Advertisement
Advertisement
এয়ার ইন্ডিয়া

জঘন্য পরিষেবা, ৩২৯ জন যাত্রীকে ৪৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করাল এয়ার ইন্ডিয়া

বিমান সংস্থার ভূমিকায় তীব্র ক্ষুব্ধ যাত্রীরা।

Pathetic Air India, Fliers stranded in London for 2 days
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:May 30, 2019 8:13 pm
  • Updated:May 30, 2019 8:13 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিমান যাত্রা নাকি সুখের যাত্রা। অল্প সময়েই গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া যায়। কিন্তু মানুষের সে ধারণা সম্পূর্ণ বদলে দিল এয়ার ইন্ডিয়া। টানা ৪৮ ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপর লন্ডন থেকে মুম্বই যাওয়ার বিমানে বসতে পারলেন ৩২৯ জন যাত্রী। এয়ার ইন্ডিয়ার বদান্যতায় দুদিন পরে গন্তব্যে পৌঁছতে চলেছেন তাঁরা। বিমান সংস্থার কারণে চূড়ান্ত দুর্ভোগ যাত্রীদের। এমন বিশ্রী পরিষেবায় তীব্র ক্ষুব্ধ প্রত্যেকেই।

গত ২৮ মে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে লন্ডন থেকে মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটির। কিন্তু ফুয়েল লিক করার কারণে বিমানটি বাতিল করে দেওয়া হয়। যাত্রীদের জানানো হয়, সেদিন আর মুম্বই উড়ে যাওয়ার কোনও উপায় নেই। পরের দিনের বিমানে যেতে হবে তাঁদের। সেই মতো যাত্রীদের জন্য হোটেলের ব্যবস্থা করে দেয় বেসরকারি বিমান সংস্থাটি। পরের দিন অন্য একটি বিমানে মুম্বই থেকে লন্ডনে উড়িয়ে আনা হয় ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল এবং বিকল্প সরঞ্জাম। কিন্তু তারাও বিমানের কলকবজা ঠিক করে তা ওড়ার সহযোগী করে তুলতে পারেনি। ফলে অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হয়। পরের দিনও গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি যাত্রীরা। যদিও এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, যেভাবেই হোক ২৯ তারিখই যাত্রীদের জন্য বিমানের ব্যবস্থা করা হবে। এমনকী যাত্রীদের বিমানবন্দরে ডেকে এনে বোর্ডিংয়ের আগে অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্ত নিয়মাবলীও পালন করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপরই শোনা যায় অন্য কথা। যাত্রীদের ফের জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রযুক্তিগত ত্রুটির জন্য বুধবারও বিমান উড়বে না। ফলে আরও একরাত হোটেলেই কাটাতে হবে তাঁদের।

Advertisement

[আরও পড়ুন: স্বামীকে খুন করে কাটা মুন্ডু হাতে থানায় মহিলা, এলাকায় আতঙ্ক]

জানা যায়, মুম্বই থেকে যে সরঞ্জাম আনা হয়েছিল, তা বিমানের ত্রুটি মেরামত করতে পারেনি। ফলে আবার ব্রিটেন থেকে সেসব আনাতে হয়। আর সেই কারণেই বুধবারও বাতিল হয়ে যায় যাত্রা। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। এয়ার ইন্ডিয়ার এমন অব্যবস্থা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারেননি তাঁরা। বিমান সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়ান যাত্রীরা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে শেষমেশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। যাত্রীদের শান্ত করে শেষমেশ হোটেলে ফিরে যেতে রাজি করানো হয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার ‘নির্ধারিত সময়ে’ লন্ডনের মাটি ছাড়ে বোয়িং ৭৭৭-৩০০-র এআই-১৩০। এদিন ভোররাত ৩ টেয় মুম্বই পৌঁছানোর কথা বিমানটির।

Advertisement

passengers

স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে লন্ডন থেকে মুম্বই ফিরছিলেন আদিত্য দাশগুপ্ত। এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “২৮ তারিখ বিমানে ওঠার কথা ছিল। সন্ধে ৭টা পর্যন্ত ঠায় বন্দরে বসে থাকার পর জানানো হয় এদিন আর যাওয়া হচ্ছে না। হোটেলে এই সংস্থার যে মহিলা কর্মী ছিলেন, তিনিও ঠিকমতো সমস্ত আপডেট দিতে পারছিলেন না। পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থাও ছিল না সেখানে। ফলে যাত্রীদের ক্ষোভ আরও বাড়ছিল। বুধবার বলা হয় রাত ১০টায় বিমান ছাড়বে। সেই মতো ৬টায় হোটেল থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছাই আমরা। প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষার পর জানতে পারলাম এদিনের বিমানও বাতিল। রাত ১২টার পর আবার বাসে চেপে হোটেলে ফিরে গেলাম। এমনকী চেক-ইন হয়ে যাওয়ায় আমাদের ব্যাগপত্রও ফেরত দেওয়া হয়নি।”

[আরও পড়ুন: একলা জীবনে ইতি, চলে গেল ভারতের একমাত্র ওরাংওটাং বিন্নি]

অভিযোগ, এমন পরিস্থিতিতেও যাত্রীদের সঙ্গে রীতিমতো হুমকির ভাষায় কথা বলা হয়। বন্দি কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে সেই সময় যোগাযোগ রাখছিলেন ইন্সটালোকেট-এর সিইও অঙ্কুর জৈন। তাঁর দাবি, এয়ার ইন্ডিয়ার এমন জঘন্য পরিষেবার কারণে অনেকে বিয়ে বাড়ি, আত্মীয়র শেষকৃত্যে পৌঁছতে পারেননি। অপারেশনের দিনও পিছিয়ে দিতে হয়েছে অনেককে। তাই সংস্থার উচিত ছিল যাত্রীদের সঙ্গে নম্র-ভদ্র আচরণ করা। কিন্তু তা না করে পুলিশের ভয় দেখানো হয়। কোনও আর্থিক ক্ষতিপূরণ তো দেওয়া হয়েইনি, বিকল্প বিমানের ব্যবস্থাও করা হয়নি। গোটা ঘটনায় এতটাই ক্ষুব্ধ ও ক্লান্ত যাত্রীরা, যে তাঁরা আর কখনও এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে অন্তত যাতায়াতের সিদ্ধান্ত নেবেন না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ