাদ হতে পারে না, তাই জানিয়েই নিন্দা করছেন আপামর দেশবাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.