সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০০৮-এ গুজরাত দাঙ্গার মূল চক্রী আবদুল সুভান কুরেশি ওরফে তওকিরকে গত সোমবার গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। গত আট বছর ধরে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় নাম ছিল কুরেশির। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার কুরেশিকে জেরার পর পুলিশ জানিয়েছে, এই জঙ্গি একাধিক ভাষায় কথা বলতে পারে। বিভিন্ন বিষয়ে তার ভাল জ্ঞানও রয়েছে।
যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (স্পেশাল সেল) এম এম ওবেরয় বুধবার বলেন, “ধৃত ব্যক্তি ইংরেজিতে অত্যন্ত স্বচ্ছন্দ। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। প্রযুক্তিগত জ্ঞান ভাল। যে কারণে হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরুতে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজও করেছে কুরেশি।” ধৃত কুরেশি ‘ভারতের লাদেন’ নামে পরিচিত। বিভিন্ন রাজ্যেই পুলিশের নজরদারিতে ছিল এই জঙ্গি নেতা। তার বিরুদ্ধে একাধিক তথ্যপ্রমাণও সংগ্রহ করেছিল। তবে প্রতিবারই সে পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে পিছলে বেরিয়ে গিয়েছে। যে কারণে কুরেশির বিরুদ্ধে থাকা একটি নথিতে তাকে ‘সিমির ভূত’ বা ‘ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের ভূত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক আধিকারিক জানান, “কুরেশির বিরুদ্ধে আমাদের হাতে প্রচুর প্রমাণ ছিল। কিন্তু প্রতিবারই সে চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। সে কারণেই কুরেশিকে ভুত বলা হয়।”
জানা গিয়েছে, ৪৫ বছরের এই ইঞ্জিনিয়ার বাইকুল্লার খ্রিশ্চান মিশনারি স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেছিল। কিশোর বয়সে পড়াশোনায় অত্যন্ত আগ্রহী ছিল। সে সময়ে কুরেশি নিয়মিত মুসলিম চ্যারিটেবল লাইব্রেরিতে গিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করত। ১৯৯৫ সালে কুরেশি ভারতীয় বিদ্যাপিঠ থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইলেকট্রনিক্সে ডিপ্লোমা করে। পরে সে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর কোর্স করে। শিক্ষা শেষ করে মুম্বইয়ের একটি সংস্থায় ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগ দেয়। এ সময়ই সে কুরলায় সিমির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে শুরু করে। ঘনিষ্ঠতা হয় আইএম-এর প্রধান রিয়াজ ভাটকল এবং ইকবাল ভাটকলের সঙ্গে। ভাল বক্তা হওয়ায় সুবাদে সিমি ও আইএম-এর সেতুবন্ধনের কাজে লাগানো হয় তাকে। ২০০৭-এ সিমির তরফে জঙ্গিদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্ব ছিল কুরেশির। ২০০৮—এর ২৬ জুলাই গুজরাতে একাধিক বিস্ফোরণে জড়িত ছিল কুরেশি এবং আইএম। ওই বিস্ফোরণের পর সে কিছুদিন নাম ভাঁড়িয়ে রাঁচিতে থাকে। সেখান থেকে বিহার হয়ে নেপালে পালিয়ে যায়। নেপালে ভুয়ো পাসপোর্টও বের করে সে। নেপাল থেকে সৌদি আরবে চলে যায় কুরেশি। সেখানে সে আইএম-এর জন্য অর্থ সংগ্রহের কাজ শুরু করে। ২০১৭—র জুনে আরব থেকে ভারতে ফেরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.