সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঝাড়খণ্ডের নবনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে যে বিজেপি বিরোধী ঐক্যের ছবিটা দেখা যাবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। আর প্রত্যাশামতোই বিরোধী রাজনৈতিক দলের একগুচ্ছ নেতানেত্রী হাজির রইলেন রাঁচির মোরাবাদি ময়দানে। রবিবার হেমন্ত সোরেনের শপথ অনুষ্ঠানের এই ছবিই ফিরিয়ে দিল গত বছরে কর্ণাটকে মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর শপথমঞ্চের স্মৃতি। সেবারও বিজেপি বিরোধী জোটের উপস্থিতিতে মধ্যমণি হয়ে ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দুপুর ঠিক ২ টো নাগাদ ঝাড়খণ্ডে ১১তম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হেমন্ত সোরেনের শপথ নেওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল। সেইমতো সেজেও ওঠে মোরাবাদি গ্রাউন্ড। আসতে শুরু করেন অতিথিরা। সময়ের বেশ খানিকটা আগেই বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে যান হেমন্ত সোরেন নিজে। তারপরই মঞ্চে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। হেমন্ত নিজে তাঁকে অভিবাদন জানিয়ে, সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর একে একে উপস্থিত হন সিপিআই সাংসদ ডি রাজা, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। দেখা যায় ডিএমকে’র স্ট্যালিন-কানিমোজি, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে।
[আরও পড়ুন: CAA’র প্রতিবাদ করে গ্রেপ্তার বাবা-মা, ঠাকুমার কোলেই দিন কাটছে ১৪ মাসের শিশুর]
শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও। ফলে তাঁর হাজির থাকার সম্ভাবনা বাড়ছিল। তাঁর জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে অনুষ্ঠান কিছুটা পিছিয়েও দেওয়া হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত প্রণব মুখোপাধ্যায়কে মঞ্চে পাওয়া যায়নি। তিনি টুইটারে হেমন্ত সোরেনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
Congratulations & blessings to @HemantSorenJMM on being sworn in as the CM of #Jharkhand.Unable to attend the ceremony due to indifferent health,I extend my good wishes to you for a successful new term. May you uphold the faith shown by the people in you & the alliance you led.
— Pranab Mukherjee (@CitiznMukherjee) December 29, 2019
তবে শেষমুহূর্তে মোরাবাদি গ্রাউন্ডে গিয়ে পৌঁছন রাহুল গান্ধী, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। আর যাঁদের উপস্থিতি নিয়ে সংশয় ছিল, সেই প্রিয়াংকা গান্ধী ও মায়াবতী গরহাজিরই ছিলেন। উপস্থিত হননি এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার এবং এসপি নেতা অখিলেশ যাদবও।
[আরও পড়ুন: হেমন্ত সোরেনের শপথগ্রহণের আগেই মাওবাদীদের বিস্ফোরণে উড়ল কমিউনিটি সেন্টার]
দুপুর ২ টো ২০ নাগাদ রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মু শপথ পড়াতে ওঠেন রাজ্যের একাদশ মুখ্যমন্ত্রীকে, যিনি আবার দেশের কনিষ্ঠতমও। তবে তা ছাপিয়েও মোরাবাদি গ্রাউন্ডে নজর কাড়ল এত নেতানেত্রীর সমাবেশ। বহুদিন পর রাঁচির ময়দান কার্যত হয়ে ওঠে অবিজেপি বিরোধী ঐক্যের মঞ্চ। এক ফ্রেমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গান্ধী, সীতারাম ইয়েচুরি, স্টালিনদের দেখে অনেকেরই মনে আশা, ফের জাতীয় স্তরে জোটবদ্ধ হচ্ছেন বিরোধীরা। CAA ও NRC’র প্রতিবাদ আরও জোরদার হওয়ার বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এতে। আগেই বাংলার পথে হেঁটে তামিলনাডু, কেরল নাগরকিত্ব সংশোধনী আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরোধিতা জানিয়েছে। এবার সেই আন্দোলনে তাঁরা পাশে পেতে চাইছেন আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়খণ্ডকেও। আর তাতে মূল ভূমিকা রয়েছে অবশ্যই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।