Advertisement
Advertisement

Breaking News

অমৃতসর হামলার নেপথ্যে আইএসআই, রক্তাক্ত দিন ফেরাতে মরিয়া পাকিস্তান  

ঘটনার শিকড় লুকিয়ে ১৯৭৮ সালে।

ISI behind Punjab terror attack
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:November 19, 2018 9:07 am
  • Updated:November 19, 2018 10:43 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রবিবার সন্ত্রাসবাদী হানায় ফের রক্তাক্ত হয় পাঞ্জাব৷ পাঠানকোটে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার তিন বছরের মধ্যে ফের বারুদের গন্ধ আর রক্তের দাগ পঞ্চনদের তীরে। যথারীতি শোরগোল পড়েছে দেশজুড়ে৷ প্রথামাফিক শুরু হয়েছে তদন্ত৷ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা-র (এনআইএ) গোয়েন্দারা৷ সন্ত্রাসবাদী হামলায় মৃতদের ৫ লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য ঘোষণাও করেছে পাঞ্জাব সরকার৷ তবে এই হামলা পাঠানকোটের ঘটনা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন৷ আপাত দৃষ্টিতে সহজ মনে হলেও এর নেপথ্যে রয়েছে ভয়ানক ষড়যন্ত্র৷ তদন্তকারীদের মতে, ফের আটের দশকের শিখ ও নিরঙ্কারী সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ ফেরাতেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে আইএসআই৷       

উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে অমৃতসরে সংঘর্ষ বাধে শিখ ও নিরঙ্কারীদের মধ্যে৷ উগ্র শিখ নেতা ভিন্দ্রানওয়ালে ও ফৌজা সিংয়ের নেতৃত্বে নিরঙ্কারীদের উপর হামলা চালায় ‘অখণ্ড কীর্তনি জাঠা’ ও ‘দমদমি টাকসাল’-এর সদস্যরা৷ নিরঙ্কারীদের গুরু গুরবচন সিংয়ের উপর হামলা চালাতে গিয়ে তাঁর দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হয় ফৌজা সিং৷ কোনওমতে প্রাণ বাঁচিয়ে পালায় ভিন্দ্রানওয়ালে৷ মৃত্যু হয় ১৩ শিখ ও ৩ নিরঙ্কারীর৷ এই ঘটনার ফল খলিস্তান আন্দোলন ও ‘অপারেশন ব্লু স্টার’ বলে মনে করেন অনেকেই৷ সেই ক্ষত আজও শুকোয়নি৷ আজও নিরঙ্কারীদের পথভ্রষ্ট বলেই মনে করেন শিখ ধর্মের উগ্র অনুগামীরা৷ প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে ফের শিখ-নিরঙ্কারী সংঘর্ষ ঘটাতেই অমৃতসরে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়েছে আইএসআই৷ পাঞ্জাবে আটের দশকের রক্তাক্ত দিনগুলিকে ফিরিয়ে আনতে চায় পাকিস্তান৷            

Advertisement

রবিবার অমৃতসরে জঙ্গিদের গুলিবৃষ্টি এবং গ্রেনেড হামলায় নিহত হন তিনজন। শহরের কাছে আধিওয়ালা গ্রামে নিরঙ্কারী সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলার সময় বাইকে চেপে এসে উপস্থিত জনতার উপর এলোপাথাড়ি গুলি চালায় দুই অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, কাপড়ে ও হেলমেটে মাথা-মুখ ঢাকা মোট চার হামলাকারী দুটি বাইকে এসেছিল। তারা স্থানীয় নিরঙ্কারী ভবনে বুলেট বৃষ্টি করার সঙ্গে দুটি শক্তিশালী গ্রেনেডও ছোঁড়ে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ও গ্রেনেড হামলায় তৎক্ষণাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন কয়েকজন। হামলা চালিয়ে ঝড়ের বেগে বাইক নিয়ে উধাও হয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর জানায়, ঘটনাটি সন্ত্রাসবাদী হামলা। পরিকল্পনা করেই হামলা চালানো হয়েছে। সেনা বা আধা সেনারা যে অস্ত্র, গুলি ও গ্রেনেড ব্যবহার করে জঙ্গিরা সেটাই ব্যবহার করেছিল। হামলায় নিহত হয়েছেন তিন জন। জখম অন্তত ২৫ জন। আহতদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

Advertisement

অমৃতসর বিমানবন্দর থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে রবিবার দুপুর বারোটা নাগাদ এই হামলা চালানো হয়। অমৃতসরের ডেপুটি কমিশনার কমলদীপ সিং সাংঘা জানিয়েছেন, হামলার সময় গুরুদ্বারের ভিতর অন্তত আড়াইশো জন ছিলেন। গোটা পাঞ্জাবে এবং চণ্ডীগড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হামলাকারীদের ধরতে বিভিন্ন চেকপোস্টে, সেতুগুলিতে, আন্তঃজেলা সীমান্তে চেকিং বাড়ানো হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আততায়ীদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং জানিয়েছেন, নিহতদের পরিবার পিছু পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। জখমদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করবে পাঞ্জাব সরকার। তিনি বলেন, সন্দেহ করা হচ্ছে আজকের হামলার পিছনে পাক গুপ্তচর সংগঠন আইএসআইয়ের মদত রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ‘যে কোনওভাবেই হোক হামলাকারীদের ধরা হবে।’ উল্লেখ্য, নিরঙ্কারী সম্প্রদায় মূলস্রোতের শিখ সম্প্রদায় নয়। এটি একটি ‘সর্বধর্ম সমন্বয়কারী আধ্যাত্মিক সংগঠন’। সব ধর্মের মানুষ এই সংগঠনের সদস্য ও অনুসরণকারী হয়ে থাকেন। এই শান্তিকামী সংগঠনের উপর হামলা চালিয়ে পাঞ্জাবে ফের হিংসা ও বিচ্ছিন্নতাবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার বার্তা দিল জঙ্গিরা। এমনটাই মনে করছে কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার।

[মনের মতো চাকরি না পেয়ে আত্মঘাতী ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ