সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথম জন ছিলেন পরিচারিকা। দ্বিতীয় জন সমাজসেবী। তাঁদের ছাড়াও আরও তিন বাঙালিকে এবার কুর্নিশ জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ বছর মোট ৮৫ জনকে ‘পদ্ম’ সম্মানে সম্মানিত করা হচ্ছে।
[সেবার টানে বেলুড় থেকে সিউড়ি, টিফিন খরচ বাঁচিয়ে দুঃস্থদের পাশে পড়ুয়ারা]
‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত হচ্ছেন বাংলার সুভাষিণী মিস্ত্রি, সুধাংশু বিশ্বাস ও অমিতাভ রায়। এছাড়া সাহিত্যে অবদানের জন্য সম্মানিত হচ্ছেন এই রাজ্যের কৃষ্ণবিহারী মিশ্র। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ‘পদ্মশ্রী’ পাচ্ছেন রাজ্যের অপর কৃতী বিজয় কিচলু। সুধাংশুবাবুর বয়স এখন ৯৮ বছর। ‘পদ্ম’ সম্মান প্রাপকদের মধ্যে সম্ভবত তিনিই সবচেয়ে প্রবীণ। এ বছর প্রধানত সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নীরবে কাজ করে যাওয়া ‘অচেনা’ নায়কদের তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। তারই ফলশ্রুতিতে ‘পদ্ম’ পাচ্ছেন বাংলা থেকে পাঁচ অনন্য।
[জনপ্রিয়তা কমছে মোদির, সেরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা]
অনন্যদের মধ্যে অন্যতম সুভাষিণী মিস্ত্রি। ২০ বছর ধরে কখনও পরিচারিকা ও ঠিকাশ্রমিকের কাজ করেছেন তিনি। কখনও পেটের দায়ে সবজি বিক্রি। ৭৩ বছরের বৃদ্ধা তিনি এখন। মাত্র ২৩ বছর বয়সে স্বামীকে হারান। কিন্তু, স্বামীর মৃত্যুর আঘাতই তাঁকে এক দৃঢ় সংকল্প নেওয়ার ব্যাপারে অনুপ্রাণিত করে। তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, আর কাউকে তাঁর স্বামীর মতো বিনা চিকিৎসায় মরতে দেবেন না। তারপরেই নিজের কষ্টার্জিত সঞ্চয় জমিয়ে গরিবদের জন্য হাসপাতাল তৈরি করেন। বেহালার হাসপুকুরে তৈরি ‘হিউম্যানিটি হাসপাতালে’ প্রায় বিনা খরচে চিকিৎসা পরিষেবা পান দুঃস্থ, অসহায় মানুষ। তাই তাঁর নাম ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানের জন্য বিবেচিত করেছে কেন্দ্র।এছাড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর রামকৃষ্ণপুরে আশ্রম খুলে শিক্ষায় অবদানের জন্য ৯৮ বছর বয়সী প্রবীণ সুধাংশু বিশ্বাসকে ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। প্রায় ৭০ বছর ধরে অনাথ শিশু, সহায়সম্বলহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিয়ে রামকৃষ্ণপুর সেবাশ্রম বলে একটি প্রতিষ্ঠান চালান তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন ‘সমাজ সংস্কারক’ সুধাংশু।
[মাত্র ৯৯৯ টাকায় স্মার্টফোন আনছে ভোডাফোন ও ফ্লিপকার্ট]
চলতি বছর ‘পদ্মবিভূষণ’ সম্মান পাচ্ছেন সঙ্গীতজ্ঞ ইলাইয়ারাজা। ২০১০ সালে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান পেয়েছিলেন তিনি। সাড়ে ছয় হাজারের বেশি গানে সুর দিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ ভারতের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী। সাধারণতন্ত্র দিবস উৎসবের মাঝেই তাঁর হাতে সম্মান তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তিনি ছাড়াও ‘পদ্মবিভূষণ’ সম্মান পাচ্ছেন সঙ্গীতজ্ঞ গুলাম মুস্তাফা খান। সাহিত্য ও শিক্ষায় অবদানের জন্য একই সম্মান পাচ্ছেন পরমেশ্বরণ পরমেশ্বরণ। ও এছাড়া ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান পাচ্ছেন ন’জন। তালিকায় রয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনি ও পঙ্কজ আডবাণীর নাম। ‘পদ্মশ্রী’ পাচ্ছেন ত্রিপুরার সদ্য প্রাক্তন টেনিস-তারকা সোমদেব দেববর্মন। সাহিত্যে অরবিন্দ গুপ্তা, স্বাস্থ্যে অবদানের জন্য কেরলের আদিবাসী মহিলা লক্ষ্মীকুট্টি ও এম আর রাজাগোপালকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করা হচ্ছে। এছাড়া শিল্পকলায় ভাজ্জু শ্যাম ও ক্রীড়াবিদ প্যারা অলিম্পিকে সোনাজয়ী মুরলীকান্ত পেটকারকেও এই সম্মান দেওয়া হচ্ছে। ১৫ হাজারেরও বেশি কৃতী ‘পদ্ম’ সম্মানের জন্য আবেদন করেছিলেন। তার মধ্যে ৭৩ জনকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে সম্মানিত করা হচ্ছে।