সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্কঃ হতে পারেন ওঁরা শিক্ষক। তবুও সরকারি কর্মচারীও তো বটে। তাই সরকারের জারি করা নির্দেশ অমান্য করেন কী করে? অগত্যা চাকরি বাঁচাতে গণবিবাহের আসরে খাবার পরিবেশন করতে হল মধ্যপ্রদেশের এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের। অনেকেই মুখ বুজে অপমানটা সহ্য করে নিলেও, কেউ কেউ অবশ্য প্রতিবাদ করেছিলেন। তার জেরেই মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান আসার আগে তড়িঘড়ি শিক্ষকদের খাবার পরিবেশনের কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ঘটনায় জেলা শিক্ষা আধিকারিকের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন মধ্যপ্রদেশের স্কুল শিক্ষামন্ত্রী দীপক জোশী।
[আগামী বছর বিদ্যুৎহীন থাকবে না দেশের কোনও গ্রাম, ঘোষণা মোদির]
মধ্যপ্রদেশের সিঙ্গরাওলি জেলায় মুখ্যমন্ত্রী কন্যাদান যোজনা প্রকল্পে এই গণবিবাহের আয়োজন করেছিল রাজ্য সরকারই। জানা যাচ্ছে, এই গণবিবাহের আসরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ২ হাজার ৩৯০ জন দম্পতি। জানা যাচ্ছে, সেখানেই খাবার পরিবেশনের দায়িত্ব দেওয়া হয় মধ্যপ্রদেশ সরকার পরিচালিত প্রাথমিক স্কুলের ৪০০ জন শিক্ষককে। এই মর্মে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে রীতিমতো একটি লিখিত নির্দেশিকাও জারি করেন জেলা শিক্ষা আধিকারিক। শুধু খাবার পরিবেশন করাই নয়, সেই নির্দেশিকায় কোন শিক্ষক কোন পদ পরিবেশন করবেন, তাও নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হয়। অভিযোগ, বৈঠকে ডেকে শিক্ষকদের হাতে সেই নির্দেশিকার কপিও তুলে দেন জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা। কার্যত কিছু বলার সুযোগই পাননি শিক্ষকরা।
[জিপে বাঁধা কাশ্মীরি যুবক, মেজরের পুরস্কারে উঠল পাল্টা প্রশ্ন]
২ হাজার ৩৯০ জন দম্পতি ও তাঁদের আত্মীয়স্বজন, সব মিলিয়ে সরকারি খরচে খাওয়া-দাওয়ার এলাহি আয়োজন। আর খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে মাত্র ৪০০ জন। স্বাভাবিকভাবেই অনেক শিক্ষককেই একবারের জায়গায় দু’বারও পরিবেশন করতে হয়। খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে থাকা থাকা এক শিক্ষক বলেন, ” মনে হচ্ছিল, আমরা যেন রেস্তরাঁর কর্মী। এটা অত্যন্ত মর্যাদাহানিকর।” সরকারি কর্মী হিসেবে নিজেদের অসহায়তাও ফুটে ওঠে কারোর কারোর কথায়। একজন শিক্ষক বলেন, “সরকার যদি নির্দেশিকা জারি করে এবং সেখানে যদি নাম উল্লেখ করা থাকে, তাহলে আর কী করা যাবে! নির্দেশ মানা ছাড়া আমাদের কাছে আর কোনও উপায় ছিল না। আমাদের সমস্ত সহকর্মী অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন। এই প্রথমবার আমাদের কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে খাবার পরিবেশন করতে বলা হল।”
[পেমেন্টস ব্যাঙ্ক চালু করল Paytm, মিলবে ক্যাশব্যাক অফার]
মধ্যপ্রদেশের শিক্ষক অধ্যাপক সংঘের সিঙ্গরাওলি জেলা শাখার এক আধিকারিক বলেন, “এই ঘটনার কথা শুনেছি। শিক্ষকদের পক্ষে এটা অত্যন্ত অসম্মানজনক। শিক্ষকদের দিয়ে এই ধরনের কাজ করানোর আগে সরকারি আধিকারিকদের দু’বার ভাবা উচিত। গরমের ছুটির শেষে আমরা বিষয়টি আলোচনা করব।” তবে বহু চেষ্টা করেও সিঙ্গারাওলি জেলা শিক্ষা আধিকারিক রাজকিশোর দুবের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.