সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরই, দেশ জুড়ে ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’ প্রকল্প শুরু করে মোদি সরকার। এই প্রকল্পে ঘরে ঘরে শৌচাগার তৈরিতে জোর দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং। এখনও পর্যন্ত সারা দেশে ২ লক্ষ ৯ হাজার শৌচাগার তৈরি করেছে সরকার। কিন্তু, বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশে এখন এই শৌচাগারকে ঘিরে উচ্চ ও নিম্ম বর্ণের মানুষদের মধ্যে বিবাদ চরমে উঠেছে। নিম্মবর্ণের মানুষদের বাড়ির শৌচাগার ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উচ্চবর্ণের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় রীতিমতো চিন্তিত প্রশাসনও।
[বিজেপি শাসিত রাজ্যেই গো-রক্ষার নামে ঘটছে হত্যার ঘটনা, তোপ কংগ্রেসের]
মধ্যপ্রদেশে বুন্দেলখন্ড এলাকায় ছোট্ট গ্রাম বারাখেরা। গ্রামে আর্থিক স্বচ্ছলতা ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে প্যাটেলরাই উচ্চবর্ণের মর্যাদায় পায়। তপশিলি জাতিভুক্ত প্রজাপতিদের সেরকম প্রভাব-প্রতিপত্তি নেই। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে গ্রামে সকলের বাড়িতেই এখন শৌচাগার তৈরি হয়েছে। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে প্যাটেলরা। প্রজাপতি সম্প্রদায়ের মহিলাদের অভিযোগ, তাদের বাড়ির শৌচাগারের জন্য রাস্তা সরু হয়ে গিয়েছে। যাতায়াতের অসুবিধা হচ্ছে। এই অজুহাতে শৌচাগার ভেঙে দিয়েছে প্যাটেল সম্প্রদায়ের লোকেরা। ফলে বাধ্য হয়ে খোলা মাঠেই শৌচকর্ম সারতে হচ্ছে তাদের। অনেককে আবার খোলা মাঠেও শৌচকর্ম করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে চরমে দুর্ভোগে পড়েছেন প্রজাপতি সম্প্রদায়ের মানুষরা।
[একই দিনে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়ার ভাবনা সিবিএসই-র]
শৌচাগার নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের এই দ্বন্দ্বে বিপাকে পড়েছে প্রশাসন। দিন কয়েক আগে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বারাখেরা গ্রামে যান স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারা। ফের নতুন করে শৌচাগার তৈরির আশ্বাসও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু, তাতেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না প্রজাপতি সম্প্রদায়ের লোকজন। তাঁদের আশঙ্কা, প্রশাসন যদি নতুন শৌচাগার তৈরি করে দেয়, তাহলে সেগুলিও ভেঙে দেবে প্যাটেলরা। বারাখেরা গ্রামের বাসিন্দা মিথিলা প্রজাপতি বলেন, ‘আমরা যতই চেষ্টা করি না কেন, পরিস্থিতির বিশেষ হেরফের হবে বলে মনে হয় না। আমাদের খোলা মাঠেই শৌচকর্ম করতে যেতে হবে।’ মুকেশ প্রজাপতি নামে অপর এক গ্রামবাসীর দাবি, ‘গ্রামের সরপঞ্চও প্যাটেল সম্প্রদায়ের লোক। তাই আমাদের আরও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। শুধুমাত্র প্যাটলদের বাড়ির সামনে শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। এই কারণে বারবার আমাদের বাড়ির শৌচাগারগুলি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।’ অন্যদিকে প্যাটেল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ভগবান দাস প্যাটেলে বক্তব্য, ‘লোকজন শৌচাগারে ঢুকছে আর বেরোচ্ছে। দিনভর এই দৃশ্য দেখতে হচ্ছে আমাদের। সবচেয়ে বড় কথা, শৌচাগারের জন্য রাস্তাও সংকর্ণী হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতে আমরা অভিযোগ জানিয়েছি।’
[কাশ্মীরের বালাকোট সেক্টরে প্রবল গোলাবর্ষণ পাকিস্তানের]
স্থানীয় পঞ্চায়েতে সিইও হর্ষ দীক্ষিত জানিয়েছে, কেন বারবার শৌচাগারগুলি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য বারাখেরা গ্রামে প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই এবিষয়ে মন্তব্য করবেন তিনি।