Advertisement
Advertisement

রাতভর সীমান্তে পাক গুলিবর্ষণ, যোগ্য জবাব ভারতীয় সেনার

জম্মুর কাঠুয়া সেক্টরে বিএসএফের চৌকি লক্ষ্য করে গুলি ও মর্টার ছুড়তে শুরু করে পাক রেঞ্জার্স।

Heavy shelling happening from Pak side
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 28, 2016 9:14 am
  • Updated:October 28, 2016 9:26 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীপাবলির আগে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল নিয়ন্ত্রণ রেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাগোয়া এলাকা। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ওই এলাকায় লাগাতার সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করল পাকিস্তান। সাম্বা, হীরানগর, কাঠুয়া, নৌসেরা-সহ একাধিক সেক্টরে নির্বিচারে শেল-মর্টার বর্ষণ চালায় পাক সেনা৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে শুরু হয় এই হামলা৷ চলে আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত৷ প্রায় ২৪টি বিএসএফ পোস্ট লক্ষ্য করে গুলি চালায় পাক সেনা৷ পাল্টা জবাব দেয় বিএসএফও৷ বিএসএফ-এর পাল্টা গুলিতে পাকিস্তানের সীমান্ত লাগোয়া গ্রাম ও সেনা চৌকির ক্ষতি হয়েছে৷ পুঞ্চ সেক্টরে গুলি ও মর্টার হামলা চালায় পাকিস্তান। শুক্রবার ভোরে নৌসেরা সেক্টরেও পাক রেঞ্জার্স গুলি চালায়। মূলত সেনা ছাউনিগুলি লক্ষ্য করেই গুলিবর্ষণ করতে থাকে পাক রেঞ্জার্স। প্রতিটি ক্ষেত্রেই পাল্টা জবাব দিয়েছে বিএসএফ ও সেনা।

গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে জম্মুর কাঠুয়া সেক্টরে বিএসএফের চৌকি লক্ষ্য করে গুলি ও মর্টার ছুড়তে শুরু করে পাক রেঞ্জার্স। পরে হীরানগর ও সাম্বা সেক্টরেও পাক গোলাবর্ষণ শুরু হয়। বিএসএফের পাল্টা জবাবে পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয় পাক রেঞ্জার্স। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি সেনা ছাউনি। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বিএসএফকে পাকিস্তানের বিনা প্ররোচনায় গুলি বর্ষণের যোগ্য জবাব দিতে বলেছেন। সীমান্তের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলেছেন বিএসএফ-এর ডিজির সঙ্গে। নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলিবর্ষণ সম্পর্কে বিএসএফ-এর ডিজি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে অবহিত করেছেন। উরি হামলার পর পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায় ভারতীয় সেনা। এর ‘বদলা’ নিতেই পাকিস্তান সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণ রেখায় ধারাবাহিকভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গুলি চালাচ্ছে। পাকিস্তানের বিনা প্ররোচনায় গুলি বর্ষণের যোগ্য জবাবও দিচ্ছে ভারতীয় সেনা। রাজৌরি সেক্টরের স্থানীয় এক বাসিন্দা সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘পাকিস্তানের তরফে এরকম ভারী গোলাগুলি বর্ষণ আগে দেখিনি কখনও৷ আমরা প্রত্যেকে খুব ভয়ে আছি৷’ তবে রাজৌরির এসএইচও মহম্মদ ইউনিস চৌধুরি জানিয়েছেন, “স্থানীয় বাসিন্দাদের বলা হয়েছে বাড়ির ভিতরে থাকতে৷ আমরা পাক সেনাকে জবাব দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত। তবে কোনও সাধারণ নাগরিকের কোনও ক্ষতি হতে দেব না।”

Advertisement

গতকাল, পাক সেনার গুলি ও মর্টার হামলা জীতেন্দ্র কুমার নামে এক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে৷ জখম হয়েছেন সাতজন সাধারণ মানুষ৷ বিএসএফ এই হামলার পাল্টা জবাব দিলে এক পাক আধাসেনার মৃত্যু হয়৷ জখম হয় অপর একজন৷ তাংধার সেক্টরে পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে কিছু জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে বিএসএফের টহলদারি জওয়ানরা রুখে দাঁড়ায়৷ জওয়ানরা গুলি চালাতে শুরু করলে জঙ্গিরাও পাল্টা গুলি চালায়৷ এই সংঘর্ষে এক জওয়ানের মৃত্যু হয়৷ জখম হন অপর এক জওয়ান৷ আহত জওয়ানের চিকিৎসা চলছে৷ তবে প্রবল বাধার মুখে পড়ে জঙ্গিরা পিছু হঠতে বাধ্য হয়৷ অপর একটি ঘটনায় এদিন কাশ্মীরে একটি প্রাথমিক স্কুল ও দু’টি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে৷ তবে কারা এই কাজ করেছে সে বিষয়ে অন্ধকারেই রয়েছে পুলিশ৷

Advertisement

অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফের রাজৌরি জেলার সুন্দরবানি এলাকায় হামলা চালিয়েছে পাক সেনা৷ বিএসএফের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, বুধবার রাত সাড়ে আটটা থেকেই আন্তর্জাতিক সীমান্তের আরনিয়া এবং আর এস পুরা সেক্টরে ১৫টি সীমান্ত চৌকি এবং ২৯ টি গ্রাম লক্ষ্য করে পাক সেনা নির্বিচারে গুলি ও মর্টার হামলা চালায়৷ পাকসেনাদের ছোড়া মর্টারের স্প্লিন্টার মাথায় ঢুকে জীতেন্দ্র কুমার নামে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর একজন হেড কনস্টেবলের মৃত্যু হয়েছে৷ মৃত কনস্টেবল বিহারের মোতিহারি জেলার বাসিন্দা৷ অপর এক জওয়ান বুলেটবিদ্ধ হয়ে জখম হয়েছেন৷ বিএসএফের পক্ষ থেকে অবশ্য পাল্টা জবাব দেওয়া হয়েছে৷ এই পাল্টা জবাবে এক পাক আধাসেনার মৃত্যু হয়েছে৷ জখম হয়েছে অপর একজন৷ তবে জখম ওই আধাসেনাকে কোনও রকমে নিয়ে চলে গিয়েছে পাক সেনা৷ জম্মু-কাশ্মীরের এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখার কাছে আরনিয়া, আর এস পুরায় বুধবার রাত থেকে হামলা চালাতে শুরু করেছে পাক সেনা৷ বৃহস্পতিবার সকালেও সীমান্তের ওপার থেকে একটানা হামলা চলেছে৷ পাক সেনাদের এই হামলায় আর এস পুরার খোপরা বস্তি এলাকায় ছয়জন জখম হয়েছেন৷ আহতদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷

এদিকে, ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে শরিফ বলেছেন, অস্ত্র বিরতি ভেঙেছে ভারতই৷ এরকম চললে পাকিস্তান চুপচাপ বসে থাকবে না৷ গত ৮ জুলাই হিজবুল জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা এ পর্যন্ত ১৯টি স্কুল জ্বালিয়ে দিল৷ স্কুলে অগ্নিকাণ্ডের সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে৷ এক পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, গতকাল রাতে বারামুলা জেলার পাটান এলাকায় একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুল জ্বালিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা৷ ওই আগুনে স্কুলের তিনটি ঘর পুড়ে গিয়েছে৷ অন্যদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বন্ধের ডাক উপেক্ষা করে পথে নামায় রেনওয়ারি এলাকায় একটি অটোরিকশা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ