সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনীতির ঘোলা জলে হিন্দুত্ববাদের জিগির। সেই জিগিরে আবার সস্তা ভোটব্যাঙ্কের খেলা। সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে। সম্প্রতি এক সর্বভারতীয় সংবাদপত্রের উদ্যোগে তাদের পাঠকদের মধ্যে একটি সমীক্ষা করা হয়। সরাসরি প্রশ্ন ছিল তাতে। পাঠকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ভারতীয় ভূখণ্ডে হিন্দুরা কি আক্রান্ত। প্রশ্ন সরাসরি হলেও, উত্তর মিলল অদ্ভুত। পাঠকদের মধ্যে ৬৫ শতাংশই মনে করেন, হিন্দুত্বকে বাঁচাতে গোটা পৃথিবী জুড়ে হিন্দুদের সংগঠিত হতে হবে।
[রবীন্দ্রনাথকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেনি ন্যাস, নয় আরএসএসের শাখাও]
আশির দশকে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে হিন্দুত্ববাদের ধ্বজা ওড়ানো শুরু। বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ শপথ নেওয়ার পরেও সংসদে জয় শ্রীরাম ধ্বনি শোনা গিয়েছিল। সেই সুরেই কথা বলেছেন পাঠকরা। তাঁদের দাবি, বিগত কংগ্রেস সরকার হিন্দুদের বাঁচাতে কোনও উদ্যোগই নেয়নি। হিন্দুদের রক্ষা করতে বিশেষ পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ তাদের। আরও নাকি প্রকট হয়েছে বিশেষ ধর্মের প্রতি আনুগত্য ও তোষণনীতি। ফলে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার ক্রমশ বেড়েছে। অমরনাথ যাত্রার উল্লেখ করে তাদের যুক্তির সপক্ষে বক্তব্য রেখেছেন কিছু পাঠক। গোটা বিশ্ব জুড়ে নি:শব্দে হামলা চলছে হিন্দুদের ওপর। প্যারিস থেকে ম্যানচেস্টার, সব জায়গায় হামলার শিকার হিন্দুরাই।
[বসিরহাট কাণ্ডের জের, সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব রুখতে কড়া আইনের পথে রাজ্য]
তবে এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন অন্যান্য পাঠকরা। তাঁদের বক্তব্য, অমরনাথ যাত্রায় বাকি দর্শনার্থীদের যিনি বাঁচিয়েছিলেন, তিনি একজন মুসলিম ছিলেন। তাই হিন্দু মুসলমানের এই ফারাক করে দেশের মধ্যে ভাগ বাঁটোয়ারা করার পরিকল্পনা বন্ধ হোক। কোনও বিস্ফোরণে যারা মারা যান, তাঁদের যেমন কোনও ধর্মে বাঁধা যায় না, তেমনই যারা হামলা চালিয়েছে, তারাও কোনও ধর্মের নয়। হিন্দু সন্ত্রাসবাদী হয়না বলে যারা গলা ফাটান, তাদের জন্য মালেগাঁও বিস্ফোরণের উদাহরণ আছে। ২০০৮ সালে মালেগাঁও বিস্ফোরণে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস ও অভিনব ভারতের সদস্যদের বিরুদ্ধে। সেই প্রেক্ষিতেই প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম প্রথম ‘হিন্দু সন্ত্রাসবাদ’ শব্দটি ব্যবহার করেন। ২০০৬ সালের সমঝোতা এক্সপ্রেসে বিস্ফোরণের পর এটাই দ্বিতীয় সন্ত্রাসবাদী হামলা যেখানে সরাসরি হিন্দুদের নাম জড়িয়েছে।