বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: মহারাষ্ট্র নির্বাচন নিয়ে রাহুল গান্ধী ধারাবাহিকভাবে নির্বাচন কমিশন ও বিজেপির ‘গটআপ ম্যাচে’র অভিযোগ করে আসছেন। বিহার নির্বাচনেও ‘গটআপ’ অব্যাহত থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। এবার রাহুলের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগের পথে হাঁটতে চলেছে কমিশন। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, রাহুল গান্ধী সরকারিভাবে কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি। এমনকী, কমিশনের কাছে নিজের অভিযোগ লিপিবদ্ধ করতে বৈঠক করতে ইচ্ছাপ্রকাশ করেননি। ফলে বাইরে যে অভিযোগ করছেন তাতে সাংবিধানিক ক্ষমতাধারী একটি সংস্থা কালিমালিপ্ত হচ্ছে।
মহারাষ্ট্রের ভোট হয়ে গিয়েছে প্রায় ৬ মাস। ভোট পর্ব শেষ হওয়ার পর থেকেই ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়ে সরব হন রাহুল গান্ধী। যেমন বাংলায় ভোটার তালিকা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বচ্ছ ভোটার তালিকার দাবিতে সরব হন তিনি। অন্যদিকে, শুক্রবার মহারাষ্ট্রের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বড় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন রাহুল। ২০২৪ সালের নভেম্বরে ভোটে কারচুপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন তিনি। ভুয়ো ভোটার তালিকা, জাল ভোট, এমনকী নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। রাহুল অভিযোগ করেন, মোট পাঁচটি ধাপে মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে জালিয়াতি করা হয়েছে। সেগুলি হল—নির্বাচন কমিশন নিয়োগের জন্য প্যানেল গঠন, তালিকায় ভুয়ো ভোটার ঢোকানো, ভোটারদের সংখ্যা বৃদ্ধি, ঠিক যেখানে বিজেপির জয় প্রয়োজন, সেখানে জাল ভোট এবং সর্বশেষ এই কর্মকাণ্ডের প্রমাণ লোপাট করা।
রাহুলের যুক্তি, ২০২৩ সালে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র সরকার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইনের মাধ্যমে যে পরিবর্তন এনেছিল, তা সন্দেহজনক। এই আইনে নির্বাচন কমিশনারদের নির্বাচনের জন্য কমিটিতে ভারতের প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নিয়োগ করেছিল। সেই কারণেই কমিশনের পক্ষপাতিত্ব বেড়ে যায় বলে দাবি করেন তিনি।
এবার কমিশনের তরফে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের কাছে চিঠি মারফত আবেদন করা হয়েছে যাতে দলের তরফে দেশের সমস্ত বুথে ‘বুথ লেভেল এজেন্ট’ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে যখন বার্ষিক ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলে তাতে কংগ্রেসকে অংশগ্রহণ করার আবেদনও করা হয়েছে। কমিশনের তরফে খাড়গেকে জানান হয়েছে, বুথ লেবেল এজেন্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে কংগ্রেসের এজেন্টরা এলে তাঁরা ভোটার তালিকা সম্পর্কে অবহিত থাকবেন। কমিশনের এক সূত্র জানাচ্ছে, অনেক রাজনৈতিক দল কমিশনের কাজকর্ম সম্পর্কে অবহিত নয়। তাদেরকে আরও বেশি করে কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে হবে। তাহলে কমিশনকে নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ থাকবে না। কিন্তু কংগ্রেস তাদের বিরোধীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে খেলার রেফারির ভূমিকায় থাকা সংস্থাকে নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বী করে নিচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.