সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের দেশভক্তি প্রমাণের নামে বিজেপির দাদাগিরি। ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগানে গলা মেলাতে হবে। নাহলে আপনি দেশদ্রোহী, পাকিস্তানের সমর্থক। এভাবেই সাংবাদিকদের একাংশকে ‘দাগিয়ে’ দিলেন বিহারের খনিমন্ত্রী বিনোদকুমার সিং। সাংবাদিকদের রীতিমতো জ্ঞান দিয়ে বিনোদ বলতে থাকেন সবাই আগে ভারত মাতার সন্তান। পেশা অনেক পরের ব্যাপার। তাঁর ধমকে অনেকেই গলা না মেলানোয় আরও বিগড়ে যান মন্ত্রী।
মহাজোট ছেড়ে আসার পর এখন নীতীশ কুমারের নতুন বন্ধু বিজেপি। নীতীশের নয়া মন্ত্রিসভার বয়স দু’সপ্তাহও হয়নি। তার মধ্যেই আস্তিন থেকে তাস বের করে ফেলল বিজেপি। এক বিজেপি বিধায়ক বুঝিয়ে দিলেন ঢেঁকি স্বর্গে গেলে কেন ধান ভাঙে। অর্থাৎ, হিন্দুত্ব এবং অতি ভারতপ্রেম যে তার তাদের নীতি তা স্পষ্ট করে দিলেন বিনোদ কুমার সিং। খনি মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা বিনোদ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। আচমকাই তিনি বলে বসেন সমস্ত সাংবাদিককে ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দিতে হবে। তাঁর এই আজব আবদারে স্বাভাবিকভাবেই অবাক হয়ে যান সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। খনিমন্ত্রী এরপরই চমকে দিয়ে বলেন, ‘কী ব্যাপার সবার মুখ থেকে কেন কথা শোনা যাচ্ছে না।’ যার চুপচাপ ছিলেন তাদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘কেউ কেউ স্লোগানে গলা মেলাচ্ছেন না। হাত তোলেননি। তাহলে আপনারা কি পাকিস্তানের সমর্থক।’ এমন জ্ঞান দিয়ে বিনোদ থামেননি। নিজের বক্তব্যর স্বপক্ষে খনিমন্ত্রী বলেন, সবার আগে আপনারা ভারতমাতার সন্তান। তারপর আপনাদের পরিচয় সাংবাদিক।
বিজেপি মন্ত্রীর এই বক্তব্যে বিহারে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিনোদ সিংকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছে বিরোধীরা। আশ্চর্যভাবে বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। বিহারের বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের উগ্র দেশপ্রেমের নজির নেহাত কম নয়। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিহারের বিজেপি সাংসদ অশ্বনী চৌবে বলেছিলেন নীতীশ ও লালুপ্রসাদকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত। গত লোকসভা ভোটের সময় আর এক বিজেপি সাংসদ গিরিরাজ সিং বলেছিলেন নীতীশ ও লালু বিহারকে পাকিস্তান বানাতে চাইছেন। এক ধাপ এগিয়ে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর বক্তব্য ছিল, বিজেপি হারলে পাকিস্তানে বাজি পুড়বে। বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের পরপর বিতর্কিত মন্তব্যের পরও গেরুয়া শিবির পিছু হটেনি। তবে বিনয়ের মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের জল অনেকটা ঘুলিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.