সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুখের কথায় সম্পর্কে ছেদ টেনেছিলেন স্বামী। সন্তান নিয়ে ঘোর বিপাকে পড়েছিলেন তাঁরা। সমাজের কেউই পাশে এসে দাঁড়াননি। আজ তাই যখন তিন তালাক প্রথা রদ নিয়ে সরগরম গোটা দেশ, তখন তাঁরাও যোগ দিয়েছেন প্রতিবাদে। এমনকী সে কারণে হিন্দু মহাসভার যজ্ঞে শামিল হতেও দ্বিধা করেননি। ঠিক এমন কাজই করে দেখালেন ফৈজা ও সালমা। আলিগড়ের হিন্দু মহাসভার এক যজ্ঞে শামিল হলেন তাঁরা।
[ ‘তিন তালাকের আবার অপব্যবহার কী?’ ]
প্রায় সাত বছর আগে তালাক পান ফৈজা। তিন সন্তানকে নিয়ে এক কাপড়ে ঘর ছাড়তে হয়। তারপর থেকে শুরু লড়াই। এই প্রথার জেরেই নিতান্ত কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে আজও যেতে হচ্ছে তাঁকে। সালমাকেও যখন তালাক দেওয়া হয় তখন তাঁর দুটি সন্তান। যদিও বিচ্ছেদের পর বাবার বাড়িতেই থাকতেন সালমা। আজ এই প্রতিবাদে শামিল দু’জনেই। তাঁদের দাবি, তাঁদের বিপদের সময় যদি মুসলিম সমাজ পাশে এসে দাঁড়াত তবে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিতেন না। কিন্তু যে কোনও মূল্যে যে এই প্রথা রদ হওয়া প্রয়োজন, এমনটাই মনে করেন তাঁরা। ঠিক এই কারণেই শামিল হয়েছেন যজ্ঞে।
তিন তালাকের শিকার অপর এক মহিলাও হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, যদি এই প্রথা বন্ধ না হয় তবে তিনি হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হবেন। হিন্দু মহাসভার পক্ষে জানানো হয়েছে, অত্যাচারিত মুসলিম রমণীরা যদি স্বেচ্ছায় হিন্দু ধর্ম নিতে চায় তাহলে আপত্তির কিছু নেই।
[ “আইন করলেও মুসলিমরা শুধু শরিয়তই মানবে” ]
এদিকে তিন তালাক ইস্যুতে যে মুসলিম মহিলারা সমস্যায় পড়ছেন তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও জানিয়েছেন, তিন তালাকের বিরুদ্ধে যাঁরা কথা বলছেন না, তাঁরাও সমান দোষী। ইতিমধ্যে একের পর এক তিন তালাকের ঘটনা সামনে আসায় চাপের মুখে পিছু হটেছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডও। জানানো হয়েছে, যারা এর অপব্যবহার করবে তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করা হবে। যদিও এরও পাল্টা জবাব দিয়েছেন গীতিকার জাভেদ আখতার। তাঁর সাফ কথা, তিন তালাকের মতো বিষয়ের আবার অপব্যবহার কী? তাহলে তো কবে ধর্ষণ বা বউ পেটানোর অপব্যবহারের কথাও শুনতে হবে!
তবে এ চাপান-উতোরের মধ্যেই প্রতিবাদের নয়া দিশা দেখাচ্ছেন এই মুসলিম মহিলারাই। আগামী ১১ মে থেকে এই মামলার শুনানি শুরু সুপ্রিম কোর্টে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.