সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতা দিবসেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছিলেন, হাঁটু প্রতিস্থাপনের খরচ কমতে চলেছে। আর সেই ঘোষণার পর ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটির উদ্যোগে (এনপিপিএ) হাঁটু প্রতিস্থাপনের খরচ কমে গেল প্রায় ৭০ শতাংশ। প্রতিস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের দাম ৫৪ হাজার থাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ ১৪ হাজার টাকার মধ্যে বেঁধে দিল দেশের প্রাণদায়ী ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা।
[জানেন কি, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় এত বড় দুর্নীতি চলছে?]
হাঁটু বিকল হয়ে পড়লে একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষও প্রায় পঙ্গু হয়ে পড়েন। সুস্থ জীবন ফিরে পেতে তাঁকে হাঁটতে হয় অস্ত্রোপচারের পথে। হাঁটু বদলানোর জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা-সামগ্রী বিক্রি করে হাসপাতাল বা অনেক ক্ষেত্রে ডিস্ট্রিবিউটররা ৯০% থেকে ১৫০% লাভ করছে বলে একটি সমীক্ষা করে জানতে পেরেছে এনপিপিএ। যে সামগ্রীর দাম আসলে হয়তো ১০ হাজার টাকা, সেটাই এতদিন রোগীকে কিনতে হত ৯০ হাজার টাকায়। হাঁটু প্রতিস্থাপনের সব সরঞ্জাম মিলিয়ে হাসপাতালগুলির লাভের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ২০০%। স্বভাবত, আর্থিক দিক থেকে বিপুল ঠকছেন রোগীরা।
[কেন্দ্রের নির্দেশকে অমান্য করে বেশি দামে স্টেন্ট বিক্রির অভিযোগ]
তাই এবার ভারতের বাজারে সাধারণত সবচেয়ে চালু ক্রোমিয়াম কোবাল্ট হাঁটু প্রতিস্থাপনের জন্য খরচ বেঁধে দেওয়া হল ৫৪,৭২০ টাকা। এতদিন এর জন্য লাগত এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা। টাইটেনিয়াম অ্যালয়ের দাম দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা থেকে কমে দাঁড়াল ৬৭,১১০ টাকা। শুধু তাই নয়, ইমপ্ল্যান্টের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জাম ও হাঁটুর বিভিন্ন অংশ প্রতিস্থাপনের জন্যও স্ল্যাব অনুযায়ী দাম বেঁধে দিল এনপিপিএ।
নাম গোপন রাখার শর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের এক শীর্ষকর্তা জানাচ্ছেন, হাঁটু প্রতিস্থাপনের সামগ্রীর দাম মাত্রাতিরিক্ত বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকার মুনাফা লুটেছে হাসপাতাল ও সরবরাহকারীরা। তাই এ বার কার্ডিয়াক স্টেন্টের মতোই হাঁটু প্রতিস্থাপনের সামগ্রীর দাম বেঁধে দেওয়া হল। ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের কাছে স্বস্তির বার্তা বয়ে আনল মোদির নয়া নির্দেশ। স্পেশ্যালাইজড হাঁটু প্রতিস্থাপনের খরচ ৫ লক্ষ টাকা থেকে কমে এখন হল ১ লক্ষ ১৩ হাজার টাকার আশেপাশে। প্রতিক্ষেত্রেই অবশ্য জিএসটি ধার্য হবে আলাদা করে। কেন্দ্রের এই নয়া সিদ্ধান্তের ফলে বার্ষিক অন্তত ১৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে রোগী ও তাঁদের পরিবারের।
এর আগে কার্ডিয়াক স্টেন্টেরও দাম কমানো সিদ্ধান্ত নেয় এনপিপিএ। গত ফেব্রুয়ারিতে স্টেন্টের দাম বেঁধে দেয় কেন্দ্র। এ বার হাঁটু প্রতিস্থাপনের সামগ্রীর ক্ষেত্রেও একই পথে হাঁটল তারা। এনপিপিএ-র কর্তারা জানিয়েছেন, তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য হল সাধারণ মানুষের উপর থেকে চিকিৎসার খরচের বোঝা কমানো। স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রের এই নয়া সিদ্ধান্তে খুশি নন অর্থোপেডিক নি-ইমপ্ল্যান্টস আমদানিকারী সংস্থা ও বণ্টনকারী সংস্থাগুলি। অর্থোপেডিক সার্জনদেরও মত, দাম বাঁধা হলে ইমপ্ল্যান্টের মান খারাপ হতে পারে।