ফাইল চিত্র
বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: এতদিন ‘ঢাকঢাক গুড়গুড়’ চলছিল। এবার বাংলা ভাগে উস্কানি বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা রাষ্ট্রমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের। বাংলা ভাগের দাবি জানালেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গকে আলাদা করে উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব দেন। প্রধানমন্ত্রীকে সুকান্তর প্রস্তাব প্রকাশ্যে আসতেই গর্জে ওঠে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, “আবার সেই বাংলাভাগের বিভাজনের চেষ্টা! বিভাজন, ভেদাভেদ এই সবে উস্কানি ও সুরসুড়ি দিচ্ছেন। বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব দিয়ে উন্নয়নের টোপ দিয়ে ফের বাংলা থেকে উত্তরবঙ্গকে বিভাজনের চেষ্টা হচ্ছে। আসলে ওরা বংলার উন্নয়নের বিরোধী।” বাংলাকে বঞ্চনার প্রসঙ্গ টেনে কুণাল ঘোষ জানান, “বাংলাকে টাকা দেওয়া যাবে না। ১০০ দিনের টাকা, আবাসের টাকা দেওয়া যাবে না। এগুলো সুকান্তরাই গর্ব করে দিল্লিতে বলে এসেছিলেন।”
এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন সুকান্ত মজুমদার। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বাংলাকে ভাগ করার লিখিত প্রস্তাব দেন। উত্তরবঙ্গে মানুষের সঙ্গে উত্তর পূর্ব ভারতের কি কি মিল রয়েছে তাও প্রস্তাবে উল্লেখ করেন। নিজেই এই প্রস্তাবের কথা জানিয়ে বলেন, “উন্নয়নের স্বার্থে উত্তরবঙ্গের আট জেলাকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যুক্ত করার দাবি করেছি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে।” তাঁর দাবি, বাংলার উন্নয়নের স্বার্থেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই দাবি রেখেছেন তিনি। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে বঙ্গ বিজেপির সব সাংসদকে প্রধানমন্ত্রীর সামনে হাজির করতে পারেন বলেও দাবি করেন। তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময়ও চেয়েছেন। এ ব্যাপারে কড়া প্রতিক্রিয়া ধেয়ে এসেছে বাংলার শাসক শিবির থেকে। সুকান্তের এমন পদক্ষেপের পিছনে ফের বাংলাকে ভাগ করার চক্রান্ত দেখছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “আসলে ভোটে হারার দায়টা শুভেন্দুর ঘাড়ে চাপানোর জন্য মোদীর সঙ্গে দেখা করেছেন, আর দলের ঝগড়া থেকে নজর ঘোরানোর জন্য বাজারে এই ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য ছেড়ে দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার।”
প্রসঙ্গত, সুকান্তর বালুরঘাট লোকসভার সাংসদ। যা উত্তরবঙ্গের মধ্যেই পড়ে। একই সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রকের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রকেরও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। উত্তরবঙ্গে লোকসভার মোট আসন ৮টি। এবার রাজ্যে বিজেপি যে ১২টি আসন পেয়েছে তারমধ্যে ৬টি এসেছে উত্তরবঙ্গ থেকে। রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির সিংহভাগ বিধায়ক উত্তরবঙ্গের। ফলে রাজনৈতিকভাবে উত্তরবঙ্গে এগিয়ে গেরুয়া শিবির। ফলে উন্নয়ন নয়, রাজনৈতিক ফায়দার কথা মাথায় রেখেই সুকান্ত মজুমদার বাংলা ভাগের প্রস্তাব দিয়েছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.