সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা মহামারীর (CoronaVirus) আগে থেকেই ধুঁকছিল ভারতের অর্থনীতি। করোনার মারে একপ্রকার কোমর ভেঙে গিয়েছে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির। মোদি (Narendra Modi) সরকার দু’দফায় ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করলেও, বাস্তবের মাটিতে তার সুফল কতটা মিলবে তা নিয়ে সন্দিহান অর্থনৈতিক মহল। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতির গতি ঘোরাতে বিজেপি সরকারকে তিনটি পরামর্শ দিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং (Manmohan Singh)। যার মূলে রয়েছে খোলাবাজারে আরও বেশি বেশি নগদের জোগান।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মূলত নিজের দলের লাইনেই কথা বলেছেন। তাঁর মতে, এই মুহূর্তে সরকারের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সাধারণ মানুষের হাতে অর্থ তুলে দেওয়া। তাঁর তিন পরামর্শের প্রথমটিও সেকথাই বলছে।
মনমোহনের তিন পরামর্শ,
এক, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে সরাসরি প্রচুর পরিমাণ নগদ দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে।
দুই, বাজারে মূলধন বাড়ানোর সুনিশ্চিত ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। ব্যবসায়ীদের অর্থের জোগান বাড়াতে হবে। এবং সেটা সরকারি ক্রেডিট গ্যারান্টির মাধ্যমে।
তিন, সমস্ত অর্থনৈতিক ক্ষেত্রকেই প্রাতিষ্ঠানিক স্বায়ত্বশাসন দিতে হবে। অর্থাৎ কোনও সংস্থার নিজস্ব কোনও পদক্ষেপে সরকার কোনও হস্তক্ষেপ করবে না।
কিন্তু প্রশ্ন হল, এই পদক্ষেপগুলির জন্য প্রয়োজন প্রচুর অর্থ। মহামারীর আবহে সরকারি কোষাগারেই বা অত টাকা কই? সেক্ষেত্রে কি সরকার টাকা ছাপানোর পথে হাঁটতে পারে। মনমোহন বলছেন, সেটি না করাই ভাল। তবে যদি নিতান্তই অন্য কোনও বিকল্প না থাকে, শেষ বিকল্প হিসেবে টাকা ছাপার কথা ভাবা যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে দাঁড় করানোর জন্য মূলত রিজার্ভ ব্যাংকের (RBI) উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে সরকারকে। অর্থমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী সে অর্থে বিশেষ কোনও কার্যকরী নীতিই গ্রহণ করতে পারেননি। কেন্দ্র যে তথাকথিত প্যাকেজের কথা বলছে, সেটি মুলত ঋণ সর্বস্ব। যার সুবিধা সরাসরি সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না। আর সাধারণ মানুষ সরাসরি সুবিধা না পেলে আর যাই হোক অর্থনীতির দৈন্যদশা যে ঘুচবে না। এখন সরকার যদি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ বিবেচনা করে দেখে, তবেই অর্থনীতির মঙ্গল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.