সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হতাশা ও সেখান থেকে আত্মহত্যার প্রবণতা। সীমান্তে ‘নির্ভীক’ জওয়ানদের শিবিরেও এ ঘটনার ব্যতিক্রম হয় না। সেই প্রবণতাকে রুখে দিতে এবার বিশেষ পদক্ষেপ নিচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
প্রতি বছর জওয়ানদের মেডিক্যাল চেক-আপ হয়ে থাকে। সেই চেক-আপেই এবার যুক্ত হচ্ছে ‘ওয়েলনেস কোশিয়েন্ট অ্যাসেসমেন্ট।’ যেখানে কোনও জওয়ানের মানসিক সুস্থতাও পরীক্ষা করা হবে। দেশের প্রধান ও সবচেয়ে উত্তপ্ত দু’টি সীমান্ত পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। অক্লান্তভাবে সেই সীমান্তরক্ষার দায়িত্ব পালন করে চলেছেন ২ লক্ষ ৬৫ হাজার জওয়ান। তাঁদের দেখভালের জন্যই এবার বিজ্ঞানসম্মত পাইলট প্রজেক্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিএসএফ ডিরেক্টর জেনারেল কে কে শর্মার মস্তিষ্কপ্রসূত এই প্রজেক্ট সেনা শিবিরে আত্মহত্যার সংখ্যা কমাতে সক্ষম হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “অতীতে শত্রুপক্ষের আক্রমণে যত না সেনা শহিদ হয়েছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি জন প্রাণ হারিয়েছেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে, দুর্ঘটনায় অথবা আত্মহননের পথ বেছে নিয়ে। তবে জওয়ানদের মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখার একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করায় আত্মহত্যার হার আগের থেকে অনেকটাই কমানো গিয়েছে। স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের কোর্স করানোর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। আর এবার আরও একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে কোনও সেনাকর্মী হতাশাগ্রস্ত হলে আগে থেকেই তার ইঙ্গিত পাওয়া সম্ভব হয়। এমনটা হলে যাতে তাঁকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো যায় সে ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।”
কীভাবে বোঝা যাবে, কোনও সেনাকর্মী হতাশায় ভুগছেন? মেডিক্যাল চেক-আপের সময় একটি লম্বা প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে। যেখানে জওয়ানদের নানা তথ্য জানাতে হবে। আর সেখান থেকেই সেই ব্যক্তির মানসিক অবস্থার ইঙ্গিত মিলবে। চিকিৎসক ও মনোবিদদের পরামর্শ নিয়েই তৈরি করা হচ্ছে প্রশ্নপত্র। এরপর সেই জওয়ান অথবা আধিকারিককে চিহ্নিত করে প্রয়োজন মতো তাঁর কাউন্সেলিং করা হবে। ডিজি শর্মা বলছেন, সেনাবাহিনীর ৯৫ শতাংশই মানসিকভাবে সুস্থ ও স্বাভাবিক। তবে ৫ শতাংশের কথা মাথায় রেখেই এই প্রজেক্ট।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালে যেখানে ৪৬ জন বিএসএফ জওয়ান আত্মঘাতী হয়েছিলেন, সেখানে পরের বছর সেই সংখ্যা কমে হয় ২৭। গত বছর আত্মঘাতী হয়েছিলেন ২৪ জন জওয়ান। সাধারণত সীমান্তের প্রতিকূল পরিবেশ, পরিবার থেকে দূরে থাকার কারণেই আত্মহননের প্রবণতা দেখা যায়। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ জওয়ান ছুটি কাটিয়ে আসার পরই আত্মঘাতী হয়েছেন। সেই প্রবণতাকেই এবার শক্ত হাতে রোধ করতে বদ্ধপরিকর বিএসএফ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.