সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বিজ্ঞাপন-সর্বস্ব মোদি সরকার’। বিরোধীদের এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সংসদে দাঁড়িয়ে একাধিক কংগ্রেস নেতা দাবি করেছেন, পূর্ববর্তী সরকারের প্রকল্প শুধুমাত্র নাম বদলে বড় বড় বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজের নামে চালানোর চেষ্টা করছেন নরেন্দ্র মোদি। বিরোধীদের কেউ কেউ আবার বলেন, যে পরিমাণ টাকা উন্নয়নের পিছনে খরচ হয় তাঁর চেয়ে অনেক বেশি খরচ হয় বিজ্ঞাপনে। বিজ্ঞাপনের পিছনে সরকারের খরচের পরিমাণ বিরোধীদের সেই দাবিকে কিছুটা হলেও স্বীকৃতি দেয়। কারণ খোদ সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে বিজ্ঞাপনের পিছনে কেন্দ্রের খরচ হয়েছে প্রায় ১ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ সালে এই খরচের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত বছর ২০১৫ সালের তুলনায় বিজ্ঞাপনের খরচ বেড়েছিল ৮ শতাংশ। ২০১৪-১৫ সালে বিজ্ঞাপন বাবদ খরচ ছিল প্রায় ৯৯৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ একটা বিষয় পরিষ্কার যে প্রতি বছরই আর্থিক বাজেটের একটা বড় অংশ খরচ করা হয় বিজ্ঞাপনের পিছনে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এ হেন বিজ্ঞাপনের বহর আদৌ কোনও কাজে লাগছে তো?
বিজ্ঞাপন দেওয়ার পিছনে সরকারের যুক্তি, সাধারণ মানুষকে সরকারি প্রকল্প সম্পর্ক সচেতন করা। বিরোধীরা অবশ্য বলেন, আত্মপ্রচারই একমাত্র লক্ষ্য বিজেপির। উদ্দেশ্য যেটাই হোক সেটা আদৌ সাধিত হচ্ছে কিনা তা নিয়ে সংশয় উঠতে শুরু করেছে বিজেপির অন্দরে। তাই এবার সরকারি বিজ্ঞাপন গুলির ’পাবলিক ইমপ্যাক্ট’ অর্থাৎ জনমানসে প্রভাব কতটা তা নিয়ে সমীক্ষা করতে চাইছে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। বৈদ্যুতিন মাধ্যম নাকি সংবাদপত্র নাকি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, কোন মাধ্যমের বিজ্ঞাপন জনমানসে কতটা প্রভাব ফেলছে সমীক্ষা করা হবে। পরবর্তীকালে কোন মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে তা আন্দাজ করতেই এই সমীক্ষার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের।
ক’দিন আগেই বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ দলের শাখা সংগঠনগুলির বৈঠকে জানিয়েছিলেন সরকারি প্রকল্পগুলি সম্পর্কে আরও প্রচার করতে হবে কর্মীদের। সাধারণ মানুষ পর্যন্ত পৌঁছে দিতে হবে সরকারি প্রকল্পের সুবিধার কথা। আর সেজন্য যে সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করা হবে সে ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন তিনি। ১৯-এর নির্বাচনের আগে এই সমীক্ষাকে তাই বাড়তি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ২০১৪ লোকসভার আগে সংবাদমাধ্যম তথা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরোধীদের গুড়িয়ে দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। ১৯-এর আগে অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আর একাধিপত্য নেই বিজেপির। সূত্রের খবর, গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতারা তাই এবার ফোকাস করতে চাইছেন প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.