সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বড়সড় ধাক্কা খেল কেন্দ্র। গবাদি পশু নির্দেশিকার উপর স্থগিতাদেশ দিল মাদ্রাজ হাই কোর্ট। মঙ্গলবার হাই কোর্টের মাদুরাই বেঞ্চ একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে এই রায় দেয়। আদালত জানায়, কে কী খাবে, প্রত্যেকেরই বাছাইয়ের অধিকার আছে। কেন্দ্রের নির্দেশিকায় সেই অধিকার খর্ব হচ্ছে। তাই এই নির্দেশিকা উপর ৪ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেয় মাদ্রাজ হাই কোর্ট। একইসঙ্গে, ৪ সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যদিও এই স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে সওয়াল করে কেন্দ্রের আইনজীবী। কিন্তু কেন্দ্রের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। গবাদি নির্দেশিকা নিয়ে আদালতে মুখ পুড়ল কেন্দ্রের।
[গবাদি পশু নির্দেশিকা আমরা মানব না, কেন্দ্রকে কটাক্ষ মমতার]
প্রসঙ্গত, গোহত্যা রুখতে কড়া আইন আনে কেন্দ্র। শুক্রবার সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, পশু হাট বা পশু মেলায় বেআইনিভাবে আর পশুর মাংস বিক্রি করার অনুমতি মিলবে না। ধর্মীয় কারণে বলি দেওয়ার জন্য অথবা মাংস খাওয়ার জন্য গরু, মোষ, ষাঁড়, বলদ, বাছুরের মতো পশুগুলি এই বাজারে বিক্রি করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই পশু হাটে বেআইনি মাংসের বিক্রি বন্ধের নয়া আইন চালু হয়েছে। যাকে সমর্থন জানিয়েছেন সমাজসেবীরা। পিপল ফর অ্যানিম্যালস-এর (পিএফএ) ট্রাস্টি গৌরি মৌলেখি বলেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের এই ভাবনা এবং পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই। বেআইনি বাজারে মাংস বিক্রি বন্ধ হলে পশুদের পুনর্ব্যবহার করা যাবে। তাদের থেকে দুধের মতো পুষ্টিকর খাদ্য মিলবে। চাষের ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যাবে। তাতে সকলেই লাভবান হবেন।”
[গোরক্ষকদের মার খেয়ে ‘জয় শ্রী রাম’ বলছেন মুসলিম ব্যবসায়ীরা]
অন্যদিকে, সোমবার কেন্দ্রের গবাদি পশু নির্দেশিকার তীব্র বিরোধিতা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক ও অনৈতিক বলে আইনি পথে এর মোকাবিলা করার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বলেন, ‘কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করছে। এই সিদ্ধান্ত মানব না। এই একতরফা সিদ্ধান্ত রাজ্যের ক্ষমতা খর্ব করছে। এর বিরুদ্ধে আইনি পথে মোকাবিলা করব।’ বস্তুত, গোমাংসে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বহুদিন ধরেই সরব মমতা। এদিনও মোদি সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘আমি কী খাব না খাব তা কেন্দ্র ঠিক করবে? গবাদি পশু নির্দেশিকা রাজ্যগুলির উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোনও আলোচনা ছাড়াই সিদ্ধান্ত হয়ে গেল। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’