Advertisement
Advertisement

ফের বিজেপির বিরোধিতা, মানবাধিকার নিয়ে বড় মঞ্চে নাসিরুদ্দিন

নতুন বছরে দেশের পরিবেশ পালটানোর আবেদন অভিনেতার।

Naseeruddin slams BJP again
Published by: Utsab Roy Chowdhury
  • Posted:January 5, 2019 1:09 pm
  • Updated:January 5, 2019 3:12 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মানবাধিকার সংগঠনের মঞ্চ থেকে ফের সরকারের সমালোচনায় নাসিরুদ্দিন শাহ। শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ভারত সরকারের কাছে অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে হিংসা থামানোর আবেদন রাখেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। তাঁর দাবি, ধর্মের নামে সবার মুখ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। হিংসা, হানাহানি, ঘৃণার আবহ তৈরি করা হচ্ছে। নিরীহদের হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় সংবিধান সব ধর্মকে নিয়ে বাঁচার কথাই বলে এসেছে চিরকাল। নতুন বছরে দেশের পরিবেশ পালটানোর আবেদন করলেন নাসিরুদ্দিন।

কয়েকদিন আগে বিভিন্ন ইস্যুতে নিজের মতামত রাখেন নাসিরুদ্দিন। তা নিয়ে দেশ জুড়ে শুরু হয় শোরগোল। একটি সাক্ষাৎকারে নাসিরুদ্দিন জানান দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তাঁর ভয় হচ্ছে। ছেলেমেয়েদের ধর্ম নিয়ে কোনও শিক্ষা দেননি। কিন্তু যেভাবে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি হচ্ছে, তার নিন্দা করেন নাসিরুদ্দিন। বুলন্দশহরের ঘটনা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সঙ্গে জানান, এখন দেশের কোনও বিষয় নিয়ে কথা বলা মানেই দেশদ্রোহীর তকমা পাওয়া। এবার অ্যামনেস্টির মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। মানবাধিকার সংগঠনের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে নাসিরুদ্দিনের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। এই ভিডিওতে অভিনেতা বলেন, “১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর ভারতীয় সংবিধান আনা হয়েছিল। তখন থেকে সংবিধানের প্রধান লক্ষ্য ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকভাবে বিভেদ থাকা সত্ত্বেও এখানে সবার গুরুত্ব সমান। মানুষ নিজের ভাবনা, অভিব্যক্তি, বিশ্বাস স্বাধীনভাবে পালন করতে পারে। সব ধর্ম ও শ্রেণির মানুষ সমান চোখে দেখা হয়। প্রত্যেকের জীবনবোধকে সম্মান জানানো হয়। কিছু মানুষ দেশকে রক্ষা করছেন। অনেকে আবার অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল। অনেকে অধিকারের জন্য লড়াই করেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন কেউ কেউ। সংবিধানে এদের সবার জন্য জায়গা আছে।” দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে যে তিনি একেবারেই খুশি নন, আরও একবার জানিয়ে দিলেন নাসিরুদ্দিন। আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে বলেন, “এখন সবার মুখ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। শিল্পী, অভিনেতা, স্কলার, কবি সবাইকে থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সাংবাদিকরাও নীরব । ধর্মের নামে দেওয়াল তৈরি করা হচ্ছে। ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। নিরীহদের হত্যালীলা চলছে। দেশে মারাত্মকভাবে হিংসা ও ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে, তাদের অফিসে তল্লাশি চলছে। লাইসেন্স ক্যানসেল করে দেওয়া হচ্ছে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। যে কোনও ভাবে দমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। একটা উদ্দেশ্য, যাতে সত্যি কথা কখনও সামনে না আসে। সংবিধানে কি এসবকে কখনও সমর্থন করা হয়েছে? ভিন্নমত পোষণ করার স্বপ্নও দেখা যাতে বন্ধ হয়ে যায়। এখন ধনী ও শক্তিশালীর কথা শোনা হয়, আর গরীব ও অনগ্রসরদের দমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। একসময় এদেশে আইন ছিল। এখন সবই অন্ধকার।”

Advertisement

[নিজের দেশকে অসম্মান করছেন নাসিরুদ্দিন, ‘অসহিষ্ণুতা’র অভিযোগে ক্ষুব্ধ রামদেব]

অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার টুইটার ভিডিওতে নাসিরুদ্দিনের এই ভিডিও পোস্ট করার পরই ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে। এর আগে নাসিরুদ্দিনকে আক্রমণ করেছেন কিছু বিজেপি নেতা। এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুলে  ভোটের আগে আরও অস্বস্থি বাড়ালেন তিনি। অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার টুইটে লেখা, “এবার এদেশে স্বাধীনতার পর প্রথমবার মানবতার স্বার্থে লড়াই ও মতপ্রকাশের অধিকারে হস্তক্ষেপ হচ্ছে। সাংবিধানিক স্বার্থে নতুন বছরে এবার ঘুরে দাঁড়াতে হবে। ভারত সরকারের আবেদন, এবার এসব থামানোর সময় এসেছে।”

কয়েকমাস আগে অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার বেঙ্গালুরু অফিসে তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি। টুইট করে জানানো হয়, ১০ ঘণ্টা ধরে অফিসারদের সহযোগিতা করেছে তাঁদের কর্মীরা। কিন্তু তাঁদের সংগঠন আইন অনুযায়ী চলে। এই ঘটনার পরই টুইটারে ভারত সরকারকে উদ্দেশ্য করে টুইট করে এই মানবাধিকার সংগঠন। লেখা হয়, ভারত সরকার ভয় দেখিয়ে মানবাধিকারের বিরোধিতা করছে। আমাদের কাজ আপাতত বন্ধ আছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলুন, মানবাধিকার ফিরিয়ে আনতে। এবার অ্যামনেস্টির মতো মানবাধিকার সংগঠনের মঞ্চে নিজের মতামত রাখলেন নাসিরুদ্দিন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement