সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাভারতের যুগে ইন্টারনেটের অস্তিত্ব প্রমাণ করেছিলেন। তাঁর দৌলতে স্বয়ং বুদ্ধ হেঁটে পৌঁছেছিলেন জাপানে। আর এবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইংরেজদের বিরোধিতায় বর্জন করলেন নোবেল। এ সবই ইতিহাসের অজানা। তবে নয়া ইতিহাস লিখছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তাঁর সৌজন্যে তাই সবই সম্ভব।
[ সেনা জওয়ান ও তাঁদের পরিবারকে বিনামূল্যে পরিষেবা দেন এই চিকিৎসক ]
এই তো কটাদিন হল মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছেন। দীর্ঘ বাম শাসনের অবসানে ত্রিপুরায় পদ্ম ফুটেছে অতি সম্প্রতি। গেরুয়া শিবির তরুণ বিপ্লব দেবের উপরই রাজ্যের দায়িত্ব দিয়েছে। প্রশাসনিক কাজ কী হচ্ছে তার খতিয়ান দেবে ভবিষ্যৎ। তবে তার আগেই গোটা দেশে চর্চিত হয়ে উঠেছেন ত্রিপুরার নয়া মুখ্যমন্ত্রী। সৌজন্যে তাঁর বিস্ফোরক সব উক্তি। যে তালিকায় নয়া সংযোজন রবীন্দ্রনাথের নোবেল বর্জন। ইতিহাস জানে, জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নাইট উপাধি ত্যাগ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ইংরেজদের দেওয়া স্যার তকমা ছেড়েছিলেন ঘৃণাভরে। কিন্তু বিপ্লবের কাজই যেন ইতিহাসের বয়ান বদলে দেওয়া। তিনি তাই তাঁর কলমে লিখছেন ইচ্ছেখুশির ইতিহাস। তাই সেখানে নাইট হয়ে গেল নোবেল। অর্থাৎ ইংরেজদের বিরোধিতায় নোবেল ত্যাগ করলেন রবীন্দ্রনাথ। বলা যায়, এ তত্ত্বই প্রতিষ্ঠা করলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। তাও আবার রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠানেই সামনে আনলেন তাঁর এই তত্ত্বকে। উদয়পুরের এক অনুষ্ঠানে তাঁর বলা এ কথা এখন শোরগোল ফেলেছে গোটা দেশে। পুরাণ থেকে ইতিহাস হয়ে একেবারে রবীন্দ্রনাথ, সবকিছুতেই যেভাবে নিজের ঐতিহাসিক মন্তব্য গুঁজে দিচ্ছেন তরুণ মুখ্যমন্ত্রী, তাতে একদিকে যেমন মশকরার ঢেউ, অন্যদিকে তেমনই ইতিহাস বিকৃতির অশনিসংকেত।
[ ‘আমার মা অন্য অনেকের থেকে খাঁটি ভারতীয়’, বিজেপিকে জবাব রাহুলের ]
এর আগে মহাভারতের সময়ে ইন্টারনেট ছিল বলে দাবি করেছিলেন তিনি। নইলে ধৃতরাষ্ট্রের সামনে সঞ্জয় যুদ্ধের বিবরণ দিলেন কী করে! তাতে সমালোচনার মুখে পড়ে আবার পালটা যুক্তি দেন তিনি। বলেন, দেশের ঐতিহ্যকে যাঁরা অস্বীকার করেন তাঁরা আসলে দেশকে ছোট করেন। এরপর বুদ্ধপূর্ণিমার সময় বিপ্লব দাবি করেন, তথাগত পায়ে হেঁটেই জাপান-চিন প্রভৃতি দেশে গিয়েছিলেন। যদিও ইতিহাস সাক্ষী বুদ্ধ আদৌ ভিনদেশে যাননি। পরবর্তীকালে তাঁর অনুগামীরা এই দেশগুলিতে বৌদ্ধধর্ম ছড়িয়ে দেন। আর এবার স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ পড়লেন বিপ্লবের কোপে। এমনিতেই কবিগুরুর নোবেলটি খোয়া গিয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-এর তদন্তেও সেটির আর খোঁজ মেলেনি। বিপ্লব অবশ্য সে ব্যর্থতা ঢেকে দিলেন সুচারু বিকৃতিতে। ইতিহাসের বয়ান পালটে তিনি জানিয়ে দিলেন, নোবেল খোয়া যাওয়ার প্রসঙ্গই অবান্তর, কারণ সেটি বর্জন করেছিলেন কবিগুরু স্বয়ং। তাহলে কী দাঁড়াল নোবেলের খোয়া যাওয়া আর সিবিআইয়ের ব্যর্থতা? রবীন্দ্রনাথের ভাষাতেই বলা যায়, সে ইতিহাস গোপন থাকাই ভাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.