Advertisement
Advertisement

Breaking News

অমৃতসরে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন ‘রাবণ’

শোকে ভাসছে মৃত্যুপুরী পাঞ্জাব৷

Amritsar train mishap kills artist performing Ravana’s role
Published by: Sayani Sen
  • Posted:October 20, 2018 2:52 pm
  • Updated:October 21, 2018 8:13 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাবণ সেজে রামের কাছে আত্মসমর্পণ করতেন তিনি৷ দশভুজার কাছে হারলেও, জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়াই ছিল তাঁর লক্ষ্য৷ যতবার হারতেন মঞ্চে, ততবার চওড়া হত মুখের হাসি৷ অভাবের সংসারে অন্ন সংস্থানের বন্দোবস্ত করতে পারায় শান্তি আসত তাঁর মনে৷ কিন্তু জীবন বোধহয় কখনওই চেনা ছন্দে চলে না৷ ‘রাবণ’-এর জীবনেও সেই হিসাবের কোনও ব্যতিক্রম হয়নি৷ রাম নন, অমৃতসরে  ট্রেনই মৃত্যুর কারণ ‘রাবণ’-এর৷

[অমৃতসরের দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ৬০, শোকপ্রকাশ কানাডার প্রধানমন্ত্রীর]

দুর্গা মানে শক্তির আধার৷ অশুভ শক্তির বিনাশ করে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা ঘটিয়েছিলেন দশভুজা৷ রাবণকে বিনাশ করে জয়ী হয়েছিলেন রাম৷ তারপরই হয় অকালবোধন৷ পুরাণের সেই কাহিনি অনুযায়ী আজও দশেরা উপলক্ষে রাবণ বধের পালা হয় চতুর্দিকেই৷ অমৃতসরেও দশেরার ছবিটা ছিল একইরকম৷ বেশ কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন মেলায় পালা করে বেড়াচ্ছিলেন দলবীর সিং৷ রাবণ সাজতেন তিনি৷ শুক্রবার রাতে পালা তখন প্রায় জমজমাট৷ কখনও দুর্গা হারিয়ে দিচ্ছেন রাবণকে, আবার কখনও রাবণকে পরাস্ত করতে গিয়ে কালঘাম ছুটছে রামের৷ পালাগানের চরম নাটকীয় মুহূর্তে নিজেদের আবেগ ধরে রাখতে পারছিলেন না দর্শকরা৷ রাবণের অট্টহাসির মাঝেই ঘটে গেল বিপদ৷ আচমকাই ট্রেনের চাকার নিচে পিষে গেল একে একে ৬০ জনের দেহ৷ সেই তালিকাতেই রয়েছে ‘রাবণ’ দলবীর সিংয়ের নাম৷ রাম নন, এবার ট্রেনই প্রাণ কাড়ল ‘রাবণ’-এর৷

[অমৃতসরে দশেরায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা, মৃত্যু ছাড়াল ৫০]

বৃদ্ধা মা, স্ত্রীকে নিয়ে সংসার দলবীরের৷ আট মাসের সন্তানের বাবা ‘রাবণ’৷ পরিবারের একমাত্র রুটিরোজগারীও ছিলেন তিনিই৷ দলবীরের মৃত্যুতে শোকে ভাসছে গোটা পরিবার৷ কীভাবে চলবে সংসার, এই চিন্তায় এখন রাতের ঘুম ছুটেছে মৃতের স্ত্রীর৷ যদিও সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করা হয়েছে৷ মৃতদের পরিবারপিছু দু’লক্ষ টাকা ও আহতদের চিকিৎসার জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করা হবে বলেই জানানো হয়েছে৷ নিহত দলবীরের মা বলেন, ‘‘ সরকার যদি আমার পুত্রবধূর জন্য চাকরির ব্যবস্থা করে, তবে সংসারটা বাঁচবে৷’’ যদিও এ বিষয়ে এখনও সরকারের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷

[দশেরায় রাবণের পরিবর্তে পুড়ল সুর্পনখা, কিন্তু কেন?]

দুর্ঘটনার পর থেকে পাঞ্জাব সরকার ও রেলের সঙ্গে চলছে তরজা৷ এই দুর্ঘটনার জন্য আদৌ কে দায়ী, তা নিয়েও চলছে বিস্তর আলোচনা৷ কিন্তু সব আলোচনাকেই ছাপিয়ে গিয়েছে মৃত্যু৷ পরিজনদের অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই৷ উৎসবের মরশুমে একের পর এক প্রাণহানির জেরে মৃত্যুপুরীর চেহারা নিয়ে গোটা পাঞ্জাব৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ