সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অজানা, অচেনাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করাই ছিল তাঁর নেশা৷ ইচ্ছা ছিল জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন সেন্টিনালি দ্বীপের আদিবাসী জনজাতিদের জীবনযাত্রা সম্বন্ধে জ্ঞান আহরণ করা৷ উদ্দেশ্য ছিল, আদিম জনজাতির ‘ভয়ংকর’ মানুষদের খ্রিস্টধর্মে অনুপ্রাণিত করা৷ সেই আগ্রহ থেকেই ছুটে গিয়েছিলেন সেন্টিনালি দ্বীপে৷ তাতেই ঘটল বিপত্তি৷ প্রাণ হারাতে হল জন অ্যালেন চাউকে৷ ঠিক কীভাবে প্রাণ হারালেন চাউ, তা নিয়েই এখনও জারি ধোঁয়াশা৷ চাউয়ের পরিজন এবং যে মৎস্যজীবীরা ওই মার্কিনি যুবককে দ্বীপে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের বয়ানেই দেখা দিয়েছে দ্বন্দ্ব৷ দু’পক্ষের মতবিরোধ এখন ভাবাচ্ছে আন্দামানের প্রশাসনিক আধিকারিকদের৷
[আন্দামানে আদিম জনজাতির হামলায় প্রাণ গেল মার্কিন পর্যটকের]
ঈশ্বরের আশীর্বাদ, বার্তা, ভালবাসা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে বহুবার বহু অজানা, অচেনা জায়গায় গিয়েছেন ২৬ বছর বয়সী চাউ। একই উদ্দেশ্যে ১৬ নভেম্বর চাউ আন্দামানের সেন্টিনালি দ্বীপে গিয়েছিলেন৷ পুলিশ, উপকূলরক্ষী ও নৌ-বাহিনীর নজর এড়িয়ে ওই দ্বীপে পা ফেলার জন্য মৎস্যজীবীদের ২৫ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন চাউ। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, আদিবাসী জনজাতির মানুষদের খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করা। সেন্টিনালি দ্বীপে যাওয়ার আগে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেন চাউ৷ তিনি লেখেন,‘‘আমার নাম জন। আমি তোমাদের ভালবাসি। ভগবান যিশুও তোমাদের ভালবাসেন। এসো, তোমাদের সঙ্গে আলাপ করি।’’ পরিবারের উদ্দেশ্যে চাউ লেখেন, ‘‘তোমরা ভাবতে পারো, আমি পাগল হয়ে গিয়েছি৷ তাই এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাচ্ছি আদিবাসী জনজাতির মানুষদের সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু আমি মনে করি, ভগবান যিশুর বার্তা ওঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়াটা খুব জরুরি।’’ সমুদ্র থেকে মাছ ধরে এবং উপহার নিয়ে আদিবাসীদের কাছে গিয়েছিলেন মার্কিনি যুবক৷ গান গেয়ে সেন্টিনালি দ্বীপের আদিবাসীদের মন ভোলাতেও চেষ্টা করেছিলেন চাউ।
[অমৃতসর হামলার ছক কষা হয়েছিল লাহোরে!]
তাঁকে শেষবারের মতো মৎস্যজীবীরা দেখেছিলেন গত শুক্রবার। মৎস্যজীবীদের দাবি, আদিবাসীদের দিকে হাত নাড়িয়ে যখন তাঁদের কাছে ডাকছিলেন চাউ, সেই সময়ই ওই জনজাতি সংগঠনের এক যুবক বিষাক্ত তির ছোঁড়ে৷ জনের হাতে ধরা বাইবেলও ফুঁড়ে বেরিয়ে যায় আদিবাসীদের ছোঁড়া একের পর এক তির। মৎস্যজীবীদের দাবি, এরপর তাঁর দেহ সমুদ্রের চড়ে বালিতে পুঁতে দেওয়া হয়৷ এখনও চাউয়ের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি৷ তাঁর দেহের খোঁজে চলছে তল্লাশি৷