Advertisement
Advertisement
আইআরসিটিসির টিকিট

আইআরসিটিসি’র টিকিটে কালোবাজারি, আয়ের অধিকাংশ যাচ্ছে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে

চাঞ্চল্যকর তথ্য আরপিএফের কাছে।

Black marketing of IRCTC tickets exposed, says a source close to RPF
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:February 7, 2020 8:46 pm
  • Updated:February 8, 2020 12:40 pm

সুব্রত বিশ্বাস: সংরক্ষিত টিকিট কাটতে পারছেন না যাত্রীরা। টিকিট চলে যাচ্ছে কালোবাজারিদের হাতে। যে বাজার নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে দুবাই, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুর ও যুগোস্লোভিয়া থেকে। টিকিটের কালোবাজারি থেকে প্রতি বছর হাজার থেকে পনেরোশো কোটি টাকা আয় করছে এই চক্র। যার অধিকাংশটাই চলে যাচ্ছে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে। 

আরপিএফের ডিজি অরুণ কুমার বলেন, “সম্প্রতি গিরিডির বাসিন্দা কুখ্যাত গোলাম মোস্তাফাকে ভুবনেশ্বর থেকে গ্রেপ্তার করে আরপিএফ। সঙ্গে আরও ২৭ জনকে গ্রেপ্তারের পর আটক ল্যাপটপ থেকে স্পষ্ট হয় চক্রের সক্রিয়তা। গোলাম আধার ও প্যান কার্ড বানানোয় সিদ্ধহস্ত হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশকারীরা সহজেই এদেশের নাগরিক হয়ে গিয়েছে তার সহযোগিতায়।”

Advertisement

গোলাম মোস্তাফাকে টানা জেরায় আরপিএফ জেনেছে, চক্রের ২০ হাজার এজেন্ট ও ৩০০ প্যানেল দেশজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। সব স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তাদের। গোলাম মোস্তাফা ধরা পড়লেও চক্রের মূল পাণ্ডা দুবাইতে পালিয়ে যায়। উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা হামিদ আসরফ মূলচক্রী ২০১৯ গোণ্ডা বোমা বিস্ফোরণে অভিযুক্ত। এর আগে ২০১৬ সালে আরপিএফ তাকে টিকিটের কালোবাজারিতে অভিযুক্ত থাকায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: চটকদারি বিজ্ঞাপনে রাশ টানতে উদ্যোগী কেন্দ্র, আইন সংশোধন করে কঠোর শাস্তির ভাবনা]

গোলামের পাশাপাশি সক্রিয় রয়েছে ‘গুরুজি’ নামের একজন। অল্পশিক্ষিত এই ব্যক্তি টিকিটের কালোবাজারি শুরু করে ৫ বছরে সফটওয়ার ডেভলপার হয়ে যায়। ধৃত গোলামের ল্যপাটপের এনআইসি দেখে আরপিএফের স্পষ্ট ধারনা, একটি নির্দিষ্ট চক্র টিকিটের কালোবাজারি চালাচ্ছে। ধৃতের কাছে আইআরসিটিসির ৫০০ আইডি পাওয়া গিয়েছে। চক্রটি ‘এএনএমএস’ নামে একটি সফটওয়ার তৈরি করে। যা দিয়ে সব বেরিয়ার ভেঙে আইআরসিটিসির সাইটে ঢুকে টিকিট বুকিং করে নেয় চক্রের এজেন্টরা। এজন্য প্রয়োজনীয় ‘CAPCHA’ ও OTP দরকার পড়ে না। যাত্রীদের যখন একটা টিকিট করতে কমপক্ষে তিন মিনিট লাগে তখন এই চক্রের এজেন্টরা এক মিনিটে তিনটি টিকিট করে নেয়। যা কালোবাজারে বেশি দামে বিক্রি হয়। 

[আরও পড়ুন: ক্যাবে বসে CAA বিরোধী কথাবার্তা, যাত্রীকে থানায় নিয়ে গেলেন চালক]

এই চক্রের ২০ হাজার এজেন্ট ও ৩০০ প্যানেল সক্রিয় হওয়ায় সাধারণ যাত্রীরা সংরক্ষিত টিকিট পান না। টিকিট নিমেষে চলে যাচ্ছে কোলোবাজারিদের হাতে। যার অধিকাংশ টাকা সন্ত্রাবাদীদের ফান্ড ও মানি লেন্ডিংয়ে লাগানো হয়। আইআরসিটিসির ৫০০ আইডি ও ২৪০০ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খাতা পেয়েছে আরপিএফ। ই-টিকিট বুকিংয়ে কাস্টমার সরাসরি লগ ইন করে অথবা এজেন্ট লগ ইন করা হয়। পাসওয়ার্ড দিয়ে ‘CAPCHA’ আসার পর এন্টার করে তবেই সাইটে ঢুকে টিকিট বুকিং করতে হয়। কিন্তু এই চক্র নিজেদের তৈরি ANMS সফটওয়ার দিয়ে সব বেরিয়ার ভেঙে আইআরসিটিসির সাইটে ঢুকে টিকিট বুকিং করে নেয় অতি দ্রুততার সঙ্গে। এক মিনটে তিনটি টিকিট বুকিং করার প্রায় সব টিকিটই তুলে নেয় এই চক্রের এজেন্টরা। হাজার থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা বছরে আয় হয়, যার অধিকাংশই চলে যাচ্ছে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে, দাবি আরপিএফ ডিজির।

মূল পাণ্ডা হামিদ আসরফ দুবাইতে বসে এই গ্যাং চালাচ্ছিল। সেই মাষ্টার মাইন্ড বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এনআইএ, সিবিআই- সব কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি এখন তদন্ত শুরু করেছে। যাবতীয় নথি আরপিএফ তুলে দিয়েছে তদন্তকারীদের হাতে। জানিয়েছেন আরপিএফের ডিজি।  

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ