Advertisement
Advertisement
TMC

‘কলকাতায় হিংসা হয়’, খোঁচা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সভাপতির, পালটা তোপ তৃণমূলের

উত্তরপ্রদেশে হিংসার ঘটনা নিয়ে কথা নয় কেন, পালটা তৃণমূলের।

NHRC President takes hit at TMC delegation over violence in Bengal | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:April 29, 2022 8:58 pm
  • Updated:April 29, 2022 8:58 pm

নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: পশ্চিমবঙ্গে হিংসার প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC)সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অরুণ মিশ্র। পালটা তৃণমূলও মানবাধিকার কমিশনের মত নিরপেক্ষ সংস্থার সর্বোচ্চ পীঠাসিনের মুখে এই ধরণের পক্ষপাতদুষ্ট কথা মানায় না বলে সমালোচনায় মুখর হয়েছে।

[আরও পড়ুন: তিন মাস ধরে দাউদাউ জ্বলেছিল নালন্দার পাঠাগার, কেন এই মহাবিহার ধ্বংস করেছিলেন খিলজি]

জানা গিয়েছে, দু-পক্ষের বাক-বিতণ্ডায় পারদ এতটাই চড়ে যায় যে মেজাজ হারিয়ে মিশ্র রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ফোন অব্দিও করে ফেলেন। ঘটনার সূত্রপাত, শুক্রবার দুপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) তথ্য অনুসন্ধান কমিটির তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রয়াগরাজের খেবরাজপুর গ্রামের গণহত্যার ঘটনা নিয়ে দিল্লিতে মিশ্রর সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানেই তৃণমূল প্রতিনিধিদেলর সদস্য দোলা সেন নিজের পরিচয়ে বাংলার কথা বলতেই, “ও কলকাতা, ওখানে তো হিংসা হয়”, বলে মন্তব্য করেন মিশ্র। তাতে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করেন দোলা। তিনি বলেন, “কিছু মনে করবেন না, এমন কথা আপনার মুখে মানায় না এবং আজেকর বিষয়ও সেটা নয়।” শুধু তাই নয়, মিশ্রর কাছ থেকে এই ধরণের মন্তব্য তাঁরা একেবারই আশা করেননি এবং এই ধরণের মন্তব্যকে তারা পক্ষপাতদুষ্ট বলেই মনে করছেন সেকথাও মিশ্রের মুখের উপরেই বলেও দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার ডাকাবুকো সাংসদ দোলা।

Advertisement

এই প্রসঙ্গে দোলা সেনের বক্তব্য, “নিরপেক্ষ মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে ঊনি (মিশ্র) বলেছেন, কলকাতায় তো হিংসা হয়। এটা খুব নিরপেক্ষ মন্তব্য বলে আমাদের মনে হয়নি। এবং এটা আউট অফ কনটেক্সট, কোনেও প্রভোকেশন ছাড়াই আলোচনার শুরুতেই শুধু পরিচয় নেওয়ার সময়ে, সবে আমার নাম , আমার কোথায় জন্ম এটা শুরু হয়েছিল, ঊনিই জিগ্গাসা করছিলেন। একজন সিনিয়র মানুষ এভাবে মন্তব্য করেছেন এটা আমাদের ভাল লাগেনি।” এদিন মিশ্র যেভাবে মন্তব্য করেছেন তা নজিরবিহীন ঘটনা বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। মূল বিষয় থেকে সরে গিয়ে, উত্তরপ্রদেশের ঘটনা নিয়ে আলোচনার শুরুতে বাংলা নিয়ে কটাক্ষ করার পিছনে কী কারণ তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আসল বিষয়টি থেকে নজর ঘোরাতেই ইচ্ছাকৃতভাবেই কি এমনটা করা হয়েছে এমন জল্পনাও শোনা গিয়েছে।

Advertisement

সূত্রের খবর, এদিন দোলা শান্ত সুরে কড়া প্রতিবাদ জানালেও প্রতিনিধিদলের আরেক সদস্য তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলে রীতিমত আক্রমণাত্মকভাবেই মিশ্র-কে দু-চার কথা শুনিয়ে দেন। তিনি বলেন, “মিশ্র অকারণেই বাংলা নিয়ে কথা বলছেন অথচ ত্রিপুরা থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশের মত বিজেপি শাসিত রাজ্যের হিংসা নিয়ে মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কোনও সময়েই পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।” গোখলের মন্তব্যে বেজায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মিশ্র। সাকেতের বিষয়ে খবর নেওয়ার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ফোন করার জন্যও তৎক্ষণাৎ নিজের সচিকে নির্দেশও দিয়েছিলেন মিশ্র। পরে সাকেত মহরাষ্ট্রের বাসিন্দা একথা জানতে পেরে সচিবকে ফোন কেটে দিতে বলেন এবং পরে তিনি এবিষয়ে কথা বলে নেবেন বলেও জানান। শুধু হিংসা নিয়েই খোঁচা নয় , তৃণমূলের পক্ষ থেকে মানবাধিকার কমিশনের উপর অভিযোগের আঙুলে তুলে সমালোচনা করা হচ্ছে বলেও প্রতিনিধিদলের সদস্যদের কাছে অভিযোগ করেছেন মিশ্র। এপ্রসঙ্গে খবরের কাগজের কাটিং অব্দি দোলাদের সামনে তুলে ধরেছেন মিশ্র। সূত্রের খবর, সেই কাগজে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্য চিহ্ণিত করা ছিল। তবে, মিশ্রর অভিযোগকে তিনি যে পাত্তা দিতে নারাজ তা এদিনও জানিয়ে দিয়েছেন কুণাল। তাঁর পালটা তোপ, “জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বিজেপির শাখা সংগঠনের পরিণত হয়েছে।”

এদিন, তৃণমূলের পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে খেবরাজপুরের নিহত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সময়েই তাঁদের বক্তব্য সম্বলিত ভিডিওর পেনড্রাইভ ও স্মারকলিপি কমিশনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা যে অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় রয়েছে এবং পুলিশ যে তাদের ধর্ষণের অভিযোগকে এফআইআরে উল্লেখ করেনি বা দু-বছরের বাচ্ছার মৃত্যুর পরেও পকসো আইনের কথাও উল্লেখ করেনি, সেই বিষয়গুলিকে স্মারকলিপিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে কমিশনের সদস্যরা যাতে খেবরাজপুরে গিয়ে সরজমিনে সবকিছু খতিয়ে দেখে সেই দাবিও জানানো হয়েছে।

[আরও পড়ুন: উত্তর-পূর্ব থেকে বিতর্কিত আফস্পা আইন প্রত্যাহারের আশ্বাস প্রধানমন্ত্রী মোদির]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ