সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই প্রথম মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেল লৌহ পূ্র্ববর্তী যুগের রথ। লৌহ পূর্ববর্তী যুগ এই কারণে কেননা রথটি ব্রোঞ্জের। খনন কার্যে এহেন সাফল্য মহাভারতের সময়কাল নিয়ে তদন্তের অবকাশকে আরও বাড়িয়ে দিল। এমনটাই মনে করছেন পুরাতাত্বিকরা। একই সঙ্গে হরপ্পার সমসাময়িক এদেশে ঘোড়ার ব্যবহার ঠিক কখন শুরু হয়েছিল তা নিয়ে গবেষণার পথ আরও প্রশস্ত হল। উত্তরপ্রদেশের বাঘপতের সানাউলি এলাকায় চলছিল খননকার্য। সোমবার সেখানেই পাওয়া গেল ব্রোঞ্জের রথ। তিনমাসের এই খননকার্যে নিযুক্ত ছিলেন বিশেষজ্ঞরাও।
উল্লেখ্য, এর আগেও ইতিহাসের অজানা তথ্যের সন্ধানেই স্থানীয় রাখিগারহি, কালিবঙ্গান ও লোথালেও খনন কার্য চালানো হয়েছে। তবে এই প্রথম মাটি খুঁড়ে মিলল ব্রোঞ্জের রথ। গত মার্চ মাসেই এই খনন কার্য শুরু হয় সানাউলিতে। পুরাতাত্ত্বিক এস কে মনজুলের নেতৃত্বে ১০ জনের একটি দল নতুন ইতিহাসের সন্ধানে খননকার্যে হাত লাগায়। গোটা পরিকল্পনার ব্যবস্থাপনায় ছিলেন অরভিন মনজুল। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে আমাদের যে একটা আলাদা স্থান ছিল, তার প্রমাণ এই সব সামগ্রী। সেই সময়কার সংস্কৃতির পরিপ্রেক্ষিতে মেসোপটেমিয়া, জর্জিয়া, গ্রিক সভ্যতায় রথের ব্যবহার ছিল, আমরা জানি। সানাউলির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বলতেই পারি যে, লৌহ পূর্ববর্তী যুগেও রথের ব্যবহার ছিল। এই গবেষণা আমাদের ইতিহাসের নতুন আঙ্গিক খুলে দেবে। নতুনভাবে ইতিহাসের আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি হবে। লৌহ পূর্ববর্তী যুগেও ভারতীয়রা যে যুদ্ধে পারদর্শী ছিল, এই ব্রোঞ্জের রথ সেই ইঙ্গিতই দেয়।’
তবে উদ্ধার হওয়া ব্রোঞ্জের রথ ষাঁড় না ঘোড়া টানত তা বিতর্কের বিষয়। তবে যেই রথ টানুক না কেন প্রাথমিকভাবে ঘোড়ার কথাই মনে আসবে।বলাবাহুল্য, মেসোপটেমিয়া সভ্যতার রথের মতোই দেখতে এটি। চাকাগুলি নিরেট হওয়ায় কোনও স্পোকের জায়গাই নেই। খননে রথের সঙ্গে তার সারথির মাথায় থাকা শিরস্ত্রাণের হদিশ মিলেছে। এমনিতেই ঘোড়ায় টানা রথের ইতিহাস রয়েছে বৈদিকযুগে।অনুসন্ধানে পাওয়া ব্রোঞ্জের রথ আদৌ বৈদিক যুগের আগে কি না তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে যাই হোক না কেন ২০০৫-এ মাটি খুঁড়ে সিন্ধু সভ্যতার হদিশ মেলার পর এই ব্রোঞ্জের রথ পুরাতাত্ত্বিক গবেষণায় নতুন দিশা দেখাবে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.