Advertisement
Advertisement

Breaking News

শরীরে মাইক্রোচিপ ঢুকিয়ে থাকতে পারে পাকিস্তান, স্বাস্থ্যপরীক্ষা অভিনন্দনের

পাকিস্তান ইঞ্জেকশন দিয়েছে কি না জানতে হবে হরমোন টেস্টও।

Pilot Abhinandan to go under scanner
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:March 2, 2019 4:27 pm
  • Updated:March 2, 2019 4:41 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাবণ বধের পর সীতা উদ্ধার হলেও সতীত্ব প্রমাণ করতে তাঁকেও দিতে হয়েছিল অগ্নিপরীক্ষা। সেই একই পরম্পরা চলে আসছে। তাই আজ ও আগামী কয়েকদিন ধরে লাগাতার অগ্নিপরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট অভিন্দন বর্তমানকে। দিতে হবে তাঁর দেশপ্রেমের প্রমাণ। এটাই নিয়ম। শুধুই তাঁর বয়ানে বিশ্বাস রাখতে পারছেন না সেনা কর্তারা। তাই দেশে ফিরেও বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তানের কাছে ফিরতে পারেননি তিনি। ফিরতে পারবেন না আগামী আরও কয়েকদিন। এদিকে আজই হাসপাতালে অভিনন্দনের সঙ্গে দেখা করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। সেনাবাহিনীর প্রটোকল যাই হোক বীর এই পাইলটকে শনিবার অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিজ্ঞান কংগ্রেসের এক অনুষ্ঠানে জানান, ‘অভিনন্দন’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ আজ থেকে বদলে গিয়েছে। 

[বিষ খাইয়ে ভারতীয় জওয়ানদের হত্যার ষড়যন্ত্র আইএসআই-এর!]

Advertisement

৫৮ ঘণ্টা পর পড়শি দেশ থেকে মাতৃভূমিতে পা রাখতে না রাখতেই তাঁকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীতে। সেখানে যে তাঁর জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে ম্যারাথন পরীক্ষা। শারীরিক, মানসিক পরীক্ষার পাশাপাশি খতিয়ে দেখা হবে দেশের সুরক্ষা বিষয়ক কোনও তথ্য শত্রুদেশের সেনাবাহিনীর কাছে তিনি ফাঁস করেছেন কিনা। পাক প্রশাসন ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে তাঁর রক্তে কোনও রাসায়নিক পদার্থ প্রবেশ করিয়েছে কিনা পরীক্ষা করে দেখা হবে তাও। তাই ওয়াঘা সীমান্ত থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বায়ুসেনার গোয়েন্দাদের কাছে। শুক্রবার রাতেই তাঁর একদফা ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিক সেই স্বাস্থ্য পরীক্ষায় খতিয়ে দেখা হয়েছে পাক সেনারা তাঁর উপর কোনও রকম অত্যাচার চালিয়েছে কিনা। এদিন সকাল এগারোটায় ফের শুরু হয় তাঁর ম্যারাথন স্বাস্থ্য পরীক্ষা। দিল্লির আর আর হাসপাতালে তাঁর শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা হয় বলে সেনাবাহিনী তরফে জানানো হয়েছে। শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি তিনি মানসিকভাবে সুস্থ কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে। নিয়ে যাওয়া হবে মনোবিদের কাছে শত্রুদেশের গোপন তথ্য পেতে অনেক সময়ই যুদ্ধবন্দিদের দেহে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ‘মাইক্রোচিপ’। মুক্ত করার আগে পাকিস্তান এমন কোনও ‘চিপ’ অভিনন্দনের শরীরে বসিয়ে দিয়েছে কিনা তা জানতে তাঁর ‘বডিস্ক্যান’ করে দেখা হবে। পাকিস্তানের সেনার হাতে বন্দি থাকাকালীন, তাঁর উপর কোনওরকম অত্যাচার করা হয়েছে কি না, বা সেখানে তাঁর কী কী অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেই সব তথ্যই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানার চেষ্টা করা হবে।

Advertisement

শত্রুদেশের সেনাবাহিনীর প্রশ্নের মুখে অভিনন্দনের নির্ভীক উত্তরের ভিডিও দেখে দেশবাসী দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হলেও নিয়ম মেনে তাঁকে যেতে হবে ‘ডিব্রিফিং’ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই। অর্থাৎ, বন্দিদশায় পড়শি দেশের সেনাবাহিনী তাঁকে কোনও আপস প্রস্তাব দিয়েছিল কি না কিংবা তাঁকে ব্যবহার করে কোনও চক্রান্ত করেছিল কি না, তা নিশ্চিত হতে গোয়েন্দাদের তদন্ত প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এর জন্য যে ৫৮ ঘণ্টা সময় এই ভারতীয় পাইলট পাকিস্তানে কাটিয়েছেন, তার প্রতি মুহূর্তের বর্ণনা গোয়েন্দাদের কাছে তাঁকে দিতে হবে। বন্দিদশায় পাক সেনা অফিসাররা তাঁর কাছে কী কী জানতে চেয়েছেন, বলতে হবে তা-ও। বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত অভিনন্দন পাকিস্তানের মাটিতে যা যা করেছেন তার বিবরণ নিয়ে গোটা ঘটনা পুনর্নির্মাণ করবেন গোয়েন্দারা।

যে মিগ বিমানে তিনি ছিলেন, তাকে নিশানা করতে পাক সেনা কী অস্ত্র ব্যবহার করেছিল, তা জানারও চেষ্টা করা হবে। অভিনন্দন পাক সেনার হেফাজতে থাকাকালীন কী কী জরুরি নথি নষ্ট করতে সক্ষম হয়েছিলেন আর কী কী পারেননি, তারও তালিকা তৈরি করা হবে। সেনাবাহিনীর রিপোর্ট সন্তোষজনক না হলে অভিনন্দনকে বিশদ জেরা করতে নিয়ম ভেঙেই ডাকা হতে পারে ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) এবং রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র)-এর আধিকারিকদের। যদিও সচরাচর আইবি এবং র’এর হাতে বায়ুসেনার পাইলটদের তদন্তভার ন্যস্ত করা হয় না। কিন্তু গোয়েন্দাদের জেরা এবং ডাক্তারি ‘অগ্নিপরীক্ষায়’ নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ‘ফিট’ প্রমাণ করতে না পারলে যুদ্ধবিমানে আর সওয়ার হতে পারবেন না অভিনন্দন। পাঠানো হবে ‘ডেস্ক’-এর কাজে। অসম্মান বা বৈষম্যমূলক আচরণ করা না হলেও কমর্জীবনের ‘নির্বাসন’ই মেনে নিতে হবে তাঁকে।

শুক্রবার বিকেল চারটের সময় ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে অভিনন্দনকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও তা রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। দীর্ঘ বিলম্বের কারণ হিসাবে জানা যায়, প্রত্যার্পণের আগে তাঁকে দিয়ে একটি ভিডিও শুট করানো হয়। যার বিবৃতি বিকৃত করে পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে পাকিস্তান। ভিডিও-এ অভিনন্দনকে বলতে শোনা যায়, “পাকিস্তান সেনা পেশাদার সেনা। আমি পাকিস্তানি সেনার সঙ্গে সময় কাটিয়েছি। আমাকে ওষুধপত্র দেওয়া হয়। আমি অভিভূত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ছোট জিনিসকে বাড়িয়ে-চড়িয়ে বলে। ছোট বিষয়ে আগুন লাগিয়ে, লঙ্কা মাখিয়ে ভুল পথে চালিত করে।’’ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে অভিনন্দনের এই বক্তব্য ঘিরেই সমালোচনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ইমরান খান অভিনন্দনকে মুক্তি দিয়ে যে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছিলেন, এই ভিডিও তা নষ্ট করে দিয়েছে। ভিডিওটি ৪০ বার কাট করা হয়েছে। যা থেকে স্পষ্ট হয়েছে, অভিনন্দনের বিবৃতি বিকৃত করেছে পাক সেনা।

[যুদ্ধের আবহে কেন পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়নি চিন?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ