সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গর্ভপাতের সময় ২৬ বছর বয়সি এক মহিলার মৃত্যুর তদন্ত করছিল পুলিশ। কিন্তু সেই তদন্তের মাঝেই সামনে উঠে এল আরও ভয়ানক তথ্য। রবিবার মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলি জেলার মাহিসাল গ্রাম থেকে ১৯টি কন্যাভ্রূণ উদ্ধার করল পুলিশ। সেগুলিকে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ডঃ বাবাসাহেব খিদরাপুর হাসপাতালে গর্ভপাতের সময় মৃত্যু হয় এক মহিলার। তৃতীয় সন্তানও মেয়ে হওয়ায় স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন স্বামী প্রবীণ জামদাড়ে। ওই মহিলার বাবার বারণ সত্ত্বেও স্ত্রীর গর্ভপাত করান প্রবীণ। দুভার্গ্যজনকভাবে অপারেশনের সময়েই মারা যান ওই মহিলা। এরপরেই প্রশ্ন ওঠে চিকিৎসককে নিয়েও। কারণ ঘটনার পর থেকেই তিনি পালিয়ে যান। জানা যায়, ওই চিকিৎসক হোমিওপ্যাথিতে স্নাতক হয়েও অপারেশন করেছেন। এরপর গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। মামলা দায়ের করা হয় মৃত মহিলার স্বামী প্রবীণ এবং পলাতক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। সেই তদন্ত করতে গিয়েই পুলিশ কন্যাভ্রূণ হত্যার বিশাল চক্রের কথা জানতে পারে।
সাঙ্গলি পুলিশের আধিকারিক দত্তাত্রেয় শিন্দে জানান, ‘আমরা এখনও অবধি ১৯টি মৃত কন্যাভ্রূণ উদ্ধার করেছি। গর্ভপাত করানোর পর এগুলিকে নষ্ট করার জন্যই পুঁতে রাখা হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গর্ভপাতের সময় ওই মহিলার মৃত্যু হয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে গিয়েই এই বিরাট চক্র ফাঁস হয়েছে।’ পাশাপাশি জানান, ‘মৃত মহিলার বাবা পুলিশকে জানিয়েছেন, জোর করেই তাঁর মেয়েকে গর্ভপাত করাতে নিয়ে গিয়েছিল জামাই প্রবীণ জামদারে। তিনি বারণ করলেও শোনেনি সে। ফলে তাঁর মেয়েকে মরতে হয়।’ এরপরেই ওই চিকিৎসক এবং প্রবীণের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।
২০১১ সালে আদমসুমারি অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রে প্রতি ১০০০ জন পুরুষের মধ্যে মহিলার সংখ্যা ৯২৯। ২০০১ সালে প্রতি ১০০০ জন পুরুষের মধ্যে মহিলার সংখ্যা ছিল ৯২২। এদিকে, ২০১১ সালে আদমসুমারি অনুযায়ী গোটা ভারতে প্রতি ১০০০ জন পুরুষের মধ্যে মহিলার সংখ্যা ৯৪০ জন। বিশেষজ্ঞদের মতে, লিঙ্গ বৈষম্যের কারণেই পুরুষদের তুলনায় এই মহিলাদের সংখ্যা এত কম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.