Advertisement
Advertisement

ভারতের এই মন্দিরের একটি দরজা খুললেই শুরু হবে মৃত্যুমিছিল!

কারণ, শ্রীমহাবিষ্ণুর অভিশাপ! মন্দিরের পূজারীরা বলে থাকেন, স্বয়ং পদ্মনাভস্বামীর নির্দেশেই ওই কক্ষটির দরজা খোলা বারণ!

Does Curse of the Cobra Hang Over Kerala Temple Treasure?
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 18, 2016 9:39 pm
  • Updated:August 18, 2016 9:39 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঈশ্বর পরম করুণাময়। কিন্তু, তিনিই আবার অন্য দিকে মানুষের শাসনকর্তা। ভুল করলে যে কারণে ঈশ্বরের কাছ থেকে শাস্তি পেতেই হয়।
তবে, এই সব ভুলের তালিকায় সাধারণত থাকে মানুষের নিজস্ব কৃত্যই! যে অন্যায় সে অন্যের সঙ্গে করেছে, ব্যাপারটা তারই শোধ দেওয়া!

padmanabhaswamy1_web
পাতালকক্ষ থেকে প্রাপ্ত পদ্মনাভস্বামীর স্বর্ণবিগ্রহ

এর বাইরেও ঈশ্বরের কোপ এবং পরিণামে শাস্তির মুখে পড়তে পারে মানুষ। যদি মানুষ কোনও দৈব আদেশ অমান্য করে, সে সব ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে থাকে! যেমনটা দেখা যায় কেরলের এক বিখ্যাত মন্দিরেও। যেখানে শ্রীমহাবিষ্ণুর অভিশাপে যুগের পর যুগ বন্ধ থাকে একটি বিশেষ দরজা। ব্রহ্ম পুরাণ, মৎস্য পুরাণ, বরাহ পুরাণ, স্কন্দ পুরাণ, পদ্ম পুরাণ, বায়ু পুরাণ, ভাগবত পুরাণ এবং মহাভারতেও উল্লেখ আছে যে মন্দিরের। আর, ইতিহাসের সূত্র ধরে এগোলে দেখা যাচ্ছে ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি ত্রিবাঙ্কুর রাজবংশের হাতে এই পদ্মনাভস্বামী মন্দির সংস্কারের কথা।

Advertisement
padmanabhaswamy2_web
পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের অভ্যন্তরভাগ

পদ্মনাভস্বামী বলা হয়ে থাকে বিষ্ণুকে। বিষ্ণুর নাভিপদ্মে অবস্থান করেন ব্রহ্মা; তাই তাঁকে বলা হয় পদ্মনাভস্বামী। অর্থাৎ এই মন্দিরের কুলদেবতা স্বয়ং বিষ্ণুই! তাহলে কেন নিজের মন্দিরকে শাপগ্রস্ত করে রেখেছেন স্বয়ং তিনিই?
সে কথায় আসার আগে আরেকটি রহস্য উন্মোচিত না করলেই নয়। কেরলের এই পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের নিচে রয়েছে একটি পাতালঘর। বেশ বড়সড় সেই পাতালঘর। ছয়টি কক্ষ পর পর দরজা বন্ধ অবস্থায় রয়েছে সেই পাতালঘরে। তার মধ্যে দ্বিতীয় কক্ষটি বাদ দিয়ে বাকি সবকটাই সরকারি নির্দেশে খোলা হয়েছিল ২০১১ সালে। এবং খোলার পরেই স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন সরকারি কর্মচারীরা। সাকুল্যে ২২ বিলিয়ন মূল্যের সোনা মিলেছিল পাঁচটি কক্ষ থেকে। সোনার মুদ্রা, সোনার গয়না, সোনার তৈজসপত্র, সোনার মূর্তি- সব হেলাফেলায় রাখা ছিল সেই সব কক্ষে!

Advertisement
padmanabhaswamy5_web
এই সেই দ্বিতীয় কক্ষের দরজা

কিন্তু, অনেক চেষ্টা করেও দ্বিতীয় কক্ষটির দরজা খোলা যায়নি। কারণ, শ্রীমহাবিষ্ণুর অভিশাপ! মন্দিরের পূজারীরা বলে থাকেন, স্বয়ং পদ্মনাভস্বামীর নির্দেশেই ওই কক্ষটির দরজা খোলা বারণ! যাঁরা দরজা খুলবেন, নির্বংশ হবেন! পাশাপাশি, পৃথিবীতে নেমে আসবে প্রলয়। ফলে, যুগের পর যুগ ধরে ওই কক্ষটি বন্ধই থাকে। পূজারীরাও তাই জানেন না, ওই কক্ষের ভিতরে কী রয়েছে!
দ্বিতীয় ওই কক্ষের দরজাটিও বেশ রহস্যময়। সেই দরজার পুরোটা জুড়ে রয়েছে খোদাই করা সাপ। একটি নয়, অনেকগুলি। তার মধ্যে খুব স্পষ্ট ভাবে চোখে পড়ে মাঝের সাপের ফণাটিকে! লোকবিশ্বাস, তিনি স্বয়ং অনন্ত বা শেষনাগ। ক্ষীরসমুদ্রে যাঁকে শয্যা করে বিশ্রাম নেন শ্রীভগবান।

padmanabhaswamy3_web
শ্রীপদ্মনাভস্বামীর প্রস্তর বিগ্রহ

আর ঠিক এই জায়গা থেকেই রহস্য তৈরি হয়। ওই কক্ষের দরজা কিন্তু দু’বার খোলা হয়েছিল। একবার ১৯৩১ সালে, শেষ বার ২০১১ সালে। দেখা গিয়েছিল, ওই কক্ষের ভিতরে রয়েছে আরও একটি কক্ষ। সেই কক্ষটির দরজা খোলা কোনও ভাবেই সম্ভব হয়নি। বলা হয়, ওই কক্ষে বিশ্রাম নেন স্বয়ং পদ্মনাভস্বামী। ওই কক্ষেই তিনি রেখেছেন তাঁর সুদর্শন চক্র। দেবতা, ঋষি এবং যক্ষ-যক্ষীরা তাঁর পূজার্চনা করে ওই কক্ষে উপস্থিত থেকে। উগ্র নৃসিংহদেব নিজে থাকেন ওই দরজার প্রহরায়! সেই জন্যই দরজাটি খোলা সম্ভব হয় না।
আরও আশ্চর্য ব্যাপার, ওই দরজায় কান পাতলে ভেসে আসে এক অদ্ভুত আওয়াজ। মনে হয়, অনেক দূর থেকে স্তোত্র উচ্চারণের শব্দ ভেসে আসছে। কেউ বা বলেন, তা আসলে সমুদ্রের জলরাশির গর্জন! ক্ষীরসমুদ্রের, যেখানে বাস করেন পদ্মনাভস্বামী! সেই জন্যই এই দরজা খুললে জলরাশিতে ডুবে যাবে সৃষ্টি!

padmanabhaswamy4_web
চিত্রে পদ্মনাভস্বামীর গর্ভগৃহ

পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের পূজারীরা এও বলেছিলেন, অন্য কক্ষের সোনা বাইরে নিয়ে যাওয়াও সমীচীন নয়। ভগবানের বারণ আছে বলেই তাঁরাও ওই সোনায় হাত দেন না। কিন্তু, সরকারি কর্মচারীরা মন্দিরের সম্পত্তি পরিমাপের জন্য এই কাজ করতে বাধ্য হন। যার পরিণামে কেরল বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছে বলে মন্দিরের পূজারীদের বিশ্বাস।
তবে, শত চেষ্টা করেও দ্বিতীয় কক্ষের অভ্যন্তরীণ গর্ভগৃহের দ্বার উন্মুক্ত করা যায়নি! তা থেকে গিয়েছে এক অমীমাংসিত রহস্যরূপেই!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ