সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিকিম সীমান্ত থেকে এখনই সেনা সরানোর কোনও প্রশ্নই নেই। বরং আরও দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যের জন্য তৈরি হচ্ছে ভারতীয় সেনা। চিনের চোখরাঙানিকে কার্যত অগ্রাহ্য করে সীমান্তে এবার ঘাঁটি গড়ছে ভারতীয় সেনা।
চিনের সঙ্গে বিবাদমান অঞ্চলে ভারতীয় সেনার ছাউনি ফেলার ছবি প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি। যা দেখে বোঝাই যাচ্ছে, অন্তত ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় সিকিমের সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার প্রশ্নই উঠছে না। বরং চিনের সরকারি বাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি বা পিএলএ-র সদস্যদের চোখে চোখ রেখে ‘নন কমব্যাটিভ মোড’-এ দাঁড়িয়ে থাকবেন ভারতীয় জওয়ানরা। ভারতীয় সেনার রসদে যেন টান না পড়ে, সেই লক্ষ্যে সমতল থেকে আরও খাদ্যশস্য যাচ্ছে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে। সেনার একটি সূত্র জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত চিনের দিক থেকে কোনও বড়সড় হুমকি মেলেনি। কিন্তু ভারতীয় সেনা যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় তৈরি রয়েছে।
[ফিরল ১৯৬২-র স্মৃতি, সিকিম সীমান্তে ফের বিপুল সেনা মোতায়েন ভারতের]
প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিবাদমান ডোকা লা সীমান্তে নিজেদের অবস্থান ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও মজবুত করাই ভারতের লক্ষ্য। কিন্তু ‘কোনওভাবেই লালফৌজের কোনও প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না’, ‘আগেভাগে আক্রমণাত্মক হওয়া যাবে না’, ‘চিনা আগ্রাসন ও রাস্তা তৈরি রুখতে মজবুত ও নিশ্ছিদ্র মানবপ্রাচীর তৈরি করতে হবে’ বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভারতীয় জওয়ানদের। সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন এবং ‘বন্দুকের নল নিচের দিকে রেখে’ পজিশন নেওয়ার এই ঘটনাকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘নন কমব্যাটিভ মোড’ বা যুদ্ধের মনোভাবহীন জমায়েত। অর্থাৎ অস্ত্রের মুখ থাকবে নিচের দিকে, কিন্তু নজরদারি ও প্রতিরোধ থাকবে কঠোর।
চিনের তরফে পাল্টা হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, সীমান্ত নিয়ে কোনওরকম আপসের পথে হাঁটবে না বেজিং। তবে সীমান্ত থেকে সেনা সরাবে না চিনও। পাল্টা ভারতের বক্তব্য, ভুটান সীমান্তে চিনকে রাস্তা বানাতে দেবে না নয়াদিল্লি। কারণ, ওই বিতর্কিত সীমান্তে রাস্তা তৈরি করতে পারলে চিনা সেনা সহজেই ওই পথে যুদ্ধের সরঞ্জাম, ট্যাঙ্ক নিয়ে এসে ভারতের বিরুদ্ধে মোতায়েন করতে পারবে। গত তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সীমান্ত নিয়ে ভারতের সঙ্গে চিনের বিবাদ চরমে উঠেছে। এমনিতেই ভুটানের সঙ্গে চিনের কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। কিন্তু ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা রয়েছে ভুটানের। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে শুরু করে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত প্রায় ৩,৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাই বিস্তৃত ভারত-চিন সীমান্ত, যার মধ্যে ২২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা সিকিমের মধ্যে পড়ে।