সন্দীপ চক্রবর্তী: পরিবর্তনের ছোঁয়ায় উন্নয়ন। উন্নয়নের নিরিখে বদলে গিয়েছে বাংলা। সেই বদলে যাওয়া বাংলার মাটি থেকেই ফেডারেল ফ্রন্টের যাত্রা শুরু। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও। বৈঠক শেষে এই ঘোষণা প্রত্যয়ী কেসিআর-এর।
[ বিজেপির বিরোধিতায় এককাট্টা বিরোধীরা, অনাস্থা ঘিরে উত্তাল সংসদ ]
গোটা দেশ জুড়েই মোদি বিরোধী হাওয়া ক্রমশ শক্তি বৃদ্ধি করছে। আঞ্চলিক স্তরে বিরোধীরা এককাট্টা হলে যে পদ্ম গড়ে পতন অবশ্যম্ভাবী, তার নমুনা মিলেছে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর ও ফুলপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনে। মোদি বিরোদী জোটকে এককাট্টা করতে দীর্ঘদিন ধরেই অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নোট বাতিল থেকে জিএসটি-র মতো ইস্যুতে সবার আগে কেন্দ্র বিরোধিতায় নেমেছিলেন তিনিই। স্পষ্টতই জানিয়েছিলেন, বিরোধিতার জন্য ব্যক্তিগতভাবে যত দুর্ভোগই তাঁকে সহ্য করতে হোক না কেন, দেশের ভালর কথা ভেবে তিনি পিছপা হবেন না। ফলে জাতীয় স্তরে বিরোধী নেত্রী হিসেবে মমতার গ্রহণযোগ্যতা যথেষ্টই। সম্প্রতি কুড়িটি বিরোধী দলকে নিয়ে নৈশভোজের আয়োজন করেন ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গান্ধী। সেখানেও তিনি মমতার খোঁজ নেন। বিরোধী শক্তিকে এক করে ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের স্বপ্ন মমতার আজকের নয়। তবে নানা সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তা ধাক্কা খেয়েছে। এবার সেই মমতাকে সামনে রেখেই যেন ফেডারেল ফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর ঘোষণা করে দিলেন কেসিআর।
[ পদ্ম হটাতে বদ্ধপরিকর শিব সেনা, মোদি মুক্ত ভারত গড়ার ডাক রাজ ঠাকরের ]
এদিন নবান্নে বৈঠক শেষে চন্দ্রশেখর জানান, বাংলায় দারুণ উন্নয়নের কাজ হয়েছে। মমতার নেতৃত্বে বদলে গিয়েছে বাংলা। এই বদলে যাওয়া বাংলা থেকেই ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের প্রক্রিয়াটি শুরু হল। বিজেপি বিরোধিতাই ফ্রন্টের প্রধান কাজ। কিন্তু তাতে কি শামিল হবে কংগ্রেসও? রাজনৈতিক মহলে বড় প্রশ্ন ছিল এটাই। কৌশলে সে প্রশ্নে জল্পনা জিইয়ে রাখেন পোড়া খাওয়া দুই রাজনীতিবিদই। কেসিআর জানান, কংগ্রেস-বিজেপি দুই দলই কোনও না কোনও সময়ে দেশ চালিয়েছে। কিন্তু দেশ কী পেয়েছে? অর্থাৎ তাঁর কথাতে যেন অ-কংগ্রেসি জোটেরই ইঙ্গিত মিলল। অন্যদিকে মমতা জানিয়ে দিলেন, এখনই সে উত্তর দেওয়ার সময় আসেনি। তবে দু’জনেই এক বিষয়ে সহমত, দেশে পরিবর্তন দরকার। নতুন করে উন্নয়নের জোয়ার আনতে হবে। তাই বাস্তবের আলো দেখতে হবে ফেডারেল ফ্রন্টকে। এই আলোচনা থেকেই সে ফ্রন্টের শুরুটা হল। সমভাবাপন্ন আরও রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা হবে। এদিন মমতা বলেন, পলিটিক্স হল ‘কনটিনিউয়াস প্রসেস’। চলমান এ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সময় একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ এসে যায়। এখন সেরকমই এসেছে। জাতি হিসেবে দেশের অগ্রগতির কথা মাথায় রেখেই ফ্রন্ট তৈরি করে কাজ করতে হবে। কেসিআর ও মমতা একযোগে জানান, ফেডারেল কালেকটিভ লিডারশিপ অর্থাৎ সম্মিলিত নেতৃত্বেই কাজ করবে ফ্রন্ট।
[ কুমেরুতে ৪০৩ দিন কাটিয়ে নয়া নজির ইসরোর এই মহিলা বিজ্ঞানীর ]
জাতীয় রাজনীতিতে মোদি সরকারের বিরোধিতা ক্রমশ সক্রিয় হচ্ছে। এনডিএ ছেড়েছে টিডিপি। শিব সেনাও ছাড়ার মুখে। এই প্রেক্ষিতে এই বৈঠকের উপর গোটা দেশেরই নজর ছিল। আদৌ ফেডারেল ফ্রন্টের ধারণা দানা বাঁধে কিনা তা নিয়েও ছিল জল্পনা। তবে দুই রাজনীতিবিদই জানালেন আলোচনা ইতিবাচক। অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে আরও আলোচনার দরকার আছে। তবে ফেডারেল ফ্রন্টের নান্দীমুখ হল বাংলার মাটিতেই।