সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর্থিক অসংগতির জন্য মৃতের শ্রাদ্ধে প্রীতিভোজের আয়োজন করতে পারেনি পরিবার। তার শাস্তি হিসেবে পরিবারকে একঘরে করার সিদ্ধান্ত নিল খাপ পঞ্চায়েত। রাজস্থানের বারমের জেলার ছোট্টান এলাকার ওই ঘটনায় স্তম্ভিত বুদ্ধিজীবী মহল। মূল ঘটনা বেশ কয়েকবছর আগের। আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় পরিবারের এক সদস্যের শ্রাদ্ধতে আত্মীয়স্বজনদের ভূরিভোজ করাতে পারেননি গৃহকর্তা। বছরের পর বছর চলে আসা এই রীতি না মানায় তাঁরা পড়েন খাপ পঞ্চায়েতের রোষের মুখে। আশেপাশের ২১ টি খাপ পঞ্চায়েতের প্রধানরা জড়ো হন, এবং ওই পরিবারকে একঘরে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
[শিশুচোর সন্দেহে গণপিটুনি, ত্রিপুরায় মৃত্যু যুবকের]
কয়েক বছর কেটে গেলেও এখনও গোটা এলাকায় কার্যত অচ্ছুৎ ৩০ সদস্যের পরিবারটি। গোটা পরিবারের সঙ্গে এখনও বাজে ব্যবহার করেন অন্য নাগরিকরা। কোনও সামাজিক অনু্ষ্ঠানে তাদের নিমন্ত্রণ করা হয় না, বাড়িতে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিতও থাকেন না এলাকার নিমন্ত্রিতরা। এমনকী বাড়ির খুদেদের স্কুলে যেতেও বাধা দেয় স্থানীয়রা। পরিবারের এক সদস্য জানাচ্ছেন, আশেপাশের ২১টি গ্রাম তাঁদের বয়কট করেছে, ফলে বয়স পেরিয়ে গেলেও মেয়েদের বিয়ে দিতে পারছেন না। তাঁদের পরিবারের মেয়ে শুনলেই আর বিয়েতে রাজি হচ্ছে না পাত্রপক্ষ। পরিবারের আরেক সদস্য অভিযোগ করছেন, ‘শুধু একঘরে করেই ক্ষান্ত হয়নি খাপ পঞ্চায়েত, ওই পরিবারের কাছে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানাও আদায় করেছে তারা। তিনি বলেন, ‘ওঁরা আমাদের জমি দখল করে নিয়েছে, আমাদের কাছ থেকে ২৫ কুইণ্টাল বাজরা কেড়ে নিয়েছে, ৫ লক্ষ টাকা জরিমানাও নিয়েছে। এখন ওরা আমাদের বাড়িটাও দখল করতে চাইছে। আমরা এর সুবিচার চাই।’
[শিক্ষিকার আচরণে মেজাজ হারালেন মুখ্যমন্ত্রী, গ্রেপ্তারির নির্দেশে বিতর্ক]
৩ বছর ধরে লাগাতার অত্যাচার সহ্য করে অবশেষে গত ১১ মে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে ওই পরিবার। এক মাস হয়ে গেলেও এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি স্থানীয় প্রশাসন। খাপ পঞ্চায়েতের বাড়বাড়ন্ত রুখতে রাজ্যগুলিকে আগেই কড়া নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তা সত্ত্বেও রাজস্থান সরকার কেন খাপ পঞ্চায়েতগুলিকে কড়া হাতে দমন করছে না? প্রশ্ন তুলছে অত্যাচারিত পরিবারের সদস্যরা।