BREAKING NEWS

১৫ চৈত্র  ১৪২৯  বৃহস্পতিবার ৩০ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

৩৮ জনের মৃত্যুর নেপথ্যে রাম রহিমের ‘লাল ব্যাগ’

Published by: Sangbad Pratidin Digital |    Posted: August 31, 2017 3:09 am|    Updated: October 1, 2019 7:05 pm

Ram Rahim plotted filmy escape plan, red bag a signal to supporters

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভক্তবেশী গুন্ডাদের তাণ্ডব। দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়া হিংসায় ৩৮ জনের মৃত্যু। এসবের নেপথ্যে  রয়েছে ভণ্ড রাম রহিমের ‘লাল ব্যাগ’, এমনটাই দাবি হরিয়ানা পুলিশের। সাজা ঘোষণার পর ‘বাবা’র হাতের ব্যাগটি নিয়ে শুরু হয়েছিল জল্পনা। অবশেষে ফাঁস হয়েছে রহস্য। জানলে চমকে উঠবেন, ওই ব্যাগটিকে অনুগামীদের গোপন সংকেত দিতে ব্যবহার করেছিলেন বাবা। হরিয়ানা পুলিশের আইজি কে কে রাও জানিয়েছেন, পাঁচকুলা ও সিরসাতে ভক্তের ছদ্মবেশে দুষ্কৃতীদের তৈরি রেখেছিল ডেরা। আদালতের বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে রাম রহিম ‘লাল ব্যাগ’ নিয়ে বেরোবে। এটাই হবে হিংসা শুরু করার সংকেত। ফলে সাজা ঘোষণার পরেই বাবার হাতে লাল ব্যাগ দেখতে পেয়ে অনুগামীরা তাণ্ডব শুরু করে। উদ্দেশ্য ছিল, ভণ্ড গুরুকে পালাতে সাহায্য করা। তবে পুলিশ ও সেনার তৎপরতায় সে চেষ্টা বিফল হয়ে যায়।

[পাপোশ তৈরির কাজ এড়াতে মাটিতে শুয়ে নাটক ধর্ষক ‘বাবা’র]

ছল-চাতুরিতে রাম রহিমের বিকল্প মেলা ভার! কান্নাকাটি থেকে শরীর খারাপের ভান, কোনও কিছুতেই কাজ না হওয়ায় মনমরা ধর্ষক জেলে এখন ‘বিষণ্ন’ বাবাজি। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর পালানোর সবরকম চেষ্টা হয়েছিল। সে জন্য পুলিশের একাংশকেই কাজে লাগিয়েছিল রাম রহিম। তাই বাধ্য হয়েই তাকে চপার করে জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার পাঁচ দিন পর এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি হরিয়ানা পুলিশের। ডেরা প্রধানকে নিয়ে কম নাটক হচ্ছে না। প্রতিদিনই প্রকাশ্যে আসছে গা হিম করা নানা তথ্য। জেরায় তার বিলাসবহুল জীবন থেকে ধর্ষণের কাহিনি প্রকাশ্যে আসায় চক্ষু চড়কগাছ প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের।

বিশেষ সিবিআই আদালত ‘বাবা’কে জোড়া ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করার পরই পুলিশের একাংশকে কাজে লাগিয়ে পালানোর ছক কষে রাম রহিম। এর জন্য লেলিয়ে দিয়েছিল তার ভক্তদের। প্রস্তুত রাখা হয়েছিল তার নিরাপত্তারক্ষীদের। এরমধ্যেই হরিয়ানা পুলিশের কয়েকজন কর্মী রয়েছেন। তাদের সাহায্য নিয়েই বাবাজিকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছিল বলে দাবি হরিয়ানা পুলিশের।

পুলিশের দাবি, পালানোর ছক সাজা ঘোষণা হওয়ার আগেই নিখুঁতভাবে তৈরি করেছিলেন ‘বাবা’। মামলায় রায় যদি বিরুদ্ধে যায় তবেই ওই ছক কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, শেষমেশ বানচাল হয়ে যায় সেই পরিকল্পনা। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর বিচারক রাম রহিমকে রোহতকে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই মতো রাম রহিমকে প্রথমে একটি স্করপিও গাড়িতে তোলা হয়। পিছনের গাড়িতে ছিল রাম রহিমের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরা। ওই গাড়িতে ইলেকট্রনিক সিগন্যাল জ্যামিংয়ের মতো অত্যাধুনিক ব্যবস্থা ছিল। হঠাৎই ওই গাড়িটি গতি বাড়িয়ে পুলিশের গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। হরিয়ানা পুলিশের কম্যান্ডোরা ওই গাড়ি থেকে নেমে ‘অপারেশন’ চালানোর চেষ্টাও করে। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী চলে আসায় বাধ্য হয়ে চপার ডেকে জেলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় ধর্ষক বাবাজিকে। এমনটাই জানাচ্ছে হরিয়ানা প্রশাসন।

[এবার সেনাবাহিনীকে ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র!]

হরিয়ানা পুলিশের আইজি কে কে রাও জানিয়েছেন, রাম রহিমের সাত জন নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে পাঁচজন পুলিশকর্মী। ওই সাত জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন ছাড়াও একাধিক মামলা রুজু করা হয়েছে। গত শুক্রবার গণ্ডগোলের জেরে প্রাণ যায় নিরীহ ৩৮ জনের। জখম ২৫০। তাঁদের মধ্যে অনেকেই পুলিশের গুলিতে নিহত ও আহত। ওই সময়ে পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টার। নিজেকে সার্টিফিকেট দিয়েই তার দাবি, সরকার যা করেছে তা ঠিকই করেছে। এদিকে, কয়েকদিন অশান্ত থাকার পর ক্রমেই স্বাভাবিক ছন্দ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে  হরিয়ানা ও পাঞ্জাব। শিথিল হয়েছে কারফিউ। তুলে নেওয়া হয়েছে ১৪৪ ধারা। আর তখন বিলাসবহুল উজ্জ্বল ডেরার জীবন ছেড়ে এখন জেলের অন্ধকারে ‘মনমরা’ হয়েই নিঃশব্দে দিন কাটাচ্ছেন ধর্ষক বাবাজি।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে