সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গো-রক্ষা করতে গিয়ে কি সেমসাইড গোল করে ফেললেন স্বঘোষিত রক্ষকরা? মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ঘটনায় এবার সেই প্রশ্ন উঠে গেল। স্কুটারে গো-মাংস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই সন্দেহে সেলিম ইসমাইল নামে এক ব্যক্তিকে বেধড়ক পেটানো হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি যে তাদের দলের লোক, তা বোধহয় বুঝতে পারেননি স্বঘোষিত গো-রক্ষকরা। আপাতত মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ইসমাইল। আক্রান্ত ব্যক্তি জানান, তিনি বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের নেতা। বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করলেও, উন্মত্তরা তা শুনতেই চায়নি।
গরু বাঁচানোর নামে দেশের নানা প্রান্তে তাণ্ডব চালাচ্ছেন স্বঘোষিত গো-রক্ষকরা। সেই নৃশংসতার সর্বশেষ সংযোজন নাগপুরের ঘটনা। এখানে গো-মাংস নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তি গণপিটুনির শিকার হন। আক্রান্তের নামে সেলিম ইসমাইল শাহ। বাড়ি নাগপুরের কাতল এলাকায়। সংখ্যালঘু হওয়ায় ওই ব্যক্তিকে সহজে টার্গেট করেছিলেন কিছু গো-রক্ষক। ইসমাইল বোঝাতে থাকেন তাঁর ব্যাগে গো-মাংস নয়, ছাগলের মাংস রয়েছে। নিজের পরিচয় দেওয়ার পরও উত্তম-মধ্যম চলতে থাকে। হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি চিকিৎসাধীন। সেখানে ইসমাইল জানান, তিনি কাতল তালুকে বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের সম্পাদক। ওই এলাকায় পরিচিত মুখ। বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে কার্যত দলের লোকেদের হাতে মার খাওয়ায় তাঁর আক্ষেপ যাচ্ছে না। এঘটনায় পুলিশ ৪ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। ইসমাইলের স্ত্রীর বক্তব্য, তাঁর স্বামী তুলোর ব্যবসা করেন। স্থানীয় একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে তিনি মাংস আনার সময় তিনি নিগ্রহের শিকার হন। নাগপুরের ঘটনায় দলের অতি উৎসাহীদের এই কার্যকলাপ বিজেপি নেতৃত্বকে বিড়ম্বনায় ফেলেছে।
দেশ জুড়ে সমালোচনার জেরে স্বঘোষিত গো-রক্ষকদের কঠোর বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জানিয়েছিলেন, গো-রক্ষার নামে মানুষ হত্যা বরদাস্ত করা হবে না। হাটে-বাজারে গবাদি পশু বিক্রি বন্ধে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় নির্দেশের উপর তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তারপরও দেশের নানা প্রান্তে গো-রক্ষকদের দৌরাত্ম্য থামেনি। তবে এবার নিজেদের জালে বল জড়িয়ে নাগপুরের গো-রক্ষকরা দলের মুখ ভালমতো পুড়িয়েছেন বলেই মত অনেকের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.