সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিনা শর্তে কৃষিঋণ মকুব করা, শাক সবজির দাম বাড়ানো, উৎপাদিত ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য সংক্রান্ত স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশ লাগু করা, গোহত্যার উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে গোবলয়ের রাজ্যগুলিতে তা তুলে দেওয়া, লিটারপ্রতি দুধের দাম বাড়িয়ে অন্তত ৫০ টাকা করা। এই দাবিগুলি নিয়েই দেশেজুড়ে ‘গাঁও বনধে’র ডাক দিয়েছে ১৩০ টি কৃষক সংগঠন। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে উত্তর ভারতের ৭ টি রাজ্যে।
যে দাবিগুলিতে কৃষকরা বিক্ষোভ করছেন সেগুলি নতুন কিছু নয়, বছরের পর বছর এই দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে দেশজুড়ে। ক্ষমতায় আসার আগে এই দাবিগুলির অধিকাংশই পূরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিশেষ করে ফসলের ন্যূনতম দাম, দুধের দাম বৃদ্ধি-সহ স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশ লাগু করার মত দাবিগুলি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর ভোটপ্রচারে। অথচ বিজেপিরই এক মুখ্যমন্ত্রী বলছেন এই দাবিগুলির নাকি কোনও যৌক্তিকতায় নেই। যে রাজ্যগুলিতে কৃষক বিক্ষোভ চরম আকার নিয়েছে তাঁর মধ্যে রয়েছে হরিয়ানাও। বিক্ষোভে উত্তাল রাজ্যে কৃষকদের সমস্যার সমাধানের পথের হদিশ না করে আন্দোলনের গুরুত্বকেই কমিয়ে দিতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর। বললেন, ‘নেহাতই অমূলক দাবিতে বিক্ষোভ করছেন কৃষকরা। এভাবে শাক সবজি, দুধ বিক্রি নষ্ট করলে কৃষকদের নিজেদেরই ক্ষতি।’ খট্টরের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া বিরোধী শিবিরে। বিরোধীরা বলছেন, এসব বলে আসলে কৃষক বিক্ষোভের গুরুত্ব কমিয়ে দিতে চাইছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী।
#WATCH: Haryana CM Manohar Lal Khattar speaks on farmers’ strike, says, ‘they don’t have any issues, they are just focusing on unnecessary things, not selling produce will bring losses to farmers.’ (01.06.2018) pic.twitter.com/CFY7dzgj2g
— ANI (@ANI) 2 June 2018
রাষ্ট্রীয় কিষাণ মহাসংঘের নেতৃত্বাধীনে মোট ১৩০ টি কৃষক সংগঠন গতকাল থেকে এই দাবিগুলি নিয়ে ধর্মঘট শুরু করেছে। ঠিক হয়েছে ১০ জুন পর্যন্ত উৎপাদিত ফসল, সবজি, চাল-ডাল, দুধ, মাংস কোনও কিছুই শহরে গিয়ে বিক্রি করবেন না কৃষকরা। দশদিন ধরে পুরোপুরি বন্ধ রাখা হবে সরবরাহ। এরপরও দাবি না মানলে ১০ জুন ভারত বনধ ডাকা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি।
এদিকে ধর্মঘটের প্রথম দিনে ব্যাপক সাড়া পড়েছে মধ্যপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রে। মধ্যপ্রদেশে গতকাল শাক-সবজির সরবরাহ প্রায় ৭০ শতাংশ কম ছিল। মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্তেও বামপন্থী কৃষক সংগঠন এআইকেএস বিক্ষোভ দেখিয়েছে। এছাড়াও হরিয়ানা, পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর, কর্ণাটক ও কেরলে ব্যাপক আকার নিয়েছে বিক্ষোভ। দুধ, ফসল বিক্রির পরিবর্তে রাস্তায় ছড়িয়ে ফেলছেন কৃষকরা। এই অবস্থায় খট্টরের এই মন্তব্য কৃষকদের ক্ষোভে ঘৃতাহুতি দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.