সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভাই হারিয়ে গিয়েছিল দশ বছর বয়সে। আজ ২৮ বছরে এসেও তাকে খুঁজে চলেছেন কৃষ্ণণ। ছবি বিলি করে, সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য নিয়ে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই। যে তিমিরে ছিলেন তিনি, সেখানেই রয়ে গেছেন। তবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে এক সংস্থা। চেন্নাইয়ের আদিয়ারে তথ্যপ্রযু্ক্তি সংস্থার এক কর্মী বিজয় গণাদেশিকান কাজ করছেন শিশুপাচার নিয়ে। হারিয়ে যাওয়া শিশুদের ছবি সংগ্রহ করে চলেছেন এই যুবক। তাঁরই তৈরি করা একটি বিশেষ সফটওয়্যারের সাহায্যে সেই ছবি দিয়ে মুখের আকার মিলিয়ে খোঁজ চলছে সেইসব শিশুদের।
[টালা ট্যাঙ্কে মেরামতি, শনিবার বন্ধ জল সরবরাহ]
বিজয়ের সঙ্গে এই কাজে সাহায্য করছেন একঝাঁক তরুণ-তরুণী। কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইট খুঁজে নিজেদের উদ্যোগে একটি তথ্যভান্ডার তৈরি করেছেন, যেখানে হারিয়ে যাওয়া শিশু সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য রাখা থাকছে। প্রায় তিন লক্ষ শিশু সম্পর্কে তথ্য মিলছে সেখানে। এদের মধ্যে অনেকে সরকারি বা বেসরকারি হোমে আশ্রয় পেয়েছে। কিন্তু খুঁজে পায়নি তাদের নিজেদের পরিবারকে। বিজয়ের তৈরি করা সফটওয়্যারে নিখোঁজ কোনও শিশুর ছবি আপলোড করলে, সেই সফটওয়্যার নিজে থেকেই তথ্যভান্ডারে গিয়ে খুঁজতে শুরু করবে সেই শিশুকে। মুখের মিল, আকৃতি বা দেহের বিশেষ কোনও গঠন মিলিয়ে খোঁজ চলবে তার। অল্প হলেও, সাফল্য এসেছে এই পদ্ধতিতে। এলাহাবাদে রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষে করে দিন গুজরান করা এক চার বছরের শিশুর সাথে মুখের মিল পাওয়া গেছে হরিয়ানায় হারিয়ে যাওয়া এক শিশুর। পরে কেন্দ্রের শিশু নিখোঁজ সন্ধান ওয়েবসাইট থেকে তথ্য মিলেছে এই বিষয়ে।
[জানেন, নাসার চাকরি ছেড়ে কেন সিগারের ব্যবসা করছেন এই ব্যক্তি?]
গোটা দেশ জুড়ে প্রায় ১০০-রও বেশি শিশুকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে। এই সফটওয়্যার দিয়ে নেপাল থেকে ভারতে পাচার হওয়া প্রায় ১৫,০০০ হাজার শিশুর খোঁজ চলছে। মোবাইলে এই সফটওয়্যার আপলোড করে স্বেচ্ছাসেবকদের ১৫টি দল কাজ করছে শিশুপাচার নিয়ে। প্রসঙ্গত, প্রতি বছর ভারতের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যায় হাজার হাজার শিশু। শিশুপাচার চক্রের জালে পড়ে নিখোঁজ শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে ক্রমশই। এই আবহেই ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যান হাজির করে কেন্দ্র দাবি করেছে, গোটা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে নারী ও শিশু পাচারের সংখ্যা সর্বাধিক। তবে এই সব তথ্যের পরিসংখ্যানের মাঝেও বিজয়ের উদ্যোগ আশার আলো দেখাচ্ছে।