সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান। বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান।” সর্ব ধর্ম সহাবস্থানে এক আর্দশ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন কবি। বৃহস্পতিবার সেই স্বপ্নের বাস্তব রূপ দেখল দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও তৎসংলগ্ন এলাকায় উপস্থিত জনতা। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে নিমেষে সেই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ল তামাম দেশবাসীর মধ্যে। ভিন্ন ভিন্ন ধর্মালম্বী মানুষের হাতে হাত ধরে তৈরি করা ব্যারিকেডের ঘেরাটোপে নমাজ পড়লেন মুসলিম পড়ুয়ারা। হাজির ছিলেন সাধারণ মানুষও। একদিকে যখন প্রতিবাদের আঁচে পুড়ছে দিল্লি, ঠিক তখনই অন্য একতার দৃশ্যের সাক্ষী থাকল গোটা দেশ।
#JamiaMilliaUniversity while Muslims read namaz Hindus, Sikhs form a human chain to shield them. This while protestors protest against CAA /NRC in national capital pic.twitter.com/Uu17V22ev4
— Aishwarya Paliwal (@AishPaliwal) December 19, 2019
নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল সংসদে ওঠার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পরই সেই বিল আইনে পরিণত হয়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে প্রতিবাদের ঝাঁজও। পড়ুয়া থেকে বর্ষীয়ান নাগরিক, খেটে খাওয়া মজদুর থেকে রুপোলি পর্দার তারকা-একসঙ্গে সকলে পথে নেমেছেন। বির্তকিত আইন প্রত্যাহারে দাবিতে গলা মিলিয়েছেন সকলেই। তবে সেই প্রতিবাদী স্বর রোধ করতে পুলিশ-প্রশাসনও আগ্রাসী হয়েছে বলে অভিযোগ। আন্দোলনে নেমে উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আক্রান্ত হয়েছে পড়ুয়ারাও। তাও প্রতিবাদ চলছে। বিক্ষুব্ধ জনতার অভিযোগ, ধর্মের উপর ভিত্তি করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভেদাভেদের চেষ্টা চলছে। দেশের ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক চরিত্র বদলের চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। কিন্তু দেশবাসী আজও বিশ্বাস করে, ”মোরা একই বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু মুসলমান”।
[আরও পড়ুন : CAA নিয়ে দেশব্যাপী বিক্ষোভের জের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে জরুরি বৈঠক অমিত শাহর]
বৃহস্পতিবার দেশবাসীর সেই বিশ্বাসই প্রতিফলিত হল দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে।এদিনও CAA’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে জমা হয়েছিলেন বহু মানুষ। সেখানেই অন্যান্য ধর্মালম্বীরা হাত ধরে মানববন্ধন তৈরি করে। সেই মানববন্ধনের মাঝেই নমাজ পড়েন মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা। সেই দৃশ্য দেখতে ভিড় জমে যায়।এদিনের এই ছবি আরও একবার প্রমাণ করে দেয়, ভারত আজও ধর্মনিরপেক্ষতাই বিশ্বাসী।