Advertisement
Advertisement

Breaking News

Suicide

করোনা আবহে পড়ুয়াদের মধ্যে বেড়েছে আত্মহত্যা, প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য

হঠাৎ করেই ২০২০ সালে আত্মহত্যার পরিমাণ এক ধাক্কায় অনেকটা ঊর্ধ্বমুখী।

Suicidal tendency on the rise in students amidst corona crisis | Sangbad Pratidin

ছবি: প্রতীকী

Published by: Sulaya Singha
  • Posted:November 12, 2021 5:22 pm
  • Updated:November 12, 2021 6:10 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা শরীরের কোন কোন অংশে প্রভাব ফেলছে, প্রায় দু’বছর কাটিয়েও তার সঠিক উত্তর বিজ্ঞানীদের কাছে অজানা। বিশ্বের নানা প্রান্তেই চলছে নিরন্তর গবেষণা। কিন্তু একটা ব‌্যাপার গত দু’বছরে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। করোনা (Corona Virus) নিশ্চিতভাবেই বিপুল প্রভাব ফেলছে প্রতিটি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য়ের উপর। একটা বড় অংশের মানুষ করোনা নিয়ে যেমন আতঙ্কে ভুগছেন তেমনই একদল মানুষ ডুবে যাচ্ছেন অবসাদের অতলে। আর অবসাদে তলিয়ে যাওয়াদের মধ্যে একটা বড় অংশ নিশ্চিতভাবেই পড়ুয়ারা। আর চমকে দেওয়া পরিসংখ‌্যান হল, করোনা অতিমারীর সময়কালে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৩৪ জন পডুয়া আত্মঘাতী হয়েছেন।

২০২০ সালে সারা দেশে সাড়ে বারো হাজারেরও বেশি পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছেন। যার সহজ হিসাব দিনে ৩৪-এরও বেশি আত্মহত‌্যার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৯ সালের আত্মহত‌্যার তুলনায় তা ২১ শতাংশ বেশি। ১৯৯৫ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত পাওয়া পরিসংখ‌্যান বলছে, গত ২৬ বছরে এক লক্ষ ৮০ হাজারের বেশি পড়ুয়া প্রাণ দিয়েছেন। যে গ্রাফ হঠাৎ করেই ২০২০ সালে এসে এক ধাক্কায় অনেকটা ঊর্ধ্বমুখী। তবে মজার ব‌্যাপার হল অতিমারীর এই বছরে সারা দেশেই প্রায় সমস্ত স্তরের পড়ুয়াকে বিনা পরীক্ষাতেই নতুন ক্লাসে প্রোমোশন দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সাবধান! ডায়াবেটিসের বিপদ আসন্ন, সুগার টেস্ট নিয়ে বিপজ্জনক তথ্য সাম্প্রতিক গবেষণায়]

তাহলে এই আত্মহত‌্যার কারণ কী? পরীক্ষায় অসফল হওয়া তো কোনওভাবেই নয়। এমনকী, বোর্ডের পরীক্ষাতেও পাসের শতাংশ প্রায় একশো শতকরা। তাহলে পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মহত‌্যার সংখ‌্যা এত বেশি কেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘরবন্দি অবস্থায়, স্বাভাবিক জীবন থেকে দূরে থেকেই অধিকাংশ কিশোরী-কিশোরী অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। একটা বড় অংশের পডুয়া যেমন পরিস্থিতির চাপে পড়াশোনা ছাড়তে বাধ‌্য হয়েছে অন‌্য একটি অংশ স্কুল-কলেজের জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েও অবসাদে ডুবে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজের জীবনের যে মজা ও আনন্দ রয়েছে তার থেকে বঞ্চিত থাকছে পডুয়ারা। অথচ থেকে যাচ্ছে পড়াশোনার চাপ। সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনার কারণে মৃত্যুভয়।

Advertisement
Suicide
ছবি:‌ প্রতীকী

পরিস্থিতির আচমকা বদল, পরিবারের উপর সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, সব কিছুই চাপ তৈরি করছে কোমলমতি কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের উপর। যার দুর্বহ ভার বইতে না পেরেই আত্মহত‌্যার পথ বেছে নিচ্ছেন বহুজন। বেঙ্গালুরু নিমহ‌্যানস-এর মনস্তত্ত্ব বিভাগের প্রধান ড. জন বিজয়সাগর বলেন, “অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনও আত্মহত‌্যার ঘটনা হঠাৎ করে ঘটে না। আগে এক বা একাধিকবার চেষ্টা করার পরই আত্মহত‌্যার পথে চলতে পারে কেউ। অভাবনীয় পরিস্থিতির চাপও একই সঙ্গে উদ্বেগ ও হতাশা বৃদ্ধির কারণ। বাচ্চারা সকলে বাড়িতেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ‌্য হচ্ছে। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখা না হওয়ায় তাদের একটু দম নেওয়ার ফুরসত মিলছে না।” এবং এই সমস্ত জটিলতারই ফল হচ্ছে আত্মহত‌্যা।

[আরও পড়ুন: শরীরে ভাঁজে-খাঁজে কালো দাগ? অবহেলা করবেন না, হতে পারে ক্যানসারও]

আর এক মনোবিদ ড. এমএস ধর্মেন্দ্র জানাচ্ছেন, “লকডাউনে ছাত্রছাত্রীদের স্বাভাবিক জীবনে বিপুল রদবদল ঘটছে। তার সঙ্গে মানাতে না পারার কারণেই আত্মহত‌্যা করছে অনেকে। অনলাইন শিক্ষার ভারও সকলে বহন করতে পারছেন না। ফলে বন্ধুদের থেকে পিছিয়ে পড়ার আতঙ্কেও আত্মহত‌্যা করছেন অনেকে।” শিক্ষার মানও এই পরিস্থিতিতে পড়ে যাচ্ছে অনেকটা। সব মিলিয়ে আত্মহত‌্যার পরিসংখ‌্যান এমন আতঙ্কজনক স্থানে পৌঁছেছে দেশজুড়ে। আরও দুশ্চিন্তার বিষয় এটাই, এর থেকে মুক্তির কোনও পথও দেখাতে পারছেন না কেউই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ