সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হলে ভারতীয় সেনার ভাঁড়ারে গোলাবারুদের টান পড়তে পারে। তাই অবিলম্বে গোলাবারুদ-সহ অন্যান্য জরুরি সামরিক সরঞ্জাম কিনতে উদ্যোগী হল সেনাবাহিনী। বিদেশ থেকে আমদানি করার পরিবর্তে ভারতেই যত দ্রুত সম্ভব ওই সব গুরুত্বপূর্ণ সমরাস্ত্র প্রস্তুত করে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভূক্ত করতে চান বাহিনীর কর্তারা। খবরটি জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
আর এই লক্ষেই দেশের ৪১টি অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরির শীর্ষ নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠী অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড আগামী তিন বছরে আমদানিকৃত বিদেশি সরঞ্জামের পরিমাণ ৬০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন এক শীর্ষ সেনাকর্তা। ‘দ্য মাস্টার জেনারেল অফ দ্য অর্ডিন্যান্স’ বা এমজিও ইতিমধ্যেই দেশীয় সামরিক সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনায় বসতে উদ্যোগী হয়েছে। কোনও শীর্ষ দেশীয় সংস্থার কাছ থেকেই বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার সামরিক সরঞ্জাম, ব্যাটল ট্যাঙ্কের জন্য যন্ত্রাংশ ও গোলাবারুদ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এমনিতে ভারতের সামরিক ক্ষেত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয় রাশিয়া থেকে। কিন্তু সেনাকর্তাদের একাংশের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, রাশিয়া থেকে জটিল সামরিক সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ আসতে সবসময়ই বেশ দেরি হয়। ফলে পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় একটা ফাঁক থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েই যায়। কিন্তু অতি সম্প্রতি ভারতের সামরিক প্রস্তুতিতে খামতি থাকার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতে এবার নড়েচড়ে বসেছেন বাহিনীর শীর্ষকর্তারা। প্রায় ১৩ লক্ষ সেনা সমৃদ্ধ বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে দেশীয় সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশের উপরেই তাঁরা আস্থা রাখছেন। শুধুই বড় যন্ত্রাংশ নয়, সামরিক সরঞ্জামের ছোট ছোট অংশ নির্মানের বরাত দিতে ইতিমধ্যেই অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রায় ৮০টি সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত চুক্তিপত্রও তৈরি হয়ে যাবে।
আগেই অবশ্য দেশের সেনাকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সামরিক সরঞ্জাম কেনার ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। ভারী যুদ্ধের জন্য সেনার ভাঁড়ারে যাতে অস্ত্রের কোনও অভাব না দেখা দেয়, সেদিকে নজর রাখতে যে কোনও প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও প্রযুক্তি কেনার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে সেনাকে। দীর্ঘদিন ধরেই সেনাকর্তাদের একাংশ দাবি জানিয়ে আসছিলেন, বিদেশ থেকে আমদানির প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল হওয়ায় সেনার হাতে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্র তুলে দিতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। এবার যুদ্ধের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে আর কোনও ফাঁক রাখতে চায় না সেনাবাহিনী। ইতিমধ্যেই দেশের সবক’টি বাহিনীর সেনাপ্রধানরাই দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও চিন-পাকিস্তানের পদক্ষেপের উপর নজর রেখে চলেছেন। সেই রিপোর্ট প্রতি মুহূর্তে জমা পড়ছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। ডোকলামে দুই দেশের সেনাই এই মুহূর্তে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে। ভুটান সীমান্ত বরাবর রাস্তা তৈরি করে চিনকে যুদ্ধের সময় ‘ট্যাকটিকাল অ্যাডভান্টেজ’ পেতে দেবে না ভারত। আর তাই সিকিম সীমান্তেও ক্রমশ ঘাঁটির সংখ্যা বাড়াচ্ছে ভারত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.