সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এরই নাম বোধহয় ভারতবর্ষ! একটি ফুটফুটে মেয়েকে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার করতে একজোট হয়ে শপথ নিলেন সব ধর্মের পুলিশ অফিসাররা। নিহত মেয়েটি মুসলিম, তাতে কী? বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এই তত্ত্বে দেশের সায় নেই। যে মারা গিয়েছে, তার ধর্ম কী, যে পাষণ্ডরা মেরেছে তাদেরই বা কী জাত – জানতে চাইছে না পুলিশ। বরং ফুটফুটে মেয়েটির হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করতে হিন্দু অফিসাররাই এগিয়ে এসেছেন সকলের আগে। তাঁদের সঙ্গত দিয়েছেন মুসলিম অফিসাররাও। আর এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করবেন একজন শিখ বিচারক।
A big shout out to the J & K police Crime Branch for doing a good job under pressure,going after their own in the horrific rape and murder of little Asifa.These men are at the forefront of fighting terrorists and now fake nationalists say they don’t have faith in them. @spvaid
— Nidhi Razdan (@Nidhi) April 12, 2018
কাঠুয়ার আটবছরের ফুটফুটে শিশুকন্যা আসিফাকে দিনের পর দিন গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। কেন্দ্রের শাসক দল চুপ করে থাকলেও সরব হয়েছেন আপামর ভারতবাসী। রাজনীতিকে দূরে ঠেলে মানুষ চাইছেন দোষীদের কড়া শাস্তি। আর এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মনে ভরসা জোগাচ্ছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডিজি এস পি ব্যাদের মন্তব্য। যিনি সাফ জানিয়েছেন, দোষী হিন্দু না মুসলিম সে সব পুলিশ দেখবে না। কর্তব্যই সবার আগে। পুলিশ দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।
.@JmuKmrPolice Crime Branch has done a commendable job in investigating the unfortunate case of Asifa’s rape & murder. JKP is a highly professional police force and I’m sure the law will take its due course and the culprits will be suitably punished for this heinous crime.
— Shesh Paul Vaid (@spvaid) April 12, 2018
শুধু মুখে নয়, কাজেও একথা প্রমাণ করে দিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। আসিফাকে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনার ধর্মীয় মেরুকরণ করে বাঁচতে চাইছিল দুষ্কৃতীরা। জঘন্য এই হত্যাকাণ্ডে দোষীদের আড়াল করতে চাইছিল স্থানীয় পুলিশকর্মীদের একাংশও। এই ঘটনার তদন্তভার ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে তুলে দেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। আর তারপরই তদন্ত অন্য মোড় নেয়। দোষীদের মাত্র ১০ দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়। চার্জশিটে পুলিশ জানায়, মুসলিম যাযাবরদের এলাকাছাড়া করতে আসিফাকে গণধর্ষণ করে এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতে চাইছিল অভিযুক্তরা। হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় একটি মুসলিম মেয়ে গণধর্ষণ করে দোষীরা দৃষ্টান্ত তৈরি করতে চাইছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে পুলিশের চার্জশিটে। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের তদন্তে এক কাশ্মীরি হিন্দু ও এক মুসলিম অফিসারের নেতৃত্বে বাহিনী গঠন করে পুলিশ। দুই সম্প্রদায়েরই ভাবাবেগে যাতে কোনওরকম আঘাত না লাগে ও সংবেদনশীল এলাকায় যাতে দুষ্কৃতীরা সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়াতে না পারে, সেই লক্ষেই এই পদক্ষেপ বলে পুলিশের ইঙ্গিত।
Starting our live chat with @spvaid from Police Headquaters Jammu, send in questions via #AskDGPJK https://t.co/StTkcwWVkx
— J&K Police (@JmuKmrPolice) April 12, 2018
এদিকে, অভিযুক্তদের একে একে গ্রেপ্তার করতে শুরু করলে কয়েকজন স্থানীয় দুষ্কৃতী, পুলিশ, আইনজীবীরা অশান্তি শুরু করে। হাতে জাতীয় পতাকা ও মুখে জয় শ্রী রাম স্লোগান দিয়ে অভিযুক্তদের পক্ষে মিছিল বেরোয়। এরই মধ্যে একটি হিন্দু সংগঠনের ছাতার নিচে বিজেপির দুই নেতা দোষীদের গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে সরব হয়। দাবি জানায়, নিরীহদের ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু শত চাপের মুখেও মাথা নোয়ায়নি জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। একে একে প্রত্যেক অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের মূখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, নাবালিকাকে ধর্ষণের শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। পুলিশ রাজ্য সরকারকে আবেদন জানিয়েছে, একজন শিখ বিচারক এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করুক। এসপি ব্যাদ জানিয়েছেন, দোষী যেই হোক না কেন, যে সম্প্রদায়েরই হোক না কেন, পুলিশের নিজের কর্তব্য থেকে পিছিয়ে আসবে না। প্রয়োজনে সহকর্মীদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপে রাজি এসপি। ইতিমধ্যেই দুজন স্পেশ্যাল পুলিশ অফিসারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবমিলিয়ে রাজ্য পুলিশের জালে পুলিশেরই চারজন সদস্য।
#JusticeforAsifa@JmuKmrPolice don’t work as Hindus or Muslims says DGP @spvaid in an TV Interview with @IndiaToday.
— Ashish Kohli (@aashishkohli25) April 12, 2018
কিন্তু স্থানীয় আইনজীবীদের একাংশ আবার দোষীদের আড়াল করতে চাইছে। হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার আইনজীবীদের দাবি, রাজ্য পুলিশ নয়, সিবিআই এই মামলার তদন্ত করুক। এ সবই অবশ্য তদন্ত প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার ছুতো বলে উড়িয়ে দিচ্ছে পুলিশ। এস পি ব্যাদ বলছেন, ‘আইনজীবিরা কেন এরকম দাবি করছেন জানি না। কিন্তু এটা বলতে পারি, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ প্রতিদিন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করে। প্রতিদিনই আমাদের কোনও না কোনও সহকর্মী শহিদ হচ্ছেন। কিন্তু আমরা কর্তব্যে অবিচল।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই দেশের পুলিশ, তা সে যে রাজ্যেরই হোক না কেন, পুলিশ হিসাবেই কাজ করে। আমরা হিন্দু, মুসলিম, ক্রিস্টান, শিখ হিসাবে কাজ করি না। আমরা দায়িত্ব নিয়ে এ ওঠা বলতে পারি। আমরা পেশাদার। তাই একজন যোগ্য অফিসার এক্ষেত্রে যা করতেন, আমিও তাই করব। দোষীদের কড়া শাস্তি দিতে তদন্ত চলবে।’
Conspiracy theories aplenty about composition of Crime Branch probe team. Amid the innuendo and whisper campaign, @spvaid on how his officers cracked an ‘almost blind’ case. These are heroes in uniform. 8 pm #PeoplesCourt
— Padmaja joshi (@PadmajaJoshi) April 12, 2018
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.