সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লেডিজ ভার্সেস সমীর গর্গ! নাকি লেডিজ ভার্সেস যোগেশ। এখনও ধন্দে পুলিশ। ঠিক যেন রণবীর সিং-অনুষ্কা শর্মার ‘লেডিজ ভার্সেস রিকি বহেল’-এর কাহিনি। ছবির রণবীর সিংয়ের চরিত্র থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই ছয় বছর ধরে দিব্যি রমরমিয়ে মহিলাদের বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঠকিয়ে গিয়েছে দিল্লির যুবক সমীর গর্গ। কিন্তু সকলের কপালে তো আর অনুষ্কা শর্মা জোটে না। তাই সমীরকে দিল্লি রেলস্টেশন থেকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ। এখন ফিল্মি প্রতারকের স্থান শ্রীঘরে। ১৫ জন প্রেমিকাকে ধোঁকা দিয়ে এখন জেলের ঘানি টানছে শ্রীমান, জানালেন শাহদারার ডিসি।
২০১১ সালে মুক্তি পায় ‘লেডিজ ভার্সেস রিকি বহেল’। ছবিটা দেখে সমীর। পেয়ে যায় মেয়েদের ঠকিয়ে রোজগারের দারুণ আইডিয়া। সাধারণত তিরিশের শেষ ধাপে পৌঁছনো অবিবাহিত মহিলাদের ‘টার্গেট’ করত সে। ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট থেকে তাঁদের নাম-ঠিকানা জোগাড় করত। নিজের পরিচয় দিত হাইপ্রোফাইল কনগ্লোমারেট ফার্মের প্রধান হিসেবে।
[নোট বাতিলের পর কালো টাকা উদ্ধার ‘মাত্র’ ২৪৫১ কোটি টাকা!]
বলত, বাবা অবসরপ্রাপ্ত আইএএস, সে নিজে এমবিএ করেছে কোনও একটা আইআইএম থেকে। এমনকী লন্ডনের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির কথাও বলত। যদিও সবই ভুয়া, তা জানিয়েছে পুলিশ। তবে এই সব মিথ্যে কথা বলেই মহিলাদের বিয়ে প্রতিশ্রুতি দিত সমীর। এরপর তাঁদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে ভিডিও ও ছবি তুলত। টাকা না দিলে সোশ্যাল মিডিয়ায় সে ভিডিও ফাঁস করার নামে চালাত ব্ল্যাকমেলও। এই ব্যবসাতে ২০১৬ সালেই ১৫ জন মহিলার কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছে সমীর।
৫ সেপ্টেম্বর বিবাহবিচ্ছিন্না এক মহিলার ভাই পুলিশে অভিযোগ করেন, তাঁর বোন ও বোনের ১২ বছরের ছেলে দু’দিন ধরে নিখোঁজ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই মহিলা নিজের প্রোফাইল ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে আপলোড করেছিলেন। তখন সমীরের সঙ্গে পরিচয় হয়। এর মধ্যে মহিলার ভাই কোনওভাবে যোগাযোগ করেন বোনের সঙ্গে। ফোনে তিনি বোনকে মিথ্যে বলেন যে তাঁদের বাবা অসুস্থ, এইমসে ভর্তি। শুনে ওই মহিলা হাসপাতালে আসেন। বলেন, সমীরের সঙ্গে ফের মুম্বই রওনা দেবেন তিনি।
[রাম রহিমের ডেরায় সেনা-পুলিশ, ব্যাপক তল্লাশি]
সমীর নিজে আসে মহিলাকে নিয়ে যেতে। কিন্তু কিছু সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে নিয়ে চম্পট দেয়। পুলিশ মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে সেদিনই তাকে গ্রেপ্তার করে নয়াদিল্লি রেল স্টেশন থেকে। ওই মহিলা ও তাঁর ছেলেকে নিয়ে মুম্বইমুখী ট্রেনে উঠে পড়েছিল সে। মহিলা জানিয়েছেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে প্রতারণা করে সমীর। তাঁকে নিয়ে বৈষ্ণোদেবী ও গোয়া ঘুরে আসে। তাঁর ভিডিও তুলে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আদায় করে তিন লক্ষ টাকা। সমীর তাঁকে ধর্ষণ করে বলেও অভিযোগ করেন মহিলা। শুধু তিনিই নন, আরও পাঁচজন মহিলা সমীরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, বিয়ের কথা বলে সমীর তাঁদের প্রত্যেকের থেকে আট লক্ষ টাকা করে আদায় করেছে। কিন্তু ফিল্মি প্রতারকের আর শেষ রক্ষা হল না। শেষমেশ পুলিশের জালে তাঁকে পড়তেই হল। আর এবার জেলের ঘানি টানতেই হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.